
আরিফুল ইসলাম সুমন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে।।
বিভিন্ন দয়ালু ব্যক্তি ও সেচ্ছাসেবী সংগঠন থেকে আর্থিক সহায়তা পেয়েছে ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার পরিচালনার কাজে নিয়োজিত আট বছর বয়সী সেই সুখী আক্তার।রাজধানী ঢাকার জালাল আহমেদ নামে একব্যক্তি পাঁচ হাজার টাকা, হাফেজ মাওলানা হাফেজুল ইসলাম নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষক দুই হাজার টাকা শিশু সুখীকে আর্থিক সহায়তা পাঠিয়েছেন। এছাড়াও সুখীর পরিবারকে নিত্যপ্রয়োজনীয় নানা পণ্য সহায়তা দিয়েছে স্থানীয় অনলাইন ভিত্তিক সেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘সেবানন্দ’।
শুক্রবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে সুখী ও তার পরিবারের সদস্যদের হাতে তাদের বাড়িতে গিয়ে এ অনুদানের অর্থ তুলে দেন অনলাইন নিউজ পোর্টাল “সরাইল নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম” এর সম্পাদক এম এ করিম।এদিকে এর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার কালীকচ্ছ ইউনিয়নের নন্দীপাড়া গ্রামের শিশু সুখী ও তার ছোট ভাইকে নিয়ে গত ২৩ জানুয়ারি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘অজানা বাংলাদেশ’ এ “আলু ও পাঙ্গাস মাছ কিনতে প্রতিদিন ভিক্ষা করে সুখী ! ” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
এতে অসহায় শিশু সুখী ও তার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে অনেকে আর্থিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন।
উল্লেখ্য, যেই বয়সে হাতে বই, খাতা ও কলম থাকার কথা, সেই বয়সে আটবছর বয়সী সুখীর হাতে সংসারের নিত্যচাহিদা মেটানোর বোঝা বইবার থলি (বাজারের ব্যাগ)। সুখীর পিতা মোঃ জসিম মিয়া আরেকটি বিয়ে করে তাদের ফেলে অন্যত্র চলে গেছেন। এখন সংসারের ঘানি টানার দায়িত্ব পড়েছে সুখী ও তার মাতা হোসেনা বেগমের কাঁধে। ভূমিহীন পরিবার, অভাবের সংসার তাই-তো অসহায় মা ও মেয়ে ভাগাভাগি করে এ সংসার চালানোর দায়িত্ব নিয়েছে।
সুখীর মাতা স্বামী পরিত্যক্তা হোসেনা বেগম দৈনিক দুইশত টাকা চুক্তিতে দিনমজুরী দিয়ে সংসারের চাল, ডাল ও পরিবারের অন্যান্য চাহিদা মেটান। আর সুখীর দায়িত্ব হলো পরিবারের সদস্যদের দু’মুঠো ভাতের তরকারি’র জোগান দেয়া। এই বয়সে কায়িকশ্রমে টাকা রোজগার সম্ভব নয়, তাই সুখী প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সদরের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দু’হাত বিছিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি পেশা বেছে নিয়েছে। তরকারি’র জন্য “আলু ও পাঙ্গাস মাছ” কেনার টাকা জোগাড় না হওয়া পর্যন্ত সুখী বাজারে বাজারে বিভিন্ন মানুষের কাছে দুই হাত বিছিয়ে সাহায্য চাইতেই থাকে।