
নিউজ ডেস্ক:
সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত ও সমালোচিত জনপ্রিয় বক্তা মিজানুর রহমান আজহারীর ওয়াজ নিষিদ্ধ করা হয়েছে’ ৩৬০ আউলিয়ার দেশ শাহজালাল শাহ পরানের পূণ্যভূমি সিলেটে সময়ের আলোচিত বক্তা মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারীর সব ওয়াজ মাহফিল নিষিদ্ধ করেছে সিলেট জেলা প্রশাসন। গত বুধবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেয়া হয়েছে। বৈঠকে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ছাড়াও আলেম, জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদরা উপস্থিত ছিলেন বলে জানা যায়। আগামী ২০ জানুয়ারি সিলেট কানাইঘাটের মুকিগঞ্জ বাজার জামেয়া মাঠে অনুষ্ঠিতব্য তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে আজহারীকে প্রধান অতিথি করার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হলে প্রশাসন
কানাইঘাটে আজহারীর আগমন স্থগিত করে দেয়া হয়। ওই দিন দরবস্তের হাজারী সেনাগ্রাম মাঠ, ওসমানীনগরসহ ৩টি মাহফিলে বয়ান করার কথা ছিল মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারীর।এমন খবরে কানাইঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলায় চাপা উত্তেজনা দেখা দিলে গত বুধবার বৈঠক ডেকে মিজানুর রহমান আজহারীর আগমন স্থগিত করে দেয় জেলা প্রশাসন।বুধবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে মিজানুর রহমান আজহারীর বিভিন্ন বিতর্কিত ওয়াজ নিয়ে আলোচনা করা হয় বৈঠকে।এরপর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, যেহেতু মিজানুর রহমান আজহারীর বয়ান বিতর্ক তৈরি করছে, সুতরাং সিলেটে আজহারীর অনুষ্ঠিতব্য সব মাহফিলে তিনি উপস্থিত থাকতে পারবেন না।
ভবিষ্যতে তাকে নিয়ে সিলেটে কোনো ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করলে প্রশাসনের অনুমতি নিতে হবে। জেলা প্রশাসক পরিষ্কার করে বলে দিয়েছেন সিলেট জেলায় মিজানুর রহমান আজহারী কে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানোর আগে প্রশাসনের অনুমতি অবশ্যই নিতে হবে।বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সিলেটের জেলা প্রশাসক কাজী এমদাদুল ইসলাম, সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন, জৈন্তাপুর ও কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট থানার ওসি, দারুল উলুম কানাইঘাট মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা আলীম উদ্দিন দুর্লভপুরী, হরিপুর মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা হিলাল আহমদ, হেমু দারুল উলুম মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা জিল্লুর রহমান, দরবস্ত মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা আবু হানিফ,
জৈন্তাপুর লাম্নিগ্রাম মাদ্রাসার মুহতামিম আবদুল জব্বার, হরিপুর মাদ্রাসার শায়খুল হাদিছ মাওলানা নজরুল ইসলাম, জৈন্তাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল আহমদ, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আলা উদ্দিন, যুগ্ম-সম্পাদক ফয়েজ আহমদ বাবর, উপ-দফতর সম্পাদক জাকারিয়া মাহমুদ, কানাইঘাট উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ শাকের, কানাইঘাট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, চতুল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন, ব্যবসায়ী ফারুক আহমদ।কানাইঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ বারিউল করিম বলেন, আজহারীর ব্যাপারে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হলে এই বৈঠক ডাকা হয়। বৈঠকে আজহারীর সিলেট আগমন স্থগিত করা হয়েছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার কানাইঘাট দারুল উলুম কওমি মাদ্রাসায় সভা করে আজহারীকে ‘ইসলামবিরোধী ফতোয়াবাজ’ আখ্যা দিয়ে কানাইঘাটে তাকে প্রতিরোধের ডাক দেয়া হয়েছিল। সভায় সভাপতিত্ব করেন কানাইঘাট দারুল উলুম মাদরাসার মুহতামিম আল্লামা মুহাম্মদ বিন ইদ্রিস।বক্তব্য রাখেন শায়খুল হাদিস আল্লামা আলিমুদ্দীন শায়খে দুর্লভপুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লুৎফুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম, সহ-সভাপতি জামাল উদ্দীন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল্লাহ শাকির, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি
কেএইচ আবদুল্লাহ, আল্লামা শামসুদ্দীন দুর্লভপুরীসহ সিলেটের কয়েকজন শীর্ষ আলেম।অপরদিকে কানাইঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দসহ একটি প্রতিনিধি দল বুধবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বারিউল করিম খান ও থানার ওসি শামসুদ্দোহার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারা কানাইঘাটের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন সিলেটে যেমনি মিজানুর রহমান আজহারী মাহফিল সব ধরনের বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে তেমনি সারাদেশে বন্ধ করে দেওয়া প্রয়োজন তিনি একজন বিতর্কিত বক্তা।
সূত্র যুগান্তর।