বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক প্রয়াত জননেতা জহুর আহমদ চৌধুরীর কনিষ্ঠ কন্যা জে.এন সাংস্কৃতিক সংসদ (জহুর-নুরুন্নাহার সাংস্কৃতিক সংসদ) এর প্রধান উপদেষ্টা জেরিনা রোজী বলেন, অসুস্থ সংস্কৃতি চর্চার কারণে যুব সমাজ ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে। সুস্থ সংস্কৃতি চর্চা জীবন মানকে উন্নত করে, করে সমৃদ্ধও। সংস্কৃতি বিহীন কোন জাতি বেশি দিন টিকে থাকতে পারেনা। সুস্থ সংস্কৃতিই পারে দেশের যুব সমাজকে মাদক, ইভটিজিং, জঙ্গি-সন্ত্রাস থেকে দুরে রাখতে।
স্ব-স্ব ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার পাশাপাশি সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চা দেশ ও জাতিকে উন্নত করবে। তাই আসুন অসুস্থ সংস্কৃতির কালো থাবা থেকে দেশ ও জাতিকে রা করে সুস্থ সংস্কৃতির প্রচলন ঘটাই। তিনি আরো বলেন, চির স্বাধীনচেতা বাঙ্গালীদের হাজার বছরের নিজস্ব সাংস্কৃতিক স্বকীয়তা, ইতিহাস, ঐতিহ্য রয়েছে। বাংলাদেশের নিজস্ব সংস্কৃতি স্বকীয় বৈশিষ্ট্যের কারণে স্বমহিমায় উজ্জ্বল। বাঙালি জাতি ভাষার জন্য রক্ত দিয়ে সাংস্কৃতিক আন্দোলন শুরু করেছে।
বাংলাদেশ পৃথিবীর সমৃদ্ধ সংস্কৃতির ধারণকারী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। রন্ধন, পোষাক, সামাজিক অনুষ্ঠান, গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানে সাজে বৌ, ক্রীড়া, লোক সংস্কৃতি ও কারুশিল্প, মেলা নৃত্য, পালাগান, বারো মাসে তেরো পাল্বন, নবান্ন উৎসব, গণমাধ্যম ইত্যাদি মিলেই বাঙ্গালি সংস্কৃতি। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ঐতিহ্য হাজার বছরের বেশি পুরনো। মধ্যযুগে বাংলা ভাষায় কাব্য, লোকগীতি, ও পালাগানের প্রচলন ঘটে। ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীতে বাংলা কাব্য ও গদ্যসাহিত্যের ব্যাপক বিকাশ ঘটে।
নোবেল পুরস্কার বিজয়ী বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম প্রমুখ বাংলা ভাষায় সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন। তিনি বলেন, আধুনিক সাহিত্যিকদের মধ্যে আল মাহমুদ, হুমায়ূন আহমেদ খুব বেশি জনপ্রিয়। তাছাড়াও ছোটদের কাছে মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, রকিব হাসান, খুব জনপ্রিয়। অন্যান্য প্রধান ধারার সাহিত্যিকদের মধ্যে কাজী আনোয়ার হোসেন, কবি শামসুর রাহমান, নির্মলেন্দু গুণ প্রমুখ জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছেন।
গ্রাম বাংলার লোক সঙ্গীতের মধ্যে বাউল গান, জারি, সারি, ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালি, মুর্শিদী, গম্ভীরা, কবিগান ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। গ্রামাঞ্চলের এই লোকসঙ্গীতের সাথে বাদ্যযন্ত্র হিসাবে মূলত একতারা, দোতারা, ঢোল, বাঁশি ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। আধুনিক সংগীতকাররা অবশ্য বিদেশী বাদ্যযন্ত্র যেমন কীবোর্ড, ড্রামস, গীটার ইত্যাদিরও ব্যবহার করে থাকেন। কেউ কেউ আবার লোকজ ও আধুনিকতার মিশ্রণে ফিউশন ধারারও প্রচলন করেন।
১৯ সেপ্টেম্বর শনিবার বিকাল ৪ঘটিকায় চট্টগ্রাম নগরীর কে.সি দে রোডস্থ ইসলামিয়া হলে জেড.এন সাংস্কৃতিক সংসদ (জহুর-নুরুন্নাহার সাংস্কৃতিক সংসদ) এর পুর্নাঙ্গ কমিটি গঠনকল্পে আলোচনা সভা বিশিষ্ট ব্যান্ড শিল্পী আইনান মোরশেদ জুহায়ের’র সভাপতিত্বে এবং কবি ও সাংবাদিক মো: কামাল হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেড.এন সাংস্কৃতিক সংসদের প্রধান উপদেষ্টা জেরিনা রোজী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিদ্দীকুল ইসলাম, প্রকৌশলী সঞ্চয় কুমার দাশ, কবি সজল দাশ, শিল্পী অচিন্ত্য কুমার দাশ, শ্রমিক নেতা কামাল উদ্দিন, মহিউদ্দিন আলম, রোকন উদ্দিন,
জামালখান ওয়ার্ড যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ইকবাল ইমু, শামসুল আলম মামুন, সুমন বড়–য়া, আরিফ মোহাম্মদ মঞ্জু, শাখাওয়াত হোসেন পাভেল, তেজান মোরশেদ, মো: আব্দুল্লাহ, রামিম আল মেহেদী, রাজ গোপাল রপন। বক্তব্য রাখেন আকতার হোসাইন, লিয়াকত হোসেন লিমন, মো: সাজ্জাদ, রতন দাশ, সবুজ চৌধুরী রকি, মো: ইমরান প্রমুখ।সভা শেষে জেড. এন সাংস্কৃতিক সংসদের প্রধান উপদেষ্টা জেরিনা রোজী বিশিষ্ট ব্যান্ড শিল্পী আইনান মোরশেদ জুহায়ের কে সভাপতি ও কবি ও সাংবাদিক মো: কামাল হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট একটি পুর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেন।
মোঃ কামাল হোসেনঃ