
স্টাফ রিপোর্টারঃ
পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও, রমজানকে সামনে রেখে ঢাকার কাচা বাজারগুলোতে মাছ, মুরগী গরু,খাসির মাংস, চনা, চিনি ও পেঁয়াজসহ নিত্য পণ্যদ্রব্য যেমন,শাকসবজি ও মুদি পণ্যদ্রব্যের দাম বৃদ্ধি করে রেখেছে অসাধু ব্যবসায়ীরা।রমজান মাসে দাম কমানো ও প্রয়োজনীয় নিত্য পণ্যদ্রব্য ও ইফতারীর কাচামাল স্বাভাবিকভাবে সরবরাহের জন্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু রাজধানীর কাচা বাজারগুলোতে বাস্তবতা ভিন্ন। কারওয়ানবাজারসহ রাজধানীর বিভিন্ন কাচা বাজারগুলোতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মুরগির দাম প্রতি কেজি ৯০-৯৫টাকা। গত সপ্তাহে
ছিলো ৮৫-৯০ টাকা অর্থাৎ ৫ টাকা বেড়েছ। চনা রমজানে খুব জনপ্রিয়। তা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫-৮০ টাকা। গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিলো ৭০-৭৫ টাকা অর্থাৎ তাতেও ৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।চিনির দাম বেড়ে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছ ৫২-৫৮ টাকা৷ গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিলো ৪৭-৫২ টাকা করে। এছাড়া দেশী পেঁয়াজ ২৫-৩০ টাকা করে পাইকারী ধরে কিনে খুচর বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩৫-৪০ টাকা।রসুন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১১৫-২০ টাকা। যা গত সপ্তাহে ৯০-১০০ টাকা বিক্রি হয়েছিল। দেশী আদা বিক্রি হচ্ছে ১৩৫-৪৫ টাকা যা গত সপ্তাহে বিক্রি ছিলো
১২০-১৩০ টাকা কজি।রমজানের আগে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে ভোক্তারা সরকারের পর্যাপ্ত মনিটরিং সিস্টেমের অভাব বলে দায়ী করেছেন। তারা অভিযোগ করেছে যে, কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা জানে যে, রমজান আসলে মানুষ দামের দিকে থাকাই না কিনে নেয়। তাই এই ব্যবসায়ীরা সুযোগটি গ্রহণ করে এবং ব্যাপকভাবে লাভ করে, যা সাধারণ ক্রেতাদেরকে প্রভাবিত করে তুলে ।ঢাকার কাওরান বাজারের খুচরা বিক্রেতা জিল্লুর রহমান বলেন, “বাজারে পর্যাপ্ত অপরিহার্য পণ্য সরবরাহের সত্ত্বেও, রমজানের কারণে আইটেমের দাম বেড়েছে”। গত সপ্তাহের চেয়ে
বেশি দামে চিকেন বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৫৫-৬৫ টাকা যা গত সপ্তাহে বিক্রি ছিলো ১৪৬-৫৫ টাকা। দেশী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০-৫৫০ টাকা, লেয়ার মুরগি (ছোট আকার) ২২০-২৫০ টাকা ও পাকিস্তানি মুরগি ২৬০-৩৫০ টাকা।মুরগি ব্যবসায়ী রাশেদ বলেন, প্রতি বছর এই সময়ের মধ্যে মুরগীর দাম বাড়ে। কিন্তু এই বছরের দাম অপর্যাপ্ত সরবরাহের কারণে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।তবে, রমজান উপলক্ষে, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ২২ এপ্রিল থেকে দেশ জুড়ে ভর্তুকির হারে পণ্য বিক্রি শুরু করে।
ক্রমবর্ধমান চাহিদার বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত সরবরাহের অভাবের কারণে নিত্য পণ্যের দাম বেশি থাকে।বেশির ভাগ সবজি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০-৮০ টাকা করে। গ্রীষ্মকালীন শাকসবজি যেমন, ঝিঙ্গে, চিচিংগা,তিতকরল,বরবটি,গাজর বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭০-৯০ টাকা করে। শীতকালীন সবজি বাজার থেকে প্রায় অদৃশ্য হয়ে গেছে। শুধুমাত্র টমেটো পাওয়া যাচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ২৫-৪০ টাকা বিক্রি হয়েছিলো, বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি৫০-৬০ টাকা।এদিকে বেশিরভাগ শাকসব্জীর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায়, মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৬০-৮০
টাকা, ফুলকপি ও পাতাকপি বিক্রি হচ্ছ ৫০-৬০ টাকা করে যা সাধারণের নাগালের বাইরে।পাশাপাশি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০-৮৫০ টাকা যা গত সপ্তাহে ছিলো ৭৫০ টাকা, খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫২০-৫৫০ টাকা যা গত সপ্তাহে ছিলো ৫২০ টাকা করে।ব্যবসায়ীরা জানান, গরুর মাংস ও খাসির মাংসের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে, এতে দাম বেড়েছে। মাছের দামও গত সপ্তাহর চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। রুই-কাতলা বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৬০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৫০-১৮০ টাকা, পাবদা ও ক্যাটপিশ বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকা করে। তবে বিভিন্ন জাতের চালের দাম এ সপ্তাহেও অপরিবর্তিত ছিল।