
ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:
ভাঙ্গছে সুরমা নদীর পাড়.‘গাঙ্গের ভাঙ্গন কেউ আর থামাইতে পারে না, খালি ভাঙ্গে আর ভাঙ্গে। ভাঙ্গনে ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্টান,মসজিদ, দোকানপাট-জায়গা-জমি হারিয়ে এখন আর সরে যাওয়ার জায়গাও নেই। সুরমা নদীর শীত মৌসুমে পানি কমানো পর-পরই নদীর পাড়ের ভাঙ্গন দেখা দেয়। গাঙ্গ ভাঙ্গে আর ভাঙ্গে.এভাবেই নদী ভাঙনের কথা বলছেন কালারুকা ইউনিয়নের নুরুল্লাপুর গ্রামের কালা মিয়া ও সিকন্দরপুর গ্রামের মানিক মিয়া। ছাতক উপজেলার কালারুকা ইউনিয়নের নুরুল্লাপুর গ্রামের একজন স্বচ্ছল কৃষক ছিলেন তিনি।
কিন্তু নদী ভাঙনের কবলে পড়ে এখন সর্বশান্ত। সবশেষ তার বসতভিটাও নদী গর্ভে বিলীনের অপেক্ষায়। সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে সুরমা নদী থেকে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নদীর তলদেশ থেকে বালু উত্তোলনের ঘটনায় এসব এলাকায় নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে বলে এলাকাবাসি অভিযোগ করেছে।অবৈধ ড্রেজার মেশিন বন্ধ না করলেই সুরমা নদীর ভয়াবহ ভাঙ্গনের কবলে পড়বে।নদীর দু’পাড়ের তীব্র সুরমা নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। সুরমা নদীর ভয়াবহ ভাঙ্গন এখন মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। রাস্তা-ঘাট, ফসলী জমি ও শিক্ষা প্রতিষ্টানসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সুরমা নদীর ভাঙ্গনের কবলে পড়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে হাজারো পরিবার।
জানাযায়,পৌরসভারবৌলা,তাতিকোনা,চরেবন্দ,বারোকপন,কালারুকাইউনিয়নের,মুক্তিরগাঁও,গৌরিপুর,দীঘলবন,সিকন্দর পুর,মালিপুর.রামপুর,উজির পুর,নুরুল্লাহ পুর সহ সুরমা নদীর তীরবর্তী বসতবাড়ি, রাস্তা-ঘাট, স্কুল, মাদরাসাসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়েছে। বিশেষ করে মুক্তিরগাঁও-ছাতক সড়ক দিয়ে মুক্তিরগাঁও আটগ্রামসহ কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার পারকুল, টুকেরগাঁও, শিবপুর, পুটামারাসহ বিভিন্ন এলাকা এখন নদীর ভাঙ্গন দেখা দেয়।এলাকাবাসির অভিযোগ প্রশাসনকে ম্যানেজ করে পৌরশহরের তাতিকোনা গ্রামের তারেক নামে একটা অবৈধ ড্রেজার সিন্ডিকেট নদী থেকে বালু মাটি উত্তোলন বিত্রিু করে আসছে দীর্ঘদিন ধরেই। এ কারনে নদী তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।
এ চত্রেুর বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসন একাধিকবার মোবাইল কোর্টের অভিযান চালিয়ে সুরমা নদীতে অবৈধ ভাবে বালু মাটি উত্তোলনকালে নৌকাসহ ২ শ্রমিককে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা আদায় করেন। প্রতিরাতেই রাতের ১৫ টা বলগেট মাটি লোডিং করে বিভিন্ন জায়গাতে বিক্রি করেছে। এ চত্রেুর বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি। এদিকে নুরুল্লা পুর গ্রামে কাওসার আহমদ জানান, ভাঙ্গনে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে ১৯৪৮সালে প্রতিষ্ঠিত নুরুল্লা পুর ইসলামীয়া দাখিল মাদরাসা। ভাঙ্গন রোধে এলাকাবাসী কয়েক দফায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিক আবেদন করে। কিন্তু কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় ৭০বছরের প্রাচীন মাদরাসাটি এখন নদী গর্ভে বিলীন পথে। ৪শ’ ১৫জন শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠানে রয়েছেন।
এরমধ্যে কিছু অংশ তলিয়ে যাওয়ায় মাদরাসার একটি ভবনে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়। এরপাশে বাজারে পাকা বিল্ডিং, উজিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, কবরস্থান, পাকা ও কাঁচা সড়কসহ কয়েক শ’ বাড়ি-ঘর নদী গর্ভে তলিয়ে গেছে। ইতোমধ্যেই মাদরাসা এলাকার প্রায় ৫০ফুট জমি নদীতে চলে গেছে। কালারুকা ইউনিয়নের মুক্তিরগাঁও হরিশপুরের সাবেক মেম্বার নূরুল হকের পানি সম্পদ মন্ত্রীর বরাবরে অভিযোগ দায়ের করলে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহা-পরিচালক নিদেশনা প্রদান করেন।
এক যুগে ও সুরমা নদী কমপক্ষে ১০০ মিটার ভেঙেছে। মূল নদী তাদের গ্রাম থেকে অনেক দূরে ছিল। কিন্তু এখন নদীর পাড়ে বিশাল চর জেগে উঠেছে। নদী চলে এসেছে তাদের বাড়ির আঙিনায়। কিন্তু এতদিন পেরিয়ে গেলেও ভাঙন রোধে কেউ কোনও উদ্যোগ নেয়নি। ফলে শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা সব সময় নদী ভাঙছে। এখন নদী ভাঙন আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। নুরুল্লাপুর গ্রামের মাঝপাড়ায় বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। কিছুদিন পরপর এসব ফাটল নদী গর্ভে ধসে যায়। এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)ম্যাজিস্ট্রেট তাপস শীল
জানান, অবৈধভাবে সুরমা নদীতে কোনোভাবে বালু মাটি উত্তোলন করতে দেয়া হবে না, এদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।