মহামারী করোনাভাইরাস সারাবিশ্ব যেমন আতঙ্কিত তেমন বাংলাদেশে ও আতঙ্কি ছড়িয়ে পড়েছে, মহামারী ভয়াবহ আকার ধারণ করার আগে তার থেকে রক্ষা পেতে বাংলাদেশে ১০ দিনের লকডাউন করা হয়েছে। এই লকডাউনে বলা হয়েছে অপ্রোজনীয় কাজে বাড়ির বাহির না হওয়ার জন্য বিশেষভাবে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। কিন্তু খেটে খাওয়া মানুষ পেটের দায়ে দিনমজুরের কাজ করে এমন মানুষকে যতই লকডাউনের কথা বলেন না কেন, তা তারা মানতে পারবে না যারা তিন বেলা খাবারের পয়সা জোগাড় করতে গিয়ে হিমশিম খায় তারা আবার মুখের মাস্ক কিনে পড়বে এমন সামর্থ্য নেই কারো।
কিন্ত মাস্ক না পরার দায়ে কিনা তিন বৃদ্ধকে কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখলো ভ্রাম্যমাণ আদালত। শুক্রবার বিকেলে যশোরের মনিরামপুরে ম্যাজিস্ট্রেট সাইয়েমা হাসানের ভ্রাম্যমাণ আদালত এ সাজা দেয়। শুধু তাই নয়, কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখার পর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিজে ওই চিত্র তার মোবাইলে ধারণ করেন। রাতে এ ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সামলোচনার ঝড় ওঠে।
জানা যায়, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় লোকসমাগম না করতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইয়েমা হাসানের নেতৃত্বে শুক্রবার বিকেল থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেন। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে চিনাটোলা বাজারে অভিযানের সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামনে পড়েন প্রথমে দুই বৃদ্ধ। এর মধ্যে, একজন বাইসাইকেল চালিয়ে আসছিলেন। অপরজন রাস্তার পাশে বসে কাঁচা তরকারি বিক্রি করছিলেন। কিন্তু তাদের মুখে মাস্ক ছিল না।
এ সময়, পুলিশ ওই দুই বৃদ্ধকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাস্তি হিসেবে তাদেরকে কান ধরে দাঁড় করিয়ে রাখেন। তিনি নিজে আবার মোবাইল ফোনে এ চিত্র ধারণ করেন। এরপর, একজন বৃদ্ধ ভ্যান চালককেও অনুরূপভাবে কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকার সাজা দেন। এ ছবি দ্রুতই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই বয়স্ক নাগরিকদের এভাবে সাজা দেয়াটাকে মেনে নিতে পারেননি। ভ্রাম্যমাণ আদালতের এমন দণ্ড প্রদানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। বয়স্ক নাগরিকদের এভাবে কান ধরিয়ে দাঁড় করার বিষয়টি দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসান উল্লাহ শরিফী। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান।