সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে রাজপথ ছাড়ছেন না আন্দোলনকারীরা। আজ বুধবার সকাল থেকেই সারাদেশে সর্বাত্মক ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি নিয়ে রাস্তায় নামছেন শিক্ষার্থীরা। সকাল-সন্ধ্যা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির ফলে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় শহরগুলো তীব্র যানজটের কবলে পড়তে পারে।
গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, এখন আর ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল মূলকথা নয়। বরং ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণিসহ সকল গ্রেডে ‘অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক’ কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর গোষ্ঠী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের কোটাকে ন্যায্যতার ভিত্তিতে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি। এতদিন আদালত থেকে সিদ্ধান্ত প্রত্যাশা করলেও নতুন দাবিতে আদালতের সম্পৃকতা নেই। বরং সরকারের নির্বাহী বিভাগের প্রতি এই দাবি জানানো হচ্ছে।
আরেক সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, আদালত যদি বুধবার পরিপত্র বহালও করে, তবুও আমাদের দাবি আদায় হচ্ছে না। আমরা সকল গ্রেডের চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবি জানিয়েছি। ফলে হাইকোর্টের শুনানি থেকে আমাদের দাবি পূরণ সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, এটা যেহেতু সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত। তাই আমরা নির্বাহী বিভাগ থেকে একটি সিদ্ধান্ত প্রত্যাশা করি। এটা হতে পারে কমিশন গঠন করার পরিপত্র। যদি লিখিত কোনো আশ্বাস দেওয়া হয়, তাহলে আমরা পড়ার টেবিলে ফিরে যাব।
এদিকে শিক্ষার্থীরা সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ কোটা রেখে সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা মনে করছি ৫ শতাংশ কোটা ন্যূনতম এবং যৌক্তিক পর্যায়। সরকার যে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখে সেখানে মেধাকেই গুরুত্ব দেওয়া উচিত। অর্থাৎ সর্বোচ্চ (সরকারি চাকরিতে) ৫ শতাংশ কোটা রাখা যেতে পারে।
রাজধানী ঢাকায় যেসব এলাকায় ব্লকেড হতে পারে
১। শাহবাগ
২। কারওয়ানবাজার
৩। ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়
৪। ফার্মগেট
৪। চানখারপুল মোড়
৫। চানখারপুল ফ্লাইওভার এ উঠার মোড়
৬। বঙ্গবাজার
৭। শিক্ষা চত্বর
৮। মৎস্য ভবন
৯। জিপিও
১০। গুলিস্তান
১১। সায়েন্সল্যাব
১২। নীলক্ষেত
১৩। রামপুরা ব্রিজ
১৪। ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক
১৫। মহাখালী
১৬। বাংলামোটর
১৭। পল্টন মোড়
১৮। সচিবালয়
ঢাকার বাইরে
১। রাজশাহী (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রুয়েট, রাজশাহী কলেজ)
২। সিলেট-সুনামগঞ্জ রোড (শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়)
৩। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক (কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়)
৪। বটতলা চত্বর (ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়)
৫। ময়মনসিংহ (বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়)
৬। রংপুর মডার্ণ মোড় (বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়)
৭। দেওয়ান হাট (চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও অধিভুক্ত কলেজসমূহ)
৮। খুলনা, নতুন রাস্তা, দৌলতপুর (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা)
৯। গাজীপুর (আওয়ালে বদরে আলম সরকারি কলেজ, গাজীপুর)
১০। নোয়াখালী প্রেসক্লাব (নোয়াখালী জেলার শিক্ষার্থীবৃন্দ)
১১। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ এর সামনে
১২। ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক (পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়)
ঢাকার যে এলাকায় যারা কর্মসূচি পালন করবে
শাহাবাগ: বঙ্গমাতা হল, মৈত্রী হল, রোকেয় হল, শামসুন্নাহার হল, জগন্নাথ হল, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ও বঙ্গবন্ধু হল
নীলক্ষেত-সায়েন্সল্যাব: ঢাকা কলেজ ও ইডেন মহিলা কলেজ
মৎসভবন: বিজয় একাত্তর হল, কবি জসিমউদ্দিন হল
পল্টন: ফজলুল হক মুসলিম হল
জিপিও: ড. মুহম্মদ শহিদুল্লাহ হল, কবি সুফিয়া কামাল হল
কারওয়ান বাজার: মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল, সূর্যসেন হল
ফার্মগেট: সার্জেন্ট জহুরুল হক হল, এফ আর হল
মহাখালী: সরকারি তিতুমীর কলেজ
চানখারপুল: অমর একুশে হল, বোরহান উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ ও বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ
রামপুরা ব্রিজ: সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
মিরপুর ১২: বিইউপি, মেরিটাইম ও মিরপুর সরকারি কলেজ