
মাহমুদুল হাসান:টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:
সর্বত্র এখন ভোটের আলোচনায় সরগরম। হাট-বাজার, চায়ের দোকার, সবত্রই ভোটের আলোচনা।একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইলের আটটি আসনে এখন ভোটের হাওয়া বইছে।
টাঙ্গাইল জেলায় মোট ১২ টি উপজেলা।আটটি আসনে ১১টি পৌরসভা ও ১১৮টি ইউনিয়নে মোট ভোটার রয়েছেন ২৭ লাখ ৮২ হাজার ৮৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৩ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৮ জন এবং মহিলা ভোটার ১৪ লাখ তিন হাজার ৭৯৭ জন। এদের মধ্যে নতুন ভোটার হয়েছেন ৪১ হাজার ৩৩৭ জন।
তবে ভোট নিয়ে এখনো অনেক সাধারণ মানুষের মধ্যে শঙ্কা রয়েছে। তারা তাদের ভোটাধিকার সুষ্ঠুভাবে প্রয়োগ করতে পারবে কি-না এই নিয়ে সংশয়ের মধ্যে রয়েছে।
অ্যাডভোকেট খান মোহাম্মদ খালেদ (টাঙ্গাইল সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজনের সভাপতি)বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের সচিব পর্যবেক্ষকদের সম্পর্কে যে কথা বলেছে, তা নিয়ে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। এখনো নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। জনগণ চায় অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে একটি নির্বাচন। যে নির্বাচনে জনগণ সুষ্ঠুভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। তিনি নির্বাচন কমিশনকে অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে যাতে ভোটাররা ভোট দিতে পারে পারে সে ব্যাপারে সর্বাত্মক ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।এ জন্য সজাগ দৃষ্টির আহব্বান জানিয়েছেন।
ভূঞাপুর উপজেলার কুতুবপুর গ্রামের নতুন ভোটার মো: শরীফ শেখ বলেন, এবাই প্রথম ভোটার হয়েছি। নির্বাচন নিয়ে মনের মধ্যে অনেক কৌত‚হল। যাতে সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারি, সেটাই প্রত্যাশা করি। যারা সৎ, যোগ্য ও এলাকার উন্নয়নের কাজ করবে তাকেই ভোট দেবো।আমরা শান্তি চাই সংঘাত নয়।
চায়ের দোকানের বেলায়েত মিয়া বলেন, গত দুটি সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে পারিনি। এবার ভোট দেয়ার মতো পরিবেশ সৃষ্টি হোক, তা প্রত্যাশা করছি।যাতে আমার ভোট আমি দিতে পারি এবং পছন্দের ব্যক্তিকে দিতে পারি।
চাকুরীজীবী খোকন তালুকদার বলেন, গত নির্বাচনে ভোটার হয়েছিলাম। কিন্তু কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকায় ভোট দিতে পারিনি। এবার প্রার্থী সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছি। যাচাই-বাচাই করে কোনো প্রতীক নয়, যোগ্য ব্যক্তিকে ভোট দেবো।যাকে দেশের উন্নয়ন হয়।
কৃষক লালু শেখ বলেন, গত নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেখি আমার ভোট অন্য লোক দিয়ে দিছে। এবার যদি নিজের ভোট নিজে দিতে পারি, খুব ভালো লাগবে। যারা কৃষি ও কৃষকের উন্নয়ন ও এলাকার উন্নয়নে কাজ করবে তাকেই ভোট দেবো।আমি সব সময় কৃষিখাতের উন্নয়ন চাই।
আখলিমা আক্তার (গৃহিণী) বলেন, এবার ভোট নিয়ে সবার মধ্যেই ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। সবকিছুই নির্ভর করে সুষ্ঠু নির্বাচনের ওপর। সুষ্ঠুভাবে যাতে ভোট দিতে পারি, সে ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন কঠোর পদক্ষেপ নেবে এটাই প্রত্যাশা করি।যাতে যার যার ভোট সে সে দিতে পারে।
টাঙ্গাইল জেলার আটটি আসনে ৮৩ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। গতকাল যাচাই-বাচাই ও শুনানি শেষে ১৪টি মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করেছেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা। টাঙ্গাইল ৪ ও ৮ আসনে ঋণখেলাপির দায়ে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম। এ ছাড়া ঋণখেলাপির দায়ে টাঙ্গাইল-১ আসনে বিএপির প্রার্থী ফকির মাহাবুব আনাম স্বপন ও টাঙ্গাইল-৬ আসনে বিএপির প্রার্থী নুর মোহাম্মদ খানের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন। এ ছাড়া টাঙ্গাইল-৩ আসনে মো. চাঁন মিয়া (এনপিপি), আতাউর রহমান খান (বিএনএফ), টাঙ্গাইল-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. বাকির আলী ও আবুল কাশেম, টাঙ্গাইল-৬ আসনে মো. সুলতান মাহমুদ (বিএনএফ), মামুনুর রহমান (এনপিপি), টাঙ্গাইল-৭ আসনে মজিবর রহমান (খেলাফত মজলিস), টাঙ্গাইল-৮ আসনে আশরাফ সিদ্দিকী (জাতীয় পার্টি), স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী শহীদুল ইসলাম, আব্দুল লতিফ (খেলাফত মজলিস) এর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে।