
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
প্রাণঘাতী বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনা ভাইরাস কোভিড-১৯ নিয়ে তথ্য গোপন করতে চেয়েছিল চীন। সে কারণে দেশটির প্রেসিডেন্ট বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলেছিলেন। তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে আহ্বান জানিয়েছিলেন যেন, বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ সতর্কতা আরো দেরিতে জারি করা হয় এবং মানুষ থেকে মানুষে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের বিষয়ে তথ্য প্রকাশ করা না হয়। সাম্প্রতিক সময়ে এই বিস্ফোরক তথ্য সামনে এসেছে। এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, গত জানুয়ারিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদ্রোস আধানমের সঙ্গে আলাপকালে শি জিনপিং তাকে ব্যক্তিগতভাবে অনুরোধ করেছিলেন যেন তখনই বৈশ্বিক মহামারি করোনার সতর্কতা জারি করা না হয়।
জার্মানির ডের স্পিজেল সাময়িকীতে দেশটির ফেডারেল ইন্টিলিজেন্স সার্ভিসের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে চীন সম্পর্কে এমন বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। ওই সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, গত ২১ জানুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধানের সঙ্গে আলাপ করেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। সে সময়ই তিনি করোনা ভাইরাস নিয়ে এসব তথ্য তখনই যেন প্রকাশ না করা হয় সেজন্য অনুরোধ করেছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধানকে। এমন বিস্ফোরক তথ্য সামনে আসতেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফ থেকে এক বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। সেখানে এ ধরনের তথ্যকে ভিত্তিহীন ও মিথ্যা বলে উল্লেখ করা হয়েছে ওখানে বলা হয়েছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা কে প্রশ্নের মুখে ফেলতে এমন অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে।
ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, ড. তেদ্রোস এবং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে গত ২১ জানুয়ারি কোনো কথাই হয়নি। এমনকি এখন পর্যন্ত তারা কখনও ফোনেও কথা বলেননি। সেখানে আরো বলা হয়েছে যে, এ ধরনের তথ্য বিভ্রান্তিকর এবং তা কোভিড-১৯ মহামারি করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং বিভিন্ন দেশের প্রচেষ্টা থেকে মানুষের দৃষ্টি সরিয়ে দিতে চাচ্ছে বলে জানান তিনি। সেখানে বলা হচ্ছে, গত ২০ জানুয়ারি মানুষ থেকে মানুষে করোনা ভাইরাসের সংক্রণের বিষয়টি নিশ্চিত করে চীন। এরপরেই সব ধরনের তথ্য সংগ্রহের পর গত ২২ জানুয়ারি এ বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সে সময় জানানো হয়েছে যে,
চীনের উহানে মানুষ থেকে মানুষে এই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে।যদি চীনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগটি সত্যি হয়ে তাকে তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথা সত্যি প্রমাণিত হবে। এর আগে তিনি বলেছিলেন যে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চীন-কেন্দ্রিক। গত এপ্রিলে ট্রাম্প প্রশাসন অভিযোগ তোলে যে, চীনের প্রপাগান্ডা ছড়ানোতে একটি ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সে সময় সংস্থাটিকে অর্থ সহায়তা বন্ধের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ।
গত সপ্তাহেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সমালোচনা করেছেন মার্কেট প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যা বলেছে তা ছিল মিথ্যা। সংস্থাটি আসলে চীন-কেন্দ্রীক বলে উল্লেখ করেন তিনি এসময়। গত ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ এ চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম প্রাণঘাতী মহামারী করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্বের ২১২টি দেশ ও অঞ্চলে এই করোনাভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। ততক্ষণে অনেক দেরি করে ফেলেছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা চীন চাইলে আরো আগে বিশ্ববাসীকে এই মহামারী ব্যাপারে সতর্ক করতে পারত কিন্তু তা না করে এই মহামারীর দিকে ঠেলে দিয়েছে পৃথিবীর সকল মানুষকে।