এএফসি কাপ ফুটবলে একটা স্বপ্ন পূরণের দুয়ারে দাঁড়িয়ে বসুন্ধরা কিংস। দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে নিজেদের ‘ডি’ গ্রুপ পর্বে শেষ ম্যাচ। এই বাধা অতিক্রম করতে পারলে কিংস আরেক ধাপ ওপরে উঠে যাবে। ইন্টারজোনাল সেমিফাইনালে খেলবে। ভারতের ওড়িশা এফসির বিপক্ষে আজ বসুন্ধরা কিংসের লড়াই।
ভারতের ভুবনেশ্বরে খেলা শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায়। কিংসের সামনে সমীরকরণ খুব সহজ। ম্যাচ ড্র হলেই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন কিংস। অন্যদিকে ওড়িশা এফসির ৯ পয়েন্ট, ৫ খেলায়। তারা যদি গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হতে চায় কিংসকে হারাতেই হবে আজ। আর কিংস ড্র করলেই চলে যাবে।
কিন্তু কিংসের ভাবনা ম্যাচ জিতেই তারা গ্রুপ চ্যাম্পিয়নের আনন্দটা করতে চায়। ড্র হওয়ার মানসিকতা খেলা নষ্ট করতে পারে। এটা ঝুঁকিপূর্ণ। ৩ পয়েন্টের লড়াই হবে উপভোগ্য। কিংস আগের ম্যাচে ঢাকায় মালদ্বীপের মাজিয়ার বিপক্ষে জিতলেও তারা একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার নিয়ে খেলতে পারেনি। এবার সবশক্তি নিয়ে মাঠে নামতে চায়।
ওড়িশা ৫-২ গোলে মোহন বাগান সুপার জায়ান্টকে এই টুর্নামেন্ট থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। আক্রমণভাগে ইংলিশ ফুটবলার সাই গাডার্ড ও ব্রাজিলিয়ান দিয়েগো মাউরিসিও বেশ দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন। দুজনই আগের ম্যাচে মোহন বাগানের জালে গোল করেছেন। ওড়িশার আক্রমণভাগে যেমন রক্ষণও পাকাপোক্ত। স্প্যানিশ ডিফেন্ডার কার্লোস দেলগাদো দক্ষতার সঙ্গেই ঘর সামাল দিচ্ছেন।
দেশি ফুটবলাররা বিদেশিদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে লড়াই করে যাচ্ছেন। বসুন্ধরা কিংসও বিদেশি নির্ভর। বিদেশি ফুটবলাররা দলের অর্ধেক শক্তি। উজবেকিস্তানের বুবরবেক, উজবেকিস্তানের আসরভ গফুরভ, নাইজেরিয়ান এমফন উদো, আইভরিকোস্টের চার্লস দিদিয়ের, ব্রাজিলিয়ান গোমেজ দরিয়েলটন, স্বদেশি মিগুয়েল ফেরেইরা, আরেক স্বদেশি রবসন দ্য সিলভা। এই শক্তির সঙ্গে তারিক কাজী সোহেল রানা, রাকিব, সাদ, রফিক, জনি, মোরসালিনরা ভালো কিছু ওপর দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।
তবে কিংসের সবচেয় দুর্বল জায়গা হচ্ছে তিন কাঠির নিচে, গোলপোস্টে। এখানে গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ কললেও তিনি বারবার ব্যর্থ হয়েছেন। কম বয়সি গোলরক্ষক, এখনো অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেনি। গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো দলের সঙ্গে ভারতের গেলেও তাকে আজ নামানোর কথা না। পরিস্থিতি বুঝে কী সিদ্ধান্ত নেন কোচ সেটা আগাম বলা কঠিন। তবে বিকল্প গোলরক্ষক শ্রাবণ কতটুকু সামাল দিতে পারবেন সেটা নিয়ে যথেষ্ট শঙ্কা রয়েছে। কারণ শ্রাবণ এখন পর্যন্ত একাধিক গোল হজম করে দলের ক্ষতিই করেছেন জাতীয় দলে লেবানানের বিপক্ষে হাস্যকর ভুলে গোল হজম করেছেন, তা না হলে বাংলাদেশ হয়তো সেদিন জয় নিয়ে ঘরে ফিরতে পারত।
কিংস জয়ের টার্গেট নিয়ে গেছে ভারতে। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হলে তাদের জন্য ঐতিহাসিক রাত হবে এটি। এমন সম্ভাবনা ভাবনায় রেখে বহর নিয়ে ভুবনেশ্বর গেছে। যেখানে দলের চেয়ে সমর্থকের সংখ্যাটাই বেশি। ২৮ জনের দলের সঙ্গে আরো নাকি পঞ্চাশোর্ধ্ব একটি বহর গেছে। তারাও ইতিহাসের সাক্ষী হতে চায়। ২০১৯ সালে আবাহনী ইন্টারজোনাল সেমিফাইনাল খেলেছিল, উত্তর কোরিয়ার এপ্রিল টোয়েন্টি ফাইভ দলের বিপক্ষে। দুই ম্যাচের লড়াইয়ে ঢাকায় (৪-৩) জিতলেও অ্যাওয়ে ম্যাচে (২-০) হেরে গোল বিবেচনায় বিদায় নিয়েছিল আবাহনী। কিংস আজ জিতলে প্রতিপক্ষ কে হবে সেটি এখনো নিশ্চিত হয়নি।