
আরিফুল ইসলাম সুমন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
আল আমীন শাহীন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী একজন সমাজ সংস্কারক। তিনি মূলত সাহিত্যিক ও একজন প্রতিশ্রুতিময় কবি হিসেবে সর্বমহলে পরিচিত। বর্তমান সময়ে সমালোচক এবং সাহিত্য সম্পাদক হিসেবেও তিনি অনবদ্য অবদান রেখেছেন। তিনি একজন সুবক্তা। তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠ কীর্তি বিশেষ করে সাহিত্য ও সংস্কৃতি কেন্দ্রগুলো যা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আলোকিত মানুষ তৈরির কাজে নিয়োজিত রয়েছে।
আল আমীন শাহীন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার উত্তর পৈরতলায় বসবাস করেন। তাঁর পৈত্রিক নিবাস জেলার সরাইল উপজেলার দেওড়া গ্রামে। তাঁর পিতা ছিলেন একজন স্বনামধন্য সর্বজন শ্রদ্বেয় সৌখিন ব্যক্তি।
মানুষ গড়ার কারিগর একজন শিক্ষক হিসেবে আল আমীন শাহীনের খ্যাতি কিংবদন্তিতুল্য। তিনি জেলার একটি স্বনামধন্য কলেজে খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত বহু বছর যাবত। পাশাপাশি তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে প্রকাশিত দুইটি পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন “নতুন মাত্রা” নামে একটি সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন।
একজন আদর্শ শিক্ষক হিসেবে তাঁর চ্যালেঞ্জ এক ধাপ বেশি- “কেবল শিক্ষক হওয়া নয়, সকল শিক্ষার্থীর হৃদয়ের কাছে পৌঁছানো, সকল শিক্ষার্থীর হৃদয়কে আপ্লুত করা। তিনি বহু গুণের অধিকারী। কবিতা আবৃত্তি, অভিনয়, চিত্রাঙ্কন, উপস্থাপনা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, সুন্দর লিখনি, সু-পরামর্শ সকল কিছুতেই তাঁর জুড়ি নেই। সহাস্যমুখ আল আমীন শাহীনের মাঝে যেন সর্বদা বইছে সুশিক্ষার বাতাস।
সাম্প্রতিককালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নতুন ধারার সাহিত্য-সংস্কৃতির সূচনালগ্ন থেকেই রুচিমান ও বিনোদন-সক্ষম ব্যক্তিত্ব হিসেবে আবির্ভুত হন আল আমীন শাহীন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নবীন সাহিত্যযাত্রাকে তিনি নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনা দিয়ে সংহত ও বেগবান করে রেখেছেন দীর্ঘ দিন ধরে।
টেলিভিশনের বিনোদন ও শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানের উপস্থাপনায় তিনি পথিকৃৎ ও অন্যতম সফল ব্যক্তিত্ব। তরুণ বয়সেই তিনি কবিতা ও কল্পকাহিনী লিখতেন। তিনি বহু প্রবন্ধ, উপন্যাস ও কবিতা লিখেছেন।অনেক মানুষকে আলোর পথ দেখিয়েছেন। শিখিয়েছেন মানবকল্যাণের পাশাপাশি নতুনভাবে বাঁচার সু-কর্ম কৌশল। অসহায় ছিন্নমূল মানুষদের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন। অনেক মানুষকে উৎসাহিত করেছেন আত্মনির্ভরশীল ও উদ্যোক্তা হয়ে সমাজ-সংসার এর উন্নয়নে ভূমিকা রাখার বিষয়েও।
আল আমীন শাহীনের ব্যক্তিত্বের প্রায় সবগুলো দিক সমন্বিত হয়েছে তাঁর নেতৃত্বে পরিচালিত সাহিত্য-সংস্কৃতি কেন্দ্রগুলোর একজন দক্ষ সংগঠক পরিচয়ে। তিনি অনুভব করেছেন সমৃদ্ধ ব্রাহ্মণবাড়িয়া গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমাদের প্রয়োজন অসংখ্য আলোকিত মানুষ।
আলোকিত মানুষ চাই- গোটা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এই আন্দোলনের অগ্রযাত্রী হিসেবে প্রায় তিন দশক ধরে তিনি রয়েছেন সংগ্রামশীল। তাঁর পরিচালিত সাহিত্য-সংস্কৃতির কেন্দ্রগুলো গড়ে উঠেছে একটু একটু করে, অনেক দিনে। এই দীর্ঘ সময়ে বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাতের মুখে নানা উত্থান পতনের মধ্য দিয়ে তাঁকে এগোতে হয়েছে।
আল আমীন শাহীন একজন কীর্তিমান বাঙালী। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ইতিহাসের আকাশে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র।