নগরীর পাহাড়তলী গত ২২ জুন শনিবার বিকালে ব্যাটারিচালিত রিক্সা শ্রমিক লীগের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। খুলশী থানার সভাপতি কালাম মাঝির সভাপতিত্বে সাহাবুদ্দীনের পরিচালানায় অটোরিকশা অভিযান ও প্রসাশনিক হয়রানির প্রতিবাদে সমাবেশ অনুষ্ঠিত। এতে উপস্থিত ছিলেন চান্দগাঁও থানা থেকে বেলাল, সেলিম, বাকলিয়া থানা থেকে মহিবুল্লা, পাচালাইশ থানা থেকে সুমন, লাভলু, হালিশহর থানা থেকে জসিম, সুজন, জাহানগীর মাঝি, মহুরম আলী, আজাদ প্রমুখ। বক্তরা বলেন নগরে অবৈধ ভাবে রাস্তার পাশে জায়গা দখল করে বাংলা রিক্সা ও গ্রাম সিএনজি
যানজট সৃষ্টি করছে। তবে প্রসাশনে মাসশো হারা নিয়ে নীরব ভৃমিকা পালন করছে দেখার কেউ নাই। চট্টগ্রাম শহর টিলাভৃমি রাস্তাঘাট বাহানতি হওয়া বাংলা রিক্সা রোর্ডে যানযট বেশি সৃষ্টি করছে। আমরা বিস্বাস করি যদি প্রসাশনিক সহযোগিতা করেন ডিজিটাল নগর করতে যানযটমুক্ত রাখতে ব্যাটারি চালিত রিক্সা ভৃমিকা রাখবে বলে আশা রাখি। চট্টগ্রাম নগরে অধিকাংশ রাস্তাই পরিবহন ব্যবস্থার বর্তমান চাপ নিতে সক্ষম নয়। আর অলিগলিতে গাড়িগুলো চলাচলের ক্ষেত্রে যে জট তৈরি করে গ্রাম সিএনজি ও বাংলা রিকশা। প্রতিনিয়ত নগরে অবৈধ রিকশার সংখ্যা
বাড়ছে। কিন্তু আধুনিক নগর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই বৃদ্ধি কখনো কল্যাণ জনক নয়। তার মধ্যে সিটি কর্পোরেশনের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে যে সব রিকশা প্রতিদিন রাস্তায় নামছে তা এই সমস্যাটিকে আরো জটিল করে তুলেছে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের অনুমোদন বাদেই প্রতিদিন বাড়ছে হাজার হাজার রিকশার সংখ্যা। বৈধ রিকশার প্রায় একশগুণ অবৈধভাবে চলছে। যেখানে প্রায় ৮০/৮৫ হাজার রিকশাসকে বৈধ লাইসেন্স দিয়েছে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ সেখানে অবৈধ রিকশার সংখ্যা প্রায় তিন লাখ। মজার বিষয় হচ্ছে এদের অনুমোদন প্রক্রিয়াতেও রয়েছে
এক অভিনব ব্যবস্থা। বিভিন্ন সংগঠনের কল্যাণ সমিতির নামে সিটি কর্পোরেশনের বাইরে চলাচলের জন্য সাময়িক স্বনির্ধারিত পাস সিস্টেম চালু করেছে অনেকগুলো রেজিস্ট্রেশন বিহীন সংস্থা। এ ধরনের পাস দেবার কোন আইনগত অধিকার না থাকলেও বেশিভাগ রিকশার পেছনে সিটি কর্পোরেশনের লাইসেন্সের আদলে এই সমিতিগুলো সংখ্যাতত্ত্বের হিসেব মেনে প্রদান করে তাদের চালুকৃত পাস। এই সংখ্যারগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন রিক্সা মালিক সমিতি, আওয়ামী শ্রমিক লীগ, মালিক শ্রমিক সংগ্রাম ওক্য পরিষদ, মালিক সমন্বয় পরিষদ ইত্যাদি।
এধরনের সংগঠনের সংখ্যাও কম নয়। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গিয়ে সিটি কর্পোরেশন নিজেই মুখোমুখি হয় এক ভিন্ন অভিজ্ঞতার। কেননা, ক্ষমতার দাপটে অবৈধ সংগঠনগুলো সিটিকর্পোরেশনে থেকে মোটেই দুর্বল নয়। তারাই বরং সিটি কর্পোরেশনের নামে জব্দকৃত রিকশার বিপরীতে হামলা এবং মামলা করে দেয়। এভাবেই একটি শক্তিশালী চক্র সিটি কর্পোরেশনের কিছু কর্মকর্তার সহযোগিতায় অবৈধ রিকশার বাণিজ্য চালু রেখেছে প্রতিনিয়ত। আর ট্রাফিক পুলিশের এই সংক্রান্ত নির্লিপ্ততা এ সংকটকে তীব্র থেকে তীব্রতর করে চলেছে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের
একটি রিকশার জন্য একটি ব্লুবুক বা লাইসেন্সের নিয়ম থাকলেও দেখা যায় যে, এই এক ব্লুবুকেই রিকশা চলছে আরো ৫০টি। এজন্য রিকশা চালকদের সমিতিতে চাঁদা দিতে হয় আলাদাভাবে। অবৈধ রিক্সার এই ভিন্ন চাপে জনগণের ভোগান্তিও কম নয়। কারণ নির্দিষ্ট কোন সীমা পরিসীমা না থাকায় বৃষ্টি আর রোদের মিলিত উসিলায় রিক্সাওয়ালারা ভাড়ার সীমারেখা নির্ধারণ করে আকাশচুম্বীভাবে। দিনের রোদে যেমন ভাড়া থাকে বেশি রাতের নির্জনাতেও তার হার কমে না। রিকশা ভাড়া অস্বাভাবিক বেড়ে যায়! অন্যদিকে বৃষ্টি থাকলে তা এক নতুন উপলক্ষ হিসেবে দাঁড়ায়। পরিবহন সংকট তীব্র বলে রিকশা ব্যবহারকারীরাও হয়ে পড়েন এই ধরনের পরিস্থিতির কাছে অসহায়। একদিকে নগরজুড়ে অবৈধ গ্রাম সিএনজি ও বাংলা রিকশা অন্যদিকে রিকশা
ভাড়ার এই লাগামহীন। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় যেধরনের সমন্বয় পরিকল্পনা ও আইনি ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন তার কোনো উদ্যোগই চোখে পড়ে না প্রসাশনের। নাগরিক জীবনের এই ব্যর্থতা তাই যেন এক নিত্য অভিশাপ। নগরে থেকে বাংলা রিকশা তোলার বিষয়টা একটা অনিবার্য বিষয় বলে মনে করেন সাধারন জনগণ। এ উদ্যোগটি নিতে কেউ এগিয়ে আসছে না । কারন বিশাল অঙ্কের ভোটের ঝুঁকি আছে। তবুও গণতান্ত্রিক সরকারেরই কাজ করতে পারে। এ রকম সংস্কার করার মত ক্ষমতা বর্তমান সরকারের আছে। নগরকে যানজট অবৈধ গ্রাম সিএনজি ও বাংলা রিকশামুক্ত করে একটা সুন্দর ও শহরে পরিণত করার আহবান জানান।