বিশ্বকাপের ম্যাচে রাতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ নামেভারে বেশ শক্তিশালী। এবারের আসরের অন্যতম হট ফেভারিট হিসেবেও দেখা হচ্ছে প্রোটিয়াদের। তাছাড়া বাংলাদেশের বিপক্ষে পরিসংখ্যানও জানান দিচ্ছে সে কথাই। তবে দিনশেষে ক্রিকেট কেবলই পরিসংখ্যানের খেলা নয়। এর বাইরে লড়াইয়ের গল্প থাকে। জড়িয়ে থাকে আবেগ। যেই আবেগকে কাজে লাগিয়ে বড় বড় দলকেও অনায়াসে হারিয়ে দিতে দেখা যায় ছোট দলগুলোকেও।
যেমনটা এই আসরেও করে দেখিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বকাপে তারা হারিয়ে দিয়েছে পাকিস্তানের মতো দলকে। তাছাড়া এই দক্ষিণ আফ্রিকাকে বিশ্বকাপের মঞ্চে দু’বার হারানোর সুখস্মৃতি আছে বাংলাদেশেরও। একবার ২০০৭ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের গায়ানায়। আর একবার ২০১৯ বিশ্বকাপে ওভালে। যদিও সেই ফরম্যাটটা ওয়ানডে। তবে তাতে কি, চাইলে তো যেকোনো কিছু থেকেই অনুপ্রেরণা নেওয়া যায়। আর সেটা নিতে পারলেই কেবল জিততে পারবে বাংলাদেশ।
কেননা, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে যে টি-টোয়েন্টিতে কোনো সুখস্মৃতি নেই বাংলাদেশের। ২০০৭ সালে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি খেলার পর এই সময়ে তাদের বিপক্ষে মোট ৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলছে বাংলাদেশ। যেখানে বাংলাদেশ জয় পায়নি কোনো ম্যাচেই। ২০০৮ সালে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে সবচেয়ে কম ১২ রানের ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ। এরপর সেই ব্যবধানটা কেবলই বেড়েছে। সবশেষ ২০২২ বিশ্বকাপেও প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ১০৪ রানের বিশাল ব্যবধানে ম্যাচ হারতে হয়েছে বাংলাদেশকে। তাই এ ম্যাচে জয় পাওয়া বেশ কঠিনই বলা চলে শান্তর দলের জন্য।
তাছাড়া নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামে খেলার অভিজ্ঞতাতেও বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে আছে দক্ষিণ আফ্রিকা। গ্রুপপর্বের প্রথম দুটি ম্যাচও তারা খেলেছে এই মাঠেই। যেখানে দুটিতেই জয় পেয়েছে তারা। যদিও সেই জয় পেতে বেশ কাঠখড় পুড়াতে হয়েছে প্রোটিয়াদেরকে। দুই ম্যাটেই ফুটে উঠেছে ব্যাটিংয়ের দুর্বলতা। যাকে প্রোটিয়াদের দুর্বলতা হিসেবে নিয়ে এই জায়গাতেই নিশ্চয় আঘাত হানতে চাইবে বাংলাদেশ। তবে সেক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে প্রোটিয়া বোলাদের ওপরও।
অন্যদিকে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত এই মাঠে বিশ্বকাপের ম্যাচ খেলেনি। তবে বিশ্বকাপ শুরুর আগে ভারতের বিপক্ষে এ মাঠে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়েছিল বাংলাদেশের। যদিও সেই ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে পাত্তা পায়নি বাংলাদেশ। তাই ম্যাচটি বেশ কঠিনই হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ দলের জন্য। তবে বাংলাদেশ দল অবশ্য আশা রাখছে সবশেষ ম্যাচে জয়ের কারণেই। কেননা, শ্রীলংকার বিপক্ষে ম্যাচ জিতে আত্মবিশ্বাস বেড়েছে দলের ক্রিকেটারদের। তাছাড়া এই মাঠের উইকেটের সঙ্গে অনেকটাই মিল আছে টাইগারদের হোম অব ক্রিকেট খ্যাত মিরপুরের উইকেটের। কাজেই মিরপুরে নিয়মিত লো স্কোরিং ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা কিছুটা হলেও সাহস যোগাবে বাংলাদেশ দলকে। আর তাছাড়া বিশ্বমঞ্চে প্রোটিয়াদের হারানোর সেই দিনগুলোও তো খুব বেশি পুরনো নয়।
সবশেষ ২০১৯ বিশ্বকাপে এই প্রোটিয়াদের বিপক্ষেই নিজেদের প্রথম ম্যাচে চমক দেখিয়ে ছিল বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করে স্কোরবোর্ডে ৬ উইকেটে ৩৩০ রানের বড় টার্গেট ছুড়ে দিয়ে প্রোটিয়াদের আটকে দিয়েছিল ৩০৯ রানে। ২১ রানের জয়ে বিশ্বকাপ শুরু করেছিল বাংলাদেশ। সেই সুখস্মৃতি না হয় আরও একবার ফিরে আসুক নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামে। সেই প্রত্যাশাতেই এখন বাংলাদেশি ক্রিকেট সমর্থকরা।