যেখানে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে বিশ্বের বড় বড় দেশ গুলোতে লকডাউন করা হয়েছে সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের গার্মেন্টস গুলোতে এখনো হাজার হাজার কর্মী দের একত্রে কাজ করতে হচ্ছে বাধ্য হয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে জনসমাগম এড়িয়ে চলতে সেখানে দেখা যায় ইপিজেডে সমস্ত গার্মেন্টস মালিকেরা এখনো বন্ধ ঘোষণা করেনি ফলে দুশ্চিন্তায় আছে লাখো লাখো শ্রমিকেরা। বিশ্বজুড়ে মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে প্রতিদিনই বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম খাত গার্মেন্টস শিল্পের তৈরি পোশাকের অর্ডার আন্তর্জাতিক ক্রেতারা বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে ফলে হতাশ গার্মেন্টস মালিকেরা। অন্যদিকে সরকারের ১০ দিনের টানা ছুটি ঘোষণা করলেও চট্টগ্রামে বেশীরভাগ গার্মেন্টেসে এই ছুটি না থাকায় হতাশয় বেশীরভাগ গার্মেন্টেস শ্রমিকেরা।
তবে মালিক পক্ষ বলছে পুরাপুরি লক ডাউন না হলে সীমিত আকারে এসব প্রতিষ্ঠান চালু থাকবে আর যে কারখানাগুলো বন্ধ রয়েছে তাদেরও দীর্ঘদিন ছুটি থাকবেনা।পাশাপাশি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ব্যবহৃত মাস্ক ও পিপিই তৈরী প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করার সুযোগ নেই। গত বুধবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সকল সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দিলেও গার্মেন্টস মালিকেরা এই ঘোষণা মানছেন না এক প্রকারে।
তবে জনসমাগম এড়িয়ে চলার কথা বললেও তার উল্টো চিত্র দেখা যায় এখানে। এখনো একত্রে হাজার হাজার শ্রমিকের সমাগম ইপিজেড সহ নগরীর গার্মেন্টেস কারখানায় ।দলে দলে আসা যাওয়া করছে হাজার হাজার গার্মেন্টস শ্রমিক। যেখানে এই করোনা ভাইরাস ছড়াতে পারে যেকোন সময়। ইপিজেডের বেশ কয়েকজন শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানাযায়, মালিক পক্ষ বন্ধ না করা পর্যন্ত তাদের বাধ্য হয়ে কর্মক্ষেত্রে যেতে হচ্ছে। কেউ কেউ পেটের দায়ে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন বলেও জানায়।আবার কেউ কেউ সরকারী ছুটি থাকা সত্বেও হতাশা নিয়ে তাদের কাজ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন।
রিজেন্ট টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড নামে গার্মেন্টস কারখানায় ডাইং,প্রিন্টিংওয়ার হাউস ও ডাইং এক্সটেনশন ফ্লোরে ৬ দিন ও উইন্ডিং ল্যাব ডিজাইন ও রিজেন্ট ফেব্রিক্স ও ষ্টিচিংয়ে ৩ দিন ছুটি নিয়ে শ্রমিকদের মাঝে হতাশা দেখা যায়। বেশ কয়েকজন শ্রমিক সিপ্লাসকে জানায়, যেখানে গ্যাদারিং বেশী সেখানে ছুটি দিল মাত্র ৩ দিন। আর যেখানে অপেক্ষাকৃত গ্যাদারিং কম সেখানে ৬ দিন। এটাকে গার্মেন্টেস ব্যবস্থাপনার বৈষম্য মনে করছেন তাঁরা।
এদিকে ফোর এইচ গ্রুপ’র সমস্ত প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন গ্রুপের চেয়ারম্যান গওহর জামিল। তিনি বলেন, উৎপাদনের সাথে জড়িত লজিষ্টিক অন্যান্য বিষয়গুলো এখন তেমন পাওয়া যাচ্ছে না। তাই আমরা ফ্যাক্টরীগুলো বন্ধ করে দিয়েছি। ইতিপূর্বেও করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় গত এক সপ্তাহ ছুটি দিয়েছিলেন বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে বিজিএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপাতি এম এ সালাম সিপ্লাসকে জানান সরকারের পক্ষ থেকে কোন নির্দেশ পাওয়া যায়নি। ইতিমধ্যে কিছু কিছু গার্মেন্টস মালিকরা নিজ উদ্যোগে তাদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছেন। সমগ্র দেশ এখনো পুরোপুরি লক ডাউনের আওতায় আসেনি। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ব্যবহৃত মাস্ক ও পিপিই তৈরী করা প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা রেখে কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। কার্যক্রম চালু রাখা প্রতিষ্ঠানগুলোতে করোনা প্রতিরোধে ব্যবহৃত সব নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু আছে।
প্রসঙ্গত: বিজিএমইএর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে পোশাক কারখানা আছে প্রায় ৪ হাজার ৬২১টি। এর মধ্যে সরাসরি রপ্তানি প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত আছে প্রায় আড়াই হাজার। এ খাতে প্রায় ৪৫ লাখ শ্রমিক কাজ করে। যেখানে চট্টগ্রামের ৫০০ কারখানায় প্রায় ৮ লাখ শ্রমিক কাজ করছেন। সাধারণ জনগণের মত এসব শ্রমিকদের ও রয়েছে বেঁচে থাকার অধিকার তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রেখে করোনা মুক্ত করা যবেনা মনে করছেন কেউ কেউ ।