নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজের স্ত্রীকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং সরাসরি উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রাণ দিতে হয়েছে রিফাত শরীফকে বুধবার বরিশালের বরগুনা সরকারি কলেজ এর সামনে এ ঘটনা ঘটে স্ত্রীকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে রিফাত শরীফ নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার সকাল ১০টার দিকে নয়ন নামে এক যুবকের নেতৃত্বে ৪-৫ দুর্বৃত্ত রিফাতকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে এই অবস্থায় রাস্তায় ফেলে যায়।পরে স্থানীয়রা তাকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ সময় তার রক্তক্ষরণ
বন্ধ না হওয়ায় চিকিৎসক বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকাল ৪টার দিকে রিফাত মারা যান। তিনি বরগুনার বুড়িরচর ইউনিয়নের মাইঠা গ্রামের দুলাল ফরাজীর একমাত্র ছেলে।নিহতের পরিবার জানায়, রিফাতকে কুপিয়ে হত্যা করেছে তার সদ্যবিবাহিত স্ত্রীর প্রেমিক নয়ন। রিফাতের সঙ্গে দু’মাস আগে পুলিশলাইন সড়কের আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি নামের এক মেয়ের বিয়ে হয়। বিয়ের পর নয়ন নামে এক যুবক মিন্নিকে তার প্রেমিকা দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপত্তিকর পোস্ট দিতে থাকে। পরে খবর নিয়ে জানা
যায় রিফাত শরীফ বরগুনা ছাত্রলীগের নেতা ছিল তবে বড়বোন আওয়ামী লীগের সভাপতি সূত্রে জানা যায় আওয়ামী লীগের অথবা ছাত্রলীগের কোন নেতা কর্মী নয়এদিকে রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বলেন, নয়ন প্রতিনিয়ত আমার পুত্রবধূকে উত্ত্যক্ত করত এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপত্তিকর পোস্ট দিত। এর প্রতিবাদ করায় আমার ছেলে রিফাত শরীফকে। নয়ন তার দলবল নিয়ে চাপাতি ও দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। তিনি আরো বলেন, আমার একমাত্র ছেলেকে যারা দিনে-দুপুরে কুপিয়ে হত্যা করেছে, তাদের বিচার চাই। আমি স্থানীয়রা জানান,
রিফাত বুধবার সকালে তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে বরগুনা সরকারি কলেজে নিয়ে যান। পরে কলেজ থেকে ফেরার পথে মূল ফটকে নয়নসহ ৪-৫ জন সন্ত্রাসী রিফাতের ওপর হামলা চালায়।এ সময় তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে রিফাতকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। রিফাতের স্ত্রী মিন্নি দুর্বৃত্তদের নিবৃত্ত করার অনেক চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছুতেই হামলাকারীদের থামানো যায়নি। তারা তাকে উপর্যুপরি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে রাস্তায় ফেলে চলে যায়। পরে স্থানীয়রা রিফাতকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি জানান, বরগুনা পৌরসভার ধানসিঁড়ি সড়কের
আবু বকর সিদ্দিকের ছেলে নয়ন বন্ড ও তার প্রতিবেশী দুলাল ফরাজীর দুই ছেলে রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজী এবং রাব্বি আকন তার স্বামীর ওপর হামলা করে। তিনি আরো বলেন, আমার সামনে ওই সন্ত্রাসীরা আমার স্বামী রিফাতকে কুপিয়ে হত্যা করে। আমি শত চেষ্টা করেও আমার স্বামীকে বাঁচাতে পারিনি।বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আবীর মোহাম্মদ হোসেন বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছি। যে এলাকায় ঘটনা হয়েছে সেই এলাকার একটি সি সি ক্যামরার ভিডিও ফুটেজ দেখে আসামিদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতারের
জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরো বলেন আসামিদের খুব দ্রুত গ্রেপ্তারের ব্যবস্থা চলছে আসামিরা যেন পালিয়ে যেতে না পারে সে ব্যাপারে পুলিশ সতর্ক আছে তবে জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সুমন দেবনাথ বলেন, রিফাত ছাত্রলীগ কর্মী ছিলেন। তবে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি জোবায়ের আদনান অনিক বলেন, রিফাত ছাত্রলীগের কর্মী নয়।