নিজস্ব প্রতিনিধি
সিলেট থেকে মধ্যরাতে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া সেই উপবন ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে পড়ার পরশাহান মিয়া নামের এক যুবক সে মধ্যরাতে ন্যাশনাল ইমারজেন্সি সার্ভিসে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশকে চমকে দেয় পুলিশ। মোবাইলের অপরপ্রান্ত থেকে এক যুবক পুলিশকে জানান ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার খবর। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্য রওনা হয় পুলিশ। পৌঁছে দেখে ঘটনা সত্য। হয়তো। ওই যুবক সময়মতো ফোন না দিলে আরও অনেক প্রাণহানির ঘটনা ঘটে যেতো।রোববার (২৩ জুন) রাত পৌনে ১২টার দিকে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় বরমচাল সেতু ভেঙে ভয়াবহ
ট্রেন দুর্ঘটনার পরপরই ৯৯৯ নম্বরে ফোন দেন শাহান মিয়া। পুলিশকে ট্রেন দুর্ঘটনার খবর জানান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযানে নামে পুলিশও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। শাহান মিয়ার বাড়ি কুলাউড়ার আকিলপুর গ্রামে। তিনি কুলাউড়া ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী। ট্রেন দুর্ঘটনার বর্ণনা দিয়ে শাহান মিয়া বলেন, আমি বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলাম। বরমচাল সেতুর অনেকটা দূরে আমি তখন। হঠাৎ বিকট শব্দ কানে আসে। সেই সঙ্গে ভেসে আসে মানুষের কান্না, চিৎকার। দূর থেকে তাকিয়ে দেখি, বরমচাল সেতু ভেঙে ট্রেনের বগি নিচে পরে আছে। কিন্তু কাছে
যেতেই মানুষের কান্নার আওয়াজ আরও জোরে শোনা যাচ্ছে। ঘটনার ২-৩ মিনিটের মধ্যেই আমি ৯৯৯ নম্বরে ফোন দেই। সঙ্গে সঙ্গে রিসিভ হয় ফোনে। তখন পুলিশকে পুরো ঘটনা খুলে বলি। যদি সময়মতো পুলিশ না আসতো আরও অনেক মানুষের প্রাণহানি হতো। শাহান মিয়া আরও বলেন, বরমচাল স্টেশন সংলগ্ন সেতুতে হঠাৎ ট্রেনের ছয়টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে খালে পড়ে যায় এবং একটি বগি উল্টে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই কয়েকজনের মৃত্যু হয়। এছাড়া লাইনচ্যুত বগির যাত্রী ছাড়াও মারাত্মক ঝাকুনিতে অন্তত দুই শতাধিক যাত্রী আহত হয়েছে। ঘটনাস্থলে এসে আহতদের উদ্ধার
করেছে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।বিষয়টি নিশ্চিত করে কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উয়ারদৌস হাসান বলেন, রাত ১২টার কিছুক্ষণ আগে এক ব্যক্তি ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে ট্রেন দুর্ঘটনার খবর জানায়। এত রাতে বড় ধরনের ট্রেন দুর্ঘটনার খবর শুনে অবাক হই আমরা। সেই সঙ্গে তখনই ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্য রওনা দেই। সেখানে গিয়ে ৬ জনের মরদেহ এবং অন্তত দুই শতাধিক মানুষকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করি। দুর্ঘটনার পরপরই ওই যুবক ৯৯৯ নম্বরে ফোন না দিলে বড় ধরনের ঘটনা ঘটতো।বলে জানিয়েছেন কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা
(ওসি) উয়ারদৌস হাসান ওসি আরও বলেন, ইতোমধ্যে উদ্ধারকাজ শেষ হয়েছে। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। হতাহতদের উদ্ধারে কাজ করেছে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও বিজিবি। ট্রেনের অন্য যাত্রীদেরও নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেয়া হয়েছে।রোববার রাত ১২টার দিকে কুলাউড়ার বরমচাল স্টেশনের পাশে ঢাকাগামী উপবনের বগি ছিটকে পড়ে। তিন শতাধিক যাত্রী নিয়ে রাতে সিলেট স্টেশন থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্য ওই ট্রেনটি ছেড়ে যায়। এ ঘটনায় তিনজন নারী ও তিনজন পুরুষসহ মোট ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স
সিলেটের সহকারী পরিচালক মুজিবুর রহমান বলেন, হতাহতদের উদ্ধার করে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ, দক্ষিণ সুরমা ও সিলেট সদর দফতর থেকে দমকল বাহিনীর একাধিক ইউনিট এসে উদ্ধার তৎপরতায় যোগ দেয়। ভোর রাত ৪টার দিকে উদ্ধার কাজ শেষ হয়েছে।বলে জানান তিনি এ সময় শাহান মিয়াকে প্রশাসনের সবাই আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানিয়েছে এতে স্থানীয়রাও শাহান মিয়ার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শাহান মিয়া বলেন আমি ৯৯৯নাম্বারে ফোন দিয়ে সাথে সাথে যদি পুলিশ না আসতো তাহলে আরো হতাহতের ঘটনা ঘটে পারতাম আমি এজন্য পুলিশকে আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই
