ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের হতদরিদ্র তপন দাসের নিয়ে জিপিএ ৫ পেয়েও রাজমিস্ত্রির কাজে, লেখাপড়া অনিশ্চিত’ হওয়ার পর নজরে আসে অনেকের। তার লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পাশে দাঁড়িয়েছেন ঝিনাইদহের পৌরসভার মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু ও ঝিনাইদহ জেলা পরিষদ সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন সোহেল। সাইদুল করিম মিন্টু মঙ্গলবার দুপুরে তপন দাসের বই কেনা বাবদ ৩ হাজার ও সোহেল ভর্তিবাবদ ১ হাজার নগদ টাকা তুলে দিয়ে তপন দাসের লেখাপড়ার অনিশ্চিয়তা দুর করেন।
উল্লেখ্য, তপন দাসের ভূমিহীন বাবা হরেন দাস এক সময়ে ছিলেন মটর গাড়ি চালক। কিন্ত বয়সের ভার আর রোগাক্রান্ত হয়ে হারাতে বসেছেন দৃষ্টি শক্তি। ফলে এখন আর গাড়ি চালাতে পারেন না। মা সুমিত্রা দাস পরের বাসায় কাজ করেন। সাংসারিক এমন অভাবের মধ্যদিয়ে সারা বছর রাজমিস্ত্রির সহকারীর কাজ করে চালিয়ে গেছে নিজের লেখাপড়া। চলতি বছরে তপন কালীগঞ্জ সরকারী নলডাঙ্গা ভূষন হাইস্কুল থেকে কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অধিন জিপিএ ৫ পেয়ে সকলকে চমকে দেয়।
কিন্ত কিভাবে আসবে কলেজের লেখাপড়ার খরচ সে চিন্তায় পড়েছিলেন তপনের বাবা মা। কিন্ত ভর্তি ও বই কেনার টাকা পেয়ে সেই সকল দুঃচিন্তা দুর হয়েছে। তপন দাসের পরিবার ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌর এলাকার ফয়লা মাষ্টারপাড়ার মনো মোল্যার বাড়িতে ভাড়ায় বসবাস করেন। হতদরিদ্র মেধাবী তপন দাস জানান, এতোদিন বাড়িতে থেকে রাজমিস্ত্রির সহকারীর কাজ করেও লেখাপড়া চালিয়ে গেছি। কাজ করে অল্প কিছু টাকা জমা করেছিলাম। বাকি টাকা কোথায় পাবো সেই চিন্তায় ছিলাম।
আমার এমন প্রয়োজনের সময়ে যে সাহায্যটা পেলাম আমার খুব উপকারে আসলো।মা সুমিত্রা দাস জানান, আমাদের নিজেদের কোন জায়গা জমি নেই। পরের বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছি। আমার অন্য ছেলেরাও দিনমজুর। তারাও পৃথক সংসার করছে। অভাবের সংসারে স্বামী কোন কাজ করতে পারেন না। আমিও অসুস্থ তবে বেঁচে থাকার তাগিদে এলাকার শ্যামল বিশ্বাসের বাসায় কাজ করি। ছোট ছেলে তপন দাস লেখাপড়া করে। সংসারের অভাবের তাগিদে এবং নিজের লেখাপড়ার খরচ যোগাতে তাকে রাজমিস্ত্রির সহকারীর কাজ করতে হয়। ছেলের লেখাপড়ার জন্য যারা আর্থিকভাবে সাহায্যের হাত বাড়ালেন আমাদের মত মানুষের জন্য এটা একটা অনন্য দান।