বিনোদন ডেস্ক:
নিরাপত্তার কড়াকড়ি, তবু এফডিসিতে ভিড় উপচে পড়েছে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে বাংলাদেশ শিল্পী সমিতির নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে, সকাল নয় টায় শুরু হওয়া বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন, দুপুরে মধ্যাহ্নভোজের এক ঘণ্টা বিরতির পর টানা বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত, ভোটগ্রহণ করা হয়, এতে সভাপতি পদে মিশা সওদাগর ও চিত্রনায়িকা মৌসুমী অংশগ্রহণ করেন। নানা প্রজন্মের অভিনয়শিল্পীদের সরব উপস্থিতিতে উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বিবার্ষিক (২০১৯-২১) নির্বাচন। শুক্রবার সকাল নয়টা থেকে
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) শিল্পী সমিতির আর্টিস্ট স্টাডি কক্ষে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। মাঝখানে এক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে শান্তিপূর্ণভবে বিকেল পাঁচটায় ভোট গ্রহণ শেষ হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে ভোট গণনা চলছে। এবারের নির্বাচনে ৪৪৯ জন ভোটারের মধ্যে ভোট পড়ে ৩৮৬টি। তথ্যটি নিশ্চিত করেন এ নির্বাচনের আপিল বোর্ডের প্রধান শামছুল আলম। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইলিয়াস কাঞ্চন শান্তিপূর্ণভাবে সবাইকে ভোটে অংশ নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান। এ সময় তিনি বলেন, ‘সবার প্রতি ভালোবাসা।
সবার অংশগ্রহণে সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন করতে পেরেছি আমরা।’এফডিসির ভেতরে ও বাইরের মূল ফটকে শত শত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আজ শুক্রবার সকাল নয়টায় যথারীতি ভোট গ্রহণ শুরু হয়। ভোটকেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ চললেও ভোট শুরুর ঘণ্টাখানেক পরেই এফডিসির মূল ফটকে চলচ্চিত্রের লোকজনের সঙ্গে গোলযোগ শুরু হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের। অভিনয়শিল্পী, প্রযোজক, পরিচালক, সহকারী পরিচালকসহ এফডিসির বিভিন্ন ইউনিট সদস্যদের নিজ নিজ সমিতির পরিচয়পত্র ছাড়া ভেতরে
ঢুকতে বাধা দেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সসদ্যরা। সকাল ১০টার পর মূল ফটকে চিত্রনায়ক সোহেল রানাকে আটকে দেওয়া হয় সঙ্গে শিল্পী সমিতির কার্ড না থাকার অভিযোগে। খবরটি এফডিসির ভেতরে ছড়িয়ে পড়লে শিল্পী সমিতির নেতারা দৌড়ে মূল ফটকে গিয়ে তাঁকে ভেতরে নিয়ে আসেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি চলচ্চিত্রশিল্পী সমিতির নির্বাচন হচ্ছে না, পুলিশের নির্বাচন হচ্ছে। আমার জীবনে এত বাজে নির্বাচন আগে দেখেনি।’ পরপরই এফডিসির ভেতর খবর আসে, মূল ফটকে পরিচালক দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, অপূর্ব রানাসহ কয়েকজন
পরিচালককে নিরাপত্তাকর্মীরা আটকে দিয়েছেন। এ খবর শুনে পরিচালক সমিতির দুই নেতা বদিউল আলম খোকন, শাহিন সুমনসহ একদল পরিচালক নির্বাচনপ্রক্রিয়া নিয়ে ক্ষোভ ঝাড়তে ঝাড়তে দ্রুতই মূল ফটকের দিকে রওনা হন। শাহিন সুমন বলেন, ‘এফডিসি কি শিল্পী সমিতির নেতৃত্বে চলবে? তাঁরা যা খুশি তাই করবেন, তা মেনে নেওয়া হবে না। বিষয়টি নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনকে কৈফিয়ত দিতে হবে।’ মূল ফটকে একই ঘটনা ঘটে জনপ্রিয় নায়ক শাকিব খানের সঙ্গে। বিকেল চারটার দিকে জনপ্রিয় নায়ক শাকিব খানও মূল ফটকে আইনশৃঙ্খলা
রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মুখোমুখি হন। তাঁকে ছাড় দিলেও তাঁর একজন সহকারী, একজন নিরাপত্তাকর্মীকে ভেতরে ঢোকার ব্যাপারে প্রশ্ন তোলে পুলিশ। তবে শেষে শাকিব খানের সঙ্গে থাকা সবাই-ই ভেতরে ঢোকার অনুমতি পান। ভোট প্রদান করার পর প্রযোজক সমিতিতে বসে এফডিসির নিরাপত্তার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শাকিব খান। প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘এফডিসিজুড়ে এত পুলিশ কেন? এফডিসিতে যখন আমি ঢুকছি, আমার সঙ্গে কে, এটা পুলিশকে কৈফিয়ত দিতে হবে কেন। আমার সঙ্গে যেই-ই থাকুক, নিশ্চয়ই তিনি গুরুত্বপূর্ণ কেউ! বিগত নির্বাচনগুলোতে
এমনটি দেখেনি। দেখেছি উৎসবের আমেজ।’ দিনভর ছিল মেঘলা আকাশ। থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। অপু বিশ্বাস, বুবলীসহ বেশ কয়েকজন তারকা সকাল সকাল ভোট দিয়ে ফিরে যান। তবে দুপুরের পর থেকেই তারকাদের ঢল নামে এফডিসিতে। সেই সঙ্গে পুরো এফডিসি লোকারণ্য হয়ে যায়। সেই ঢেউ এফডিসির মূল ফটক ছাড়িয়ে সামনের মূল রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে। মান্না ডিজিটাল কমপ্লেক্সের পাশ দিয়ে শিল্পী সমিতির রাস্তায় জমে ওঠে তারকাদের আড্ডা, সঙ্গে ভোট প্রার্থনা। তারকা প্রার্থী ও তারকা ভোটারদের উপস্থিতিতে রঙিন হয়ে ওঠে ওই রাস্তা। সেই
আড্ডায় ডিপজল, রুবেল, মিশা সওদাগর, মৌসুমি, ফেরদৌস, রিয়াজ, পপি, অমিত হাসান, আমিন খান, ওমর সানী, জায়েদ খান, অরুণা বিশ্বাস, ববি, পরীমনি, ইমন, সাইমন, বাপ্পীসহ অনেক তারকাকে দেখা গেছে। তবে আড্ডার মধ্যে তারকাদের কাছে অনেকটাই বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল তাঁদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের সেলফি তোলা ও অনেক ইউটিউব চ্যানেলের ক্যামেরা। অনেক তারকা অভিযোগ করেছেন, মূল ফটকের ভেতরে–বাইরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শত শত কর্মী, এত এত নিরাপত্তা—এরপরও ভেতরে এত এত মানুষ কোথা থেকে এল। রিয়াজ বলেন,
‘শিল্পীরা শান্তিমতো ভোট দিতে যাবেন, রাস্তায় তো হাঁটারই জায়গা নেই। ধাক্কা মেরে যেন আমাদের ফেলে দিচ্ছে। কে কোথা থেকে সেলফি তুলছেন, চিনি না জানি না, ক্যামেরা হাতে সামনে দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন সাক্ষাৎকার নিতে। শোনা যাচ্ছে, এরা সবাই ইউটিউবের জন্য। কিন্তু এরা তো সাংবাদিক না, কীভাবে ঢুকল ভেতরে।’ এ ব্যাপারে প্রধান নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকেরা আমাদের একটি তালিকা দিয়েছেন, সেই তালিকা অনুযায়ী শতাধিক পাস দেওয়া হয়েছে। এ