মাহমুদুল হাসান:টাঙ্গাইল প্রতিনিধি;
টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে ভুয়া প্রবেশপত্র বানিয়ে ঘাটাইল এস ই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার অপরাধে জালিয়াত চক্রর দুই সদস্যকে আটক করেছে ঘাটাইল থানা পুলিশ। আজ শনিবার (২ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হওয়া এসএসসি পরিক্ষার প্রথম দিনে বাংলা ১ম পত্র পরীক্ষা কেন্দ্রে এই ঘটনা ঘটে।এক স্টুডিও থেকে টাকার বিনিময়ে তারা ভুয়া প্রবেশপএ বানায় এবং ওই প্রবেশপএ নিয়ে পরিক্ষা দিতে যায়।
জানা যায়, ঘাটাইল এস ই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিক্ষার্থী সেজে ভুয়া প্রবেশপত্র নিয়ে আজ শনিবার (২ ফেব্রুয়ারি) এসএসসি পরিক্ষার প্রথম দিনে বাংলা ১ম পত্র পরীক্ষা দিতে আসে হালিমা (১৬)। কেন্দ্রের সব কক্ষ ঘুরে কোথাও নিজের আসন খুঁজে না পেয়ে বিষয়টি জানায় দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের। তার জন্য নির্দিষ্ট আসন নেই, এমন ঘটনায় বিচলিত কেন্দ্র সচিবসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। প্রবেশপত্র ও রেজিঃ কার্ড সবই ঠিক আছে তাহলে মনে হয় আমাদের কোথাও ভুল আছে এমনটা ভেবে কেন্দ্রের সহকারী সচিব হামিদুর রহমান তাকে ৩০৪ নং কক্ষে একটি অতিরিক্ত বেঞ্চে খাতা ও প্রশ্ন দিয়ে বসার ব্যবস্থা করেন।
হামিদুর রহমান জানান, এমন ভুল হওয়ার কথা নয়, তাই ঐ বিদ্যালয়ের সকল পরিক্ষার্থীর নামের তালিকা বের করে দেখা যায় হালিমা নামের কোন পরিক্ষার্থীর নাম তালিকায় নেই। তার প্রবেশপত্রে থাকা ৩৫৭৬২২ রোল নম্বরটি অন্য একটি অনিয়মিত পরিক্ষার্থীর। বিষয়টি কেন্দ্র সচিবকে অবগত করলে সাথে সাথে তিনি তার পরিক্ষা বন্ধ করে দিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলরুবা আহম্মেদ, সহকারী কমিশনার ভূমি নূরুন্নাহার বেগম, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাকসুদুল আলম ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম শামসুল হক কেন্দ্রে এসে হালিমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বেড়িয়ে আসে আসল তথ্য।
হালিমা জানান, স্কুলে নির্বাচনী পরিক্ষায় পাঁচ বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়ায় প্রধান শিক্ষক আমাকে ফরম পূরণ করতে দেয়নি। তাই ঘাটাইলের পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত মুন কালার ষ্টুডিওতে গিয়ে বিষয়টি জানালে মালিক বিপ্লব (৪০) প্রতি শব্দ ৮০ টাকা করে ধরে ৭’শ টাকার বিনিময়ে নকল প্রবেশপত্র ও রেজিঃ কার্ড বানিয়ে দেয়ার কথা বলে। দাম-দরের এক পর্যায় সে ৫শ টাকার বিনিময়ে কাজটি করে দিতে বিপ্লব তার কর্মচারী রতনকে (৩২) বলেন।
হালিমার দেয়া তথ্যানুসারে বিপ্লব ও রতনকে মুন কালার ষ্টুডিও থেকে আটক করে পুলিশ। তাদেরকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে।এ বিষয়ে ঘাটাইল এস ই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বুলবুলি বেগম বলেন, নির্বাচনী পরিক্ষায় পাঁচ বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়ায় তাকে ফরম পূরণ করতে দেয়া হয়নি। কিভাবে সে এ কাজ করলো তা আমি জানি না।কেন্দ্র সচিব মো. আজহারুল বলেন, বিষয়টি অবগত হওয়ার পর পরই তার পরিক্ষা বন্ধ করে দেই এবং উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করি।সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নূরুন্নাহার বেগম বলেন, পাবলিক পরিক্ষার আইন অনুসারে তাদের সর্বনিম্ন সাজা তিন বছরের কারাদন্ড। তাই বিধি মোতাবেক মামলা করার জন্য থানাকে পুলিশকে বলা হয়েছে