নিউজ ডেস্কঃ
প্রাণঘাতী মহামারী করোনাভাইরাস চীনের উহান শহর থেকে উৎপত্তি হলেও তা খুবই দ্রুত সরিয়ে যায় বিশ্বের ২১২ টি দেশে বর্তমানে সারা পৃথিবীতে প্রাণঘাতী এ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ৪২ লাখেরও বেশি মানুষ। প্রাণঘাতী ভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে সারা পৃথিবীতে তিন লাখের কাছাকাছি মানুষ। তবে প্রাণঘাতী এ করোনাভাইরাস মৃত্যুর চেয়ে সুস্থতার হার বেশি বর্তমানে সারাবিশ্বে প্রাণঘাতী এ ভাইরাস থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৫ লাখের কাছাকাছি মানুষ। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও মহামারি আকার ধারণ করেছে এ করোনা ভাইরাস।যারা ভাবছেন, ইউরোপের মতো পরিস্থিতি এশিয়া বা আমাদের দেশে হয়নি বা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাদের ভাবনা মোটেই সঠিক না-ও হতে পারে।
ফলে বিশেষ কোনো প্রয়োজন ছাড়া বের হবেন না। বাইরে যাওয়ার আগে ভয়ঙ্কর তথ্যগুলো একবার দেখে নিন- যুক্তরাষ্ট্র: ১ জানুয়ারি ১ জন করোনা শনাক্ত হয়। ১ ফেব্রুয়ারি ৭ জন শনাক্ত করোনা হয়। ১ মার্চ শনাক্ত হয়েছে ৭৪ জন এক সাথে। আর ১ এপ্রিল সেই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ১ লক্ষ ৯০ হাজারে। মাত্র তিন মাসের ব্যবধান। এটি হয়ে ওঠা ভয়ঙ্কর একটি মৃত্যুফাঁদ এখনো পর্যন্ত সে দেশটিতে এ ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না, ফলে তারা আমাদের চেয়ে অনেক উন্নত দেশ তারা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না আমাদের দেশে যদি এমন মহামারী আকারে দেখা দেয় তাহলে সেটি আমরা কিভাবে সামাল দিব? তাই আগেভাগে আমাদেরকে সচেতন হতে হবে।
এবার জেনে নিন পৃথিবীর আরো একটি উন্নত রাষ্ট্র ইতালি, ইতালি: ৩১ জানুয়ারি করোনা শনাক্ত হয় ২ জন। ২৯ ফেব্রুয়ারি করোনা শনাক্ত হয় ১ হাজার ১০০ জন। ৩১ মার্চ শনাক্ত হয় ১ লক্ষ ৫ হাজার ৮০০ জন। এবার জেনে নিন স্পেনের খবর, স্পেন: ১ ফেব্রুয়ারি ১ জন, ০১ মার্চ ৮৪ জন আর ৩১ মার্চ ৯৬ হাজার জন করোনা শনাক্ত হয়।তার পর,
যুক্তরাজ্য: ৩১ জানুয়ারি ২ জন, ১ মার্চ ৩৬ জন আর ৩১ মার্চে এসে দাঁড়ায় ২৫ হাজার ৫০০ জন। জার্মানি উন্নত দেশের একটি রোল মডেল, জার্মানি: ২৭ জানুয়ারি ১ জন, ২৭ ফেব্রুয়ারি ৪৬ জন, ২৭ মার্চ ৫১ হাজার এবং ৩১ মার্চ করোনা শনাক্ত হয় ৭১ হাজার ৮০০ জন।
ফ্রান্স: ২৪ জানুয়ারি ২ জন, ২৪ ফেব্রুয়ারি ১২ জন, ২৪ মার্চ ২২ হাজার ৬০০ জন আর ৩১ মার্চ ৫২ হাজার ৮০০ জন করোনা শনাক্ত হয়। বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারতের অবস্থা কি দেখুন,ভারত: ৩০ জানুয়ারি ১ জন, ২৯ ফেব্রুয়ারি ৩ জন এবং ৩১ মার্চ ১ হাজার ৪০০ জন। পাকিস্তান: ২৬ ফেব্রুয়ারি ছিল ২ জন, ২৬ মার্চ পর্যন্ত হয় ১ হাজার ২০০ জন আর সেটি ৩১ মার্চ গিয়ে হয় ১ হাজার ৯০০ জন। আগ্রাসন আমাদের বাংলাদেশ সম্পর্কে জানুন, বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছিল ৮ মার্চ। এখনো এক মাস হয়নি। অনেক দেশে এক মাসে এতো বেশি ছিলও না। এ দেশে মহামারি রূপ নিলে কী হবে, সেটা আলাদা করে বলার কিছু নেই। তখন আর ঘরে থেকেও লাভ হবে না।
পাশাপাশি আরও কিছু তথ্য জেনে নিতে পারেন। যারা আবহাওয়ার তাপমাত্রার কথা বলছেন। এছাড়া পরিস্থিতি এখনো স্থিতিশীল দেখে বাইরে যাওয়ার জন্য হাপিত্যেশ করছেন। জেনে রাখুন, সাধারণত ৫০ দিনের পরই করোনার প্রকোপ মারাত্মক হারে বেড়ে যায়। ব্রাজিল: দেশটির তাপমাত্রা ২৫ থেকে ২৯ ডিগ্রি। শনাক্তের ৩৩তম দিন সেখানে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৩ হাজার ৯০৪ জন। আর মারা গেছেন ১১৭ জন। আর ব্রাজিলের আজ পর্যন্ত গরমে আক্রান্ত হয়েছে সর্বমোট, ১,৫৬,০৬১ জন দেশটিতে পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১০ হাজার ৬৫৬ জনের। ইন্দোনেশিয়া: দেশটির তাপমাত্রা ২৬ থেকে ৩১ ডিগ্রি। ২৭তম দিনে সেখানে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ২৮৫ জন। মৃত্যু হয়েছে ১১৪ জনের।
ফিলিপাইন: দেশটির তাপমাত্রা ২৯ থেকে ৩৫ ডিগ্রি। ২৪তম দিনে শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৪১৮ জন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৭১ জনের। মালয়েশিয়া: দেশটির তাপমাত্রা ২৮ থেকে ৩৪ ডিগ্রি। ৬৪তম দিনে শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ৪৭০ জন। এতে মৃত্যু হয়েছে ৩৪ জনের। ভারত: দেশটির তাপমাত্রা ৩২ থেকে ৩৭ ডিগ্রি। ৫৯তম দিনে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার জন। এতে মৃত্যুবরণ করেছে ২৫ জন। এভাবেই দীর্ঘ সময় নিয়ে মহামারি রূপ নিয়েছে- ইতালি: শনাক্ত হওয়ার ৪৫তম দিনে ,স্পেন: শনাক্ত হওয়ার ৫০তম দিনে যুক্তরাষ্ট্র: শনাক্ত হওয়ার ৫৫তম দিনে।
সুতরাং যারা ভাবছেন, করোনাভাইরাস থাকলে এতদিনে লক্ষণ প্রকাশ পেত। তাদের বলি, আমেরিকায় ২৩তম দিনে রোগী ছিল মাত্র ১১ জন। আমাদের দেশে একই দিনে রোগীর সংখ্যা অর্ধশত। তাই সতর্ক থাকুন। চোখ-কান খোলা রেখে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করুন। অপ্রয়োজনে ঘরের বাইরে যাবেন না সাবান পানি দিয়ে ঘন ঘন হাত দেবেন অন্তত ২০ সেকেন্ড চোখে নাকে মুখে হাত দেওয়া থেকে বিরত থাকুন ঘরে থাকুন নিরাপদে থাকুন।