সুন্নিয়াত ও সিলসিলাহর অসামান্য দানের জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন নূর মুহাম্মদ আলকাদেরী
আহ্লে রসূল (দ.) গাউসে জামান তৈয়্যব শাহ্ (রহঃ)’র খলিফা এ আযম, আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট’র সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ নূর মুহাম্মদ আল কাদেরীর ৪১তম ওফাত বার্ষিকী স্মারক আলোচনায় বক্তাগণ বলেন, নূর মুহাম্মদ আল কাদেরী ইসলামের মূলধারা সুন্নিয়ত ও সিলসিলায়ে আলিয়া কাদেরিয়ার প্রচার-প্রসারে অসামান্য অবদান রেখে চিরস্মরণীয় হয়ে গেছেন। শাহানশাহে সিরিকোট কর্তৃক ১৯৫৪তে প্রতিষ্ঠিত এশিয়ার অন্যতম শ্রেষ্ঠ দ্বীনি মারকাজ চট্টগ্রাম জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়ার জন্যে সে সময়ে তাঁর অবদান ছিল সবচেয়ে বেশি। গাউসে
জামান তৈয়্যব শাহ্ (রহঃ)’র শতাব্দি সেরা সংস্কার জসনে জুলুস ১৯৭৪ সনে সর্বপ্রথম নূর মুহাম্মদ আলকাদেরীর নেতৃত্বেই, তাঁরই প্রতিষ্ঠিত বলুয়ারদীঘি খানকাহ্ থেকে বের হয়ে সমগ্র দেশব্যাপি ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি হুজুর কেবলা তৈয়্যব শাহ্’র খলিফা এ আযম হিসেবে স্বীকৃতিপত্র পেয়েও নিজেকে লোকসমাজে একজন সাধারন খাদেম হিসেবেই পরিচিত থাকতে পছন্দ করতেন। আনজুমান-জামেয়ার সিনিয়র কর্মকর্তার দায়িত্ব ছাড়াও মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে তাঁর অসাধারণ অবদানসহ, তৎকালিন বক্সীর হাট ওয়ার্ডের বারবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান এবং চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স’র নেতা
হিসেবে সর্বসাধারণের সেবায় তিনি প্রশংসনীয় একজন দায়িত্বশীল হিসেবে স্বাক্ষর রেখে গেছেন।
গতকাল নগরীর কোরবানিগঞ্জ বলুয়ারদীঘি পাড়স্থ খানকা-এ কাদেরিয়া সৈয়্যদিয়া তৈয়্যবিয়ায় বাদে আসর হতে অনুষ্ঠিত স্মারক আলোচনায় বক্তারা উপরোক্ত মন্তব্য করেন। আলহাজ্ব নূর মুহাম্মদ আল কাদেরী (রহ.) স্মৃতি সংসদ এর নব নির্বাচিত সভাপতি এড. মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার’র সভাপতিত্বে স্মারক আলোচনায় প্রধান আলোচক ছিলেন জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়ার শাইখুল হাদিস শেরে মিল্লাত মুফতি ওবাইদুল হক নঈমী। বিশেষ আলোচক ছিলেন-আনজুমান ট্রাস্ট’র সেক্রেটারি জেনারেল আলহাজ্ব মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। মরহুমের পরিবারের পক্ষে কৃতজ্ঞতা জানান আনজুমান
ট্রাস্ট’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আলহাজ্ব মুহাম্মদ মহসিন। স্মৃতি সংসদ’র নব নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ এরশাদ খতিবীর স ালনায় অতিথি ও আলোচক ছিলেন- আনজুমান ট্রাস্ট’র এডিশনাল সেক্রেটারি জেনারেল আলহাজ্ব মুহাম্মদ শামসুদ্দিন, এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আলহাজ্ব এস.এম. গিয়াস উদ্দিন শাকের, গাউসিয়া কমিটির কেন্দ্রিয় চেয়ারম্যান আলহাজ্ব পেয়ার মুহাম্মদ কমিশনার, জামেয়ার চেয়ারম্যান আলহাজ্ব অধ্যাপক দিদারুল ইসলাম, আনজুমান রিসার্চ সেন্টার’র মহাপরিচালক আল্লামা এম. এ. মান্নান, ঢাকা কাদেরিয়া তৈয়্যবিয়া আলিয়ার উপাধ্যক্ষ আল্লামা আবুল কাশেম
মুহাম্মদ ফজলুল হক, সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আল্লামা সৈয়্যদ জালাল উদ্দিন আল আযহারি, লেখক-কলামিস্ট অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাসুম চৌধুরী, কায়ছার-নিলুফার কলেজের অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ওমর ফারুক, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া মহিলা মাদ্সার উপাধ্যক্ষ মাওলানা ড. মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সোবাহানীয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ, জামেয়ার আরবি প্রভাষক মাওলানা মুহাম্মদ ইলিয়াছ, মাওলানা আব্দুল কাদের, মাওলানা সাইফুদ্দিন খালেদ আল আযহারি,মাওলানা মুহাম্মদ তারেকুল ইসলাম, নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় জামে মসজিদের খতিব
মাওলানা আবু আহমদ আল-আযহারী, সীতাকু- বানুবাজার মাদরাসা-এ মুহাম্মদিয়ার সহ-সুপার মাওলানা আব্দুস সবুর, দায়েম নাজির জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা কারি মুহাম্মদ ইব্রাহিম, গাউসিয়া কমিটির কেন্দ্রিয় মহাসচিব আলহাজ্ব শাহজাদ ইবনে দিদার, যুগ্মমহাসচিব আলহাজ্ব মাহবুবুল হক খান, সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব মাহবুব এলাহি শিকদার, ঢাকা মহানগর গাউসিয়া কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মুহাম্মদ হোসাইন, চট্টগ্রাম মহানগর গাউসিয়া কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব সাদেক হোসেন পাপ্পু, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা
কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ হাবিব উল্লা মাস্টার, সহ সাধারন সম্পাদক অধ্যক্ষ মো: আবদুল মন্নান, সাংগঠসিক সম্পাদক আবুল মনসুর, উত্তর জেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজি মুহাম্মদ লোকমান, ঢাকা খিলগাঁও কাদেরিয়া তৈয়্যবিয়া তাহেরিয়া কমপ্লেক্স’র সভাপতি আলহাজ্ব মুহাম্মদ হযরত আলি, বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান মাওলানা ওবাইদুল হক হক্কানি, আনজুমান ট্রাস্ট সদস্য আলহাজ্ব কামরুদ্দিন সবুর, আলহাজ্ব হাসানুল করিম চৌধুরি রিপন, আলহাজ্ব মুহাম্মদ নূরুল আমিন, চাসক কর্মকর্তা মির্জ ফজলুল কাদের, নগর গাউসিয়া কমিটির
সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মাহবুব আলম, সহ সভাপতি মোহাম্মদ সিরাজুল আলম কনট্রাক্টর মো: আজিজুল হক চৌধুরী, হাফেজ আজহারুল হক, মনোয়ার হোসেন মুন্না, কোতোয়ালী থানা গাউসিয়া কমিটির সভাপতি খায়ের মোহাম্মদ, সহ সভাপতি মঈনুদ্দিন ফারুখ প্রমুখ।
স্মারক আলোচনায় শেরে মিল্লাত ওবাইদুল হক নঈমী বলেন, মরহুম নূর মুহাম্মদ আল- কাদেরি আলেম না হয়েও সদা-সর্বদা পীরের নির্দেশের প্রতি নিজেকে নিয়োজিত রেখে তিনি তরিকতের ভাষায় ‘ফানাফিস শায়েখ’ মকাম হাসিল করেছিলেন। যা আজ তাকে মৃত্যুর ৪১ বছর পর শুধু নয় এ সিলসিলা যতদিন থাকবে ততদিনের জন্যে স্মরণীয়-বরণীয় রাখবে। বিশেষ মেহমান আলহাজ্ব আনোয়ার
হোসেন বলেন, শাহান শাহে সিরিকোট’র প্রতি অন্তরের গভীর সম্পর্কই তাকে আনজুমান-জামেয়ার প্রতি আত্মনিবেদনের দৃষ্টান্ত অনুসরণের আদর্শ সকলের জীবনে বাস্তবায়নের আহবান জানান।
আনজুমান ট্রাস্ট’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আলহাজ্ব মুহাম্মদ মহসিন তার মরহুম পিতার ইন্তেকালের ৪১বছর ধরে মিডিয়া-প্রশাসন-পীরভাইদের সহযোগিতার জন্যে কৃতজ্ঞতা জানান এবং সকলের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দোয়া প্রার্থনা করেন।
মরহুমের ৪১তম ওফাত বার্ষিকী উপলক্ষে দু’দিনব্যাপি অনুষ্ঠানের সমাপনি দিবসে গতকাল বাদে ফজর থেকে তাঁর প্রতিষ্ঠিত বলুয়ারদীঘি খানকাহ্ শরিফ ও মাজারে খতমে কোরআন, ৩০ পারা দরুদ
শরিফ খতমে মজমুয়ায়ে সালাওয়াতে রাসুল (দ), খতমে গাউসিয়া শরিফ, মীলাদ-কেয়াম- মুনাজাত, বাদ জোহর জামেয়া সংলগ্ন মাজার শরিফে গিলাপ চড়ানো,পুষ্পসজ্জায় সন্মান জানানো সহ যিয়ারতে অংশ নেন গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ’ কেন্দ্রিয় পর্ষদ, আলহাজ নূর মুহাম্মদ আল কাদেরী স্মৃতিসংসদ ও শিশু কিশোর সংগঠন সহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, বাদে আসর থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত স্মারক আলোচনা, নামাজে এশা আদায়ান্তে তাবররুক বিতরণ করা হয়।