বেনাপোল প্রতিনিধি
শার্শা উপজেলা শিক্ষা অফিসের দূর্নীতি কিছুতেই থামছে না। বরং দূর্নীতির মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের শেষ সময়ে এসে উপজেলার ১ শত ২৬টি বিদ্যালয়ের অনুকুলে বিভিন্ন প্রকল্পের বরাদ্দের বিপরীতে ৪ লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের মিশনে নেমেছে শিক্ষক সমিতি ও শিক্ষা কর্মকর্তা। বিভিন্ন সময় দূর্নীতির খবর বিভিন্ন পত্র পত্রিকা প্রচারিত হলেও কোনো প্রতিকার নেই। তথ্য বহুল খবর প্রকাশের পর উপজেলা শিক্ষা অফিসের দূর্নীতি গ্রস্থ কর্মকর্তারা নিজেদের সংশোধন না করে শিক্ষক সমিতির সাথে হাত মিলিয়ে নিজেদের আরও শক্তিশালী ভাবতে শুরু
করেছে। শার্শা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ আব্দুর রব ও তার ৪ জন সহকারি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মিলিয়ে এবার ঘুষ বানিজ্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। খবর নিয়ে জানা যায়, গত ১৮ জুন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের মাসিক সমন্বয় সভা উপজেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। ঐ সভায় পেশাগত বিভিন্ন বিষয় আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর শিক্ষকদের নিয়ে যাওয়া হয় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি ভবনে। কারণ সমিতি ভবনে প্রধান শিক্ষকদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাজের উপর সুনির্দিষ্ট আর্থিক চাঁদা ধার্য করে দেওয়া হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা অফিস
ও শিক্ষক সমিতি তাদের এই মিশন থেকে আয় করবে প্রায় ৪ লাখ টাকা। প্রধান শিক্ষকদের মাসিক সমন্বয় সভায় শিক্ষকদের খাতায় লিখে রাখা হিসাব থেকে যে তথ্যটি পাওয়া গেছে তা হুবহু এখানে তুলে ধরা হয়েছে। স্লিপ পরিকল্পনা হতে বিদ্যালয় প্রতি ১ হাজার টাকা, শার্শা উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১ শত ২৬টি সেই ১ শত ২৬টি বিদ্যালয় হতে শিক্ষা অফিস আয় করবে ১ লাখ ২৬ হাজার টাকা। জুলাই মাসে সরকারি কর্মচারিদের বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট যোগ হবে। সেখানে শার্শার ৮ শত জন শিক্ষকের কাছ থেকে জন প্রতি ৩০ টাকা হারে আয় হবে ২৪
হাজার টাকা। প্রতি বছরের জুন মাসের শেষে উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিস প্রত্যেক শিক্ষকের একাউন্ট স্লিপ প্রদান করেন। এখানে জন প্রতি চাঁদা ২০ টাকা, মোট আদায় ১৬ হাজার টাকা। উপজেলার ১ শত ২৬টি বিদালয়ের ২০ হাজার টাকার সরকারি বরাদ্দের বিপরীতে শিক্ষা অফিসে জমা দিতে হবে ৩ শত টাকা। এখানে মোট আদায় হবে ৩৭ হাজার ৮০০ টাকা। একই ভাবে বিদ্যালয়ের রুটিন মেইন্টেন্স বাবদ বিদ্যালয় প্রতি চাঁদা ৫ শত টাকা। এই খাত থেকে আসবে ৬৩ হাজার টাকা। ওয়াশ বন্টন থেকে আয় ২৫ হাজার টাকা। বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের শান্তি বিনোদন বাবদ ৫০ হাজার টাকা। শার্শার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ক্ষুদ্র মেরামত বাবদ সরকারি বরাদ্দের ১ লাখ ৫০ হাজার ও কোনো কোনো বিদ্যালয়ের ২ লাখ টাকা বরাদ্দের বিপরীতে শিক্ষা অফিসকে দিতে
হবে বিদ্যালয়ে প্রতি ১ হাজার টাকা। এই খাত হতে শিক্ষা অফিসের আয় ৫০ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে শার্শা উপজেলা শিক্ষা অফিস এই অর্থ বছরের শেষ সময়ে এসে ৩ লাখ ৯১ হাজার ৮ শত টাকা আয় করেবে। শার্শা উপজেলা কর্মরত শিক্ষকদের কাছে এই বিষয় গুলো আর গোপনীয় কোনো বিষয় নয়। আর শিক্ষা অফিসে তো ঘুষ চলছে ওপেন সিক্রেট। এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ আব্দুর রবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন বিদ্যালয় উন্নয়নে কোনো অনিয়ম ও দূর্নীতি করা হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী কাজ করা হয়েছে।