নিউজ ডেস্কঃ
প্রাণঘাতী মহামারি করোনাভাইরাসে বাংলাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে ভাইরাসটিতে মোট ২৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরো এক হাজার ৩৪ জন। যা দেশে করোনা ভাইরাসে হানা দেয়ার পর বাংলাদেশে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। সব মিলিয়ে মোট করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৫ হাজার ৬৯১ জন। আজ সোমবার (১১ মে) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি নতুন সংযুক্ত একটিসহ মোট ৩৭টি ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে জানান, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস শনাক্তে আরো ৭ হাজার ২৬৭টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ৭ হাজার ২০৮টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো এক লক্ষ ২৯ হাজার ৮৬৫টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় আরো ১ হাজার ৩৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এটি ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ করোনা শনাক্তের রেকর্ড। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছে ১৫ হাজার ৬৯১ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে আরো ১১ জন। ফলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২৩৯-এ। আর গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরো ২৫২ জন। সব মিলিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২ হাজার ৯০২ জন।
নতুন করে যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে ৫ জন পুরুষ, ৬ জন নারী। ৮ জন ঢাকা বিভাগের, ২ জন চট্টগ্রাম এবং ১ জন রংপুর বিভাগের। এদের মধ্যে সত্তরোর্ধ্ব ১ জন, ষাটোর্ধ্ব ১ জন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ৪ জন, চল্লিশোর্ধ্ব ২ জন, ত্রিশোর্ধ্ব ২ জন এবং ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী ১ জন আছেন। গতকাল রবিবার (১০ মে) স্বাস্থ্য অধিদফতরের বুলেটিনে জানানো হয়েছিল, করোনা ভাইরাসে বিগত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৫ হাজার ৭৩৮টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে আরো ৮৮৭ জনের দেহে, যা সর্বোচ্চ করোনার শনাক্তের রেকর্ড। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুর সংখ্যা কমলেও হয়েছে সর্বোচ্চ রোগী শনাক্তের রেকর্ড।
আজ সোমবারের বুলেটিনে বলা হয়েছে, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরো ১৮৩ জনকে এবং বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন ২ হাজার ২৩৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৬২ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন ১ হাজার ১৭৬ জন। সারাবাংলাদেশে আইসোলেশন শয্যা রয়েছে ৮ হাজার ৬৩৪টি। আইসিইউ শয্যা রয়েছে ৩৩৫টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট রয়েছে ১০২টি। গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে ২ হাজার ৩৬০ জনকে। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে ২ লক্ষ ১২ হাজার ৯৮৩ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন ২ হাজার ৪৩৯ জন। এ পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন ১ লক্ষ ৭৬ হাজার ৬৪০ জন।
বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৩৬ হাজার ৩৪৩ জন। দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬১৫টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩০ হাজার ৯৫৫ জনকে। বুলেটিনে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়। ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, আপনার সুস্থতা আপনার হাতে। এ বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা যেন স্বাস্থ্যবিধিগুলো মেনে চলি।