
আসন্ন ২০১৯-২০ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দের দাবিতে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণ শাখা আজ বিকালে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন এর মাধ্যমে অর্থমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। ছাত্রসেনা চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণ সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আতিকুর রহমানের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ জমির উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ আমির হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ হুমায়ন কবির, দাওয়া বিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মদ জহির উদ্দিন, ছাত্র
কল্যাণ সম্পাদক হাফেজ মুহাম্মদ আফাজ উদ্দিন সহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, বাজেট আমাদের জাতীয় জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সারা বছর আমাদের জাতীয় জীবনের আয়-ব্যয় কেমন হবে তার প্রতিফলন হয় বাজেটে। আমাদের দেশের নাগরিকরা আগের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন তাই রাজনীতির পাশাপাশি অর্থনীতির বিষয় গুলো নিয়েও তাদের আগ্রহ বাড়ছে। বাজেট বিষয়ে তাদের আগ্রহ ও প্রচুর। বাজেট উপস্থাপনের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়- ব্রিটিশ শাসনের শুরুর দিকে এই উপমহাদেশে সর্বপ্রথম বাজেট উপস্থাপনার সূচনা
করেছিলেন জেমস উইলসন। দেশ ভাগ হওয়ার পর ১৯৪৮ সালে বাজেট উপস্থাপন করেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী মালিক মুহাম্মদ। ১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে সংসদে সর্ব প্রথম বাজেট পেশ করেন অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ। স্বাধীনতার পর থেকে বর্তমান পর্যন্ত (১৯৭২-২০১৮) সর্বমোট ৪৭ বার বাজেট উপস্থাপিত হয়েছে। প্রথম বাজেট ছিল ৭৮৬ কোটি টাকার এবং শেষেরটি প্রায় ৪ লক্ষ ৬৪ হাজার কোটি টাকার। তবে প্রতিবছরই মানুষের দৃষ্টি থাকে শিক্ষাখাতে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর। কারণ এর ওপরই অনেকাংশে নির্ভর করে আগামীতে দেশের শিক্ষা খাতের
অবকাঠামো উন্নয়ন-অনুন্নয়নের রূপরেখা। আমাদের পাশেই দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো গত ২/৩ দশকে তাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় এনেছে আমূল পরিবর্তন, যা পরবর্তীতে তাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করেছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের শিক্ষাখাতে জাতীয় বাজেটের বরাদ্দের অনুপাতে বাংলাদেশের শিক্ষাখাতে জাতীয় বাজেটের বরাদ্দের আনুপাতিক বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, আফ্রিকার অনগ্রসর অধিকাংশ দেশ যেমন- কেনিয়া, তানজানিয়া শিক্ষাখাতে বরাদ্দ দেয় জাতীয় বাজটের ২০ ভাগের বেশি। দক্ষিণ এশিয়ার অধিকাংশ দেশ যেমন- ভারত, পাকিস্তান, নেপাল,
ভুটান তাদের কেন্দ্রীয় এবং প্রাদেশিক বরাদ্দসহ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ দেয় ২০ ভাগেরও বেশি। আশ্চর্যজনক হলেও সত্য বাংলাদেশ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ দেয় জাতীয় বাজেটের মাত্র ১৪ ভাগ। বর্তমান সরকার ২০১৯-২০ অর্থ বছরের ৫ লক্ষ ২৫ হাজার কোটি টাকার দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আকারের বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছে। এই বাজেটের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যয়খাত হলো শিক্ষাখাত। কিন্তু পত্রিকায় প্রকাশিত বিবরণে দেখা যায় এবারে শিক্ষা খাতের চেয়ে সরকার জনপ্রশাসন, প্রতিরক্ষা ও যোগাযোগ খাতকে বেশী প্রাধান্য দিচ্ছে। গতবারও বরাদ্দ পাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে
গুরুত্বপূর্ণ এই খাতই ছিল সবচেয়ে অবহেলিত। এদেশের সচেতন ছাত্রজনতার প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন হিসেবে ইসলামী ছাত্রসেনা শুধুমাত্র শিক্ষাখাতে মোট বাজেটের ২৫ শতাংশ এবং জাতীয় আয়ের ৮ ভাগ বরাদ্দের দাবি জানাচ্ছে। পাশাপাশি তা বাস্তবায়নে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা, মাদরাসা শিক্ষা, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও কারিগরি শিক্ষা, বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যৌক্তিক দাবি পেশ করছে।