
মাহমুদুল হাসান:
টাঙ্গাইল শহরের কোর্ট চত্ত্বর ও ডিস্ট্রিক্টিক গেটে এবং টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলায় সোনালি ব্যাংকের সামনে শীতরে কাপড় ব্যবসায়ীরা নারী, পুরুষ, শিশু, তরুণ-তরুণীদের মধ্যে শীতের কাপড় বিক্রী করছেন।শীতকে সামনে রেখে এখন গরম পোশাক কিনছেন সবাই।পা থেকে মাথা পর্যন্ত শীত নিবারণ করতে গরম কাপড় কেনায় ব্যস্ত মানুষ।
ব্যবসায়ীরা শ্লোগান দিচ্ছে,একটা নিলে আরেকটা ফ্রি দেইখ্যা লন, বাইছ্যা লন, একদাম এক রেট, পাঁচ টাকা, দশ টাকা।’ ‘পঞ্চাশ টাকা- পঞ্চাশ টাকা’। ‘একশ, দেড়শ টাকা।
প্রতিদিনই ভির জমাচ্ছে উচ্চ আয়ের এবং নিম্ন আয়ের মানুষেরা।বিভিন্ন নামি-দামি মার্কেট থেকে বিভিন্ন দামি গরম কাপড় কিনতে পারলেও গরিব ও নিম্ন আয়ের মানুষের একমাত্র ভরসা টাঙ্গাইলের কোর্ট চত্ত্বর, ডিস্ট্রিক্ট ও ভূঞাপুরের হকারদের বিক্রী করা গরম কাপড়।খোলা মাঠে শীতের কাপড়ের মার্কেট গুলো মূলত গরীবের শীতের মার্কেট।তবে এখানে সব ধরনের মানুষই যায় কাপর কিনতে।কোর্ট চত্ত্বর ও ডিস্ট্রিক্টের বা ডিষ্ট্রিক্ট প্লাজা এবং ভূঞাপুরে হকার দোকান হিসেবে পরিচিত।
সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে তাদের এ ব্যবসা।তীব্র শীত আসতে এখনো প্রায় এক মাস বাকি থাকলেও ইতিমধ্যে জমে উঠেছে গরীবের শীতের মার্কেট।
বর্তমানে উচ্চ আয়ের লোকজনেরাও এদের কাছ থেকে কাপড় কিনছেন।এখানে বিভিন্ন শ্রেণির লোকজন কাপড় কিনে থাকেন। কিন্তু এ সব ব্যবসায়ীরা শুধু শীতকে সামনে রেখে কাপড় কেনা-বেচা করে থাকেন। বছরের অন্যান্য সময় এখানে তেমন কেনা-বেচা না হলেও শীতকে সামনে রেখে এখানকার ব্যবসা জমজমাট হয়। এতে তারা ভালোই লাভবান হন।এটা এক প্রকার সিজোনাল ব্যবসা বলা যায়।
কোর্ট চত্বরে ঘুরে দেখা যায়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সংলগ্ন সরকারি পরিত্যক্ত জায়গা ও কোর্ট চত্ত্বর এলাকায় শতাধিক দোকান বসেছে। ক্রেতাদেরও বেশ ভিড়।মহিলা থেকে শুরু করে ছোট বড় সব বয়সের ক্রেতা আছে এখানে।
ভূঞাপুরে হকার দোকান ঘুরে দেখা যায়,ভুঞাপুর সোনালি ব্যাংকের সামনে ফাকা জায়গায় ৩০ টির মতো দোকান বসেছে।দিন দিন ক্রেতা বাড়তেছে বলে জানাযায়।পুরুষ,মহিলা,শিশু সবাই আসে এখানে।
প্রতিদিন প্রতিটি দোকানে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকার বিকিকিনি হয় বলে জানান ব্যবসায়ীরা।এই মার্কেটগুলোতে ৫ টাকা থেকে শুরু করে হাজার টাকা পর্যন্তও শীতের কাপড় পাওয়া যায়।কাপরের বিভিন্ন সাইজ পাওয়া যায়
টাঙ্গাইল জেলা হকার্স লীগ সভাপতি মোঃ বাদশা মিয়া ও সম্পাদক হায়েত আলী আকন্দ জানান, গত বছরের তুলনায় প্রতিটি বেল্টে তাদের গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত দুই থেকে তিন হাজার টাকা। এই অতিরিক্ত টাকা দেয়ার পরও তাদের কিনতে হচ্ছে নিম্নমানের বেল্ট। যা বিক্রী করে মূলধন আর যাতায়াতের খরচই উঠানো কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। তারপরও নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন অল্প টাকায় শীতের কাপড় কিনতে ভিড় করছেন বাজারে।
কাপড় ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান বলেন, গত বছর পুরাতন শীতের কাপড়ের যে বেল্ট চট্টগ্রাম থেকে সর্বনিস্ন ১০ থেকে ১৬ হাজার টাকায় আনা যেত, এ বছর সেই বেল্ট আনতে হচ্ছে সর্বনিম্ন ১৪ থেেক ২০ হাজার টাকায়।বারতি টাকা লাগার কারনে ক্রেতাদেরও বারতি টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে।
ব্যবসায়ী হারুন বলেন, আমরা সাধারণত সোয়েটার, ট্র্যাকশুট, বিভিন্ন ধরনের গরম জামা, মোজা, টুপি, বাচ্চাদের কাপড়, প্যান্ট-কোর্ট, চাদর, কম্বল, ট্রাউজারসহ বিভিন্ন ধরনের শীতের কাপড় বিক্রী করে থাকি।
আগের বছরের তুলনায় দুই থেকে আড়াই হাজার এবং আরো একটু মানসম্মত বেল্টে ৩-৪ হাজার টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বছর বেল্টের দাম বৃদ্ধি পেলেও কাপড়ের মান অন্য বছরের তুলনায় নিম্নমানের। যা ভেঙ্গে বিক্রী করে চালানের টাকা তোলা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।ক্রেতারা মনে করে আমরা বেশি নিচ্ছি।সে বলেন, আমরা চট্টগ্রাম এর আমিন মার্কেট থেকে বেল্ট হিসেবে এইসব শীতের কাপড় নিয়ে আসি। বিভিন্ন ধরনের বেল্ট বিভিন্ন রকমের দাম। বেল্ট ভাঙ্গার পর কাপড়গুলোর একটা গড় মূল্য নির্ধারণ করে আমরা বিক্রী শুরু করি। খরচ বাদে যা থাকে তাতে মোটামুটি ভালোই লাভবান হোতাম।এখন একটু কম লাভ হয়।আমরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছি। এখন ক্রেতার সমাগম কম, তবে শীত আরো বেশি পড়লে ক্রেতার সমাগম আরো বেশি হবে।
সামছুল আলম(ক্রেতা)জানান, অন্যান্য মার্কেটের তুলনায় ডিষ্ট্রিক্ট এর মার্কেটে কম দামে শীতের কাপড় পাওয়া যায়। তাই প্রতিবছর আমার ও পরিবারের সকলের জন্য এখান থেকেই শীতের কাপড় কিনি।এখানকার কাপড় খুবি মান সম্মত।