মিয়ানমার ঘেষা নাইক্ষ্যংছড়ি-আলীকদম সীমান্ত পয়েন্টের পোয়ামূহুরী থেকে ৪০ টি গরু জব্দ করেছে বিজিবি। মঙ্গলবার (২৩ মে) রাতে আলীকদম বিজিবি বিশেষ টিম এসব গরু আটক করেন। আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আলীকদম ৫৭ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল ইফতেখার হোসেন। গত ১৮ মে বিকেলে ২৫ টি গরু জব্দ করেছিলেন আলীকদম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহরুবা ইসলাম।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সীমান্তের ৫৩ ও ৫৪ পিলার এলাকা হয়ে স্থানীয় চোরাকারবারীরা গরু গুলো মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পাচার করছিলো। কারবারীরা দুর্গম পাহাড়ি পথ পাড়ি দিয়ে গরু চোরাচালান হচ্ছে এমন খবরের ভিত্তিতে প্রশাসন ও সীমান্ত রক্ষী বিজিবি তৎপর হয়। তারই ধারাবাহিকতায় আলীকদমের বিজিবির টহল দল সোমবার (২৩ মে) দিবাগত গভীর রাতে অভিযান শুরু করে।
পরে তারা মঙ্গলবার (২৪ মে) রাত ২ টায় তাদের হাতে ৪০টি গরু জব্দ হয়। বিজিবি সূত্র জানান,নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আলীকদম উপজেলা সদরের ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে পোয়ামুহুরী সীমান্ত এলাকায় পৌঁছলে বিজিবি গরু গুলো জব্দ অভিযান শুরু করে। অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল ইফতেখার হোসেন এর নির্দেশে মঙ্গলবার রাতে উপজেলা সদর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে আলীকদম-পোয়ামুহুরী সড়কে একটি চেকপোষ্ট স্থাপন করা হয়।
চেক পোস্ট বসানোর খবর জেনে গরুগুলো সড়ক পথে না এনে ট্রাক থামিয়ে ভিন্ন সড়ক দিয়ে গভীর জঙ্গলে তাড়িয়ে নিয়ে যেতে থাকে চোরাকারবারীরা। গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে এই খবর জেনে যান বিজিবি অধিনায়ক। পরে তাঁরাও কৌশলে অবলম্বন করে ২৪ মে এসব গরু আটক করতে সক্ষম হন। আলীকদম বিজিবি সূত্র আরো জানান , জব্দ গরু ৪০ টি মঙ্গলবার (২৪ মে) বান্দরবান কাস্টমস এর কাছে হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া চলছে।
স্থানীয় খামারীরা জানান,তারা সরকার থেকে ঋণ / ধার নিয়ে খামার গড়ে তুলেছেন। এখন সীমান্ত দিয়ে চোরাইপথে নাইক্ষ্যংছড়ি,আলীকদম ও রামু উপজেলার সীমান্ত এলাকা দিয়ে চোরাই গরুর ঢল নামার আশংকায় তারা দূঃচিন্তায় এবং বিপাকে পড়েছেন। তারা বাজারে গরুর উচিৎ মূল্য না পেলে বড় ধরণের ক্ষতিতে পড়বেন বলে জানিয়েছেন এ প্রতিবেদককে।
উল্লেখ্য,মায়ানমার সীমান্ত পথ পাড়ি দিয়ে কয়েক মাস ধরে ব্রাহামা প্রজাতির গরু নাইক্ষ্যংছড়ি হয়ে আলীকদমে ঢুকছিল।এতে জড়িয়ে পড়েছে এলাকার অনেক রতি-মহারতি। এমনকী কয়েকজন জনপ্রতিনিধিও। এ প্রেক্ষাপটে গত ১৮ মে আলীকদম উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেহরুবা ইসলাম মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে আলীকদম-পোয়ামুহুরী সড়কের বাবু পাড়া এলাকা হতে ২৫টি গরু, ২টি ট্রাক ও একজন পাচারকারীকে আটক করেন।
পুলিশ আকটকৃত ব্যক্তিকে আদালতে হস্তান্তর করেন। আটককৃত ২৫টি গরু বর্তমানে থানা হেফাজতে আছে। ইউএনওর অভিযানের পর পাচারকারী চক্রটি ক’দিন নীরব থাকলেও ৭ দিন পর পুণরায় সক্রিয় হয়ে অপতৎপরতা শুরু করলে ৫৭ বিজিবির অভিযানের আবার তাদের লাগামে টান পড়ে।
এখন চেরাকারবারীরা নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ঝুঁকে পড়বে বলে আশংকা করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।মহলটি আরো বলেন,মিয়ানমারের এ চোরাই গরু বিক্রি হয় নাইক্ষ্যংছড়ির চাকঢালা, বাইশারী ,আলীকদম ও রামুর গর্জনিয়া বাজারে। এছাড়াও উখিয়া,কোটবাজার,মরিচ্যা ও ভালুকিয়া বাজারেও বিক্রি হয়।