
নিয়ামুর রশিদ শিহাব, গলাচিপা প্রতিনিধি
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে উপকূলীয় একালায় এখন সেই আগের মতো দেখা মিলে না চিরচেনা শকুনের। প্রকৃতির সুইপার খ্যাত শকুন দেখা যায় না বললেই চলে। এক সময় শকুন দেখা যেত সব জায়গায়। উপকূলের বড় বড় গাছের মগডালে দেখা মিলত পাখিটি। শুধু পটুয়াখালীর গলাচিপায় নয়, সারা বাংলাদেশে এখন শকুন পাখিটির আর দেখা যায় না।বন্য এই প্রাণী পাখি বিশেষজ্ঞরা বলেন, শকুনের জাত রক্ষা করা না গেলে কয়েক বছরের মধ্যে প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাবে আমাদের সেই চেনা শকুন। বাস্তবে আর নয় তখন বই ও ছবি দেখে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের চেনাতে হবে।
প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে থাকে সেই পাখি এখনো কোনোভাবে টিকে আছে সরু প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে টিকে থাকে এই পাখি আগে দেখতাম শকুন মিতু পশুপাখি খেয়ে বেঁচে থাকত ঠোট প্রজাতির শকুন। শকুন মৃত পশু-পাখি খেয়ে পরিবেশ দূষণ থেকে রক্ষা করতো একই সঙ্গে অ্যানথ্রাক্সসহ বিভিন্ন রোগ জীবাণু ছড়ানোর হাত থেকেও আমাদের পরিবেশকে রক্ষা করতো শকুন। এ কারণে একে বলা হয় ‘প্রকৃতির সুইপার’। ২০০ প্রজাতির পাখি হুমকির মধ্যে রয়েছে। গোটা পৃথিবীতে ২৩ প্রজাতির শকুন থাকলেও বাংলাদেশে দেখা যায় মাত্র সাত প্রজাতির। বর্তমানে তাও বিলুপ্ত প্রায়।জানা
গেছে, ৮০ দশকে বাংলাদেশের পটোয়াখালী গলাচিপাসহ দক্ষিনাঞ্চলে নদনদীর চরে দল বেঁধে আসত শকুনের ঝাঁক। এ ছাড়া ১৯৭১ সালের বিভিন্ন সময়ে রামনাবাদ নদে ভেসে আসা লাশের ওপর বসত ধূসর শকুন। মৃত গরু ও বিভন্ন মরা পশু খেয়ে বেঁচে থাকতো এই পাখিমহা আকাশে ছায়া ফেলে ঢানা মেলে চক্কর দিত শকুন-শকুনিরা। শকুন অশুভ তো নয়ই, হিংস্রও নয়। চিল, ঈগল বা বাজপাখির মতো শিকারিও নয়। এটা আমাদের পরিবেশের পরম বন্ধু। মৃত পশু খেয়ে শকুন আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখেন। শকুন কখনোই জীবিত মানুষকে আক্রমণ করেন না।প্রখর
দৃষ্টিশক্তির অধিকারী পাখিটি বটগাছ, কড়ইগাছ, শিমুল, বাঁশঝাড়, দেবদারু গাছে বাসা বানাত। এদের দৃষ্টি এতটাই প্রখর যে, অনেক উঁচু থেকেও এরা মাটি বা পানির ওপরে কি আছে তা দেখতে পায় পানির উপরে থাকা খাবার দেখতে পায়। এ পাখি একসঙ্গে ১৫ থেকে ২০টি ডিম পাড়ে। তিন সপ্তাহ তা দেওয়ার পর বাচ্চা দেয় এই পাখি বাচ্চাফোটানোর পার এর স্বাভাবিক আয়ুষ্কাল ২০ থেকে ২৫ বছর।হয়ে তাকে তিন থেকে চার ফুট উচ্চতা হয় এ পাখি। দেশে ২০০ শ’ প্রজাতির পাখি হুমকির মধ্যে রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে শকুনও। ক্রমাগত কমছে শকুনের সংখ্যা। ১৯৭০ এর দশক থেকে এ
পর্যন্ত শকুন হ্রাসের পরিমাণ ৯৮ শতাংশ।বিশেষজ্ঞদের মতে, মৃত পশুর মাংস শকুনের কোনো ক্ষতি করে না। কিন্তু ডাইক্লোফেনাক দেয়া হয়েছে এমন মৃত পশুর মাংস খেলে কিডনি নষ্ট হয়ে ২-৩ দিনের মধ্যে শকুনের মৃত্যু ঘটে। এ কারণে গত তিন দশকে উপমহাদেশে ৯৭% শকুন মারা গেছে। বর্তমানে শকুন বিলুপ্তি প্রায়। তাই আমাদের উচিত হবে যে কোনো পাখিকে বাঁচানো কোন পাখিই যেন আমাদের থেকে হারিয়ে না যায় গাছ যেমন আমাদের প্রয়োজন অক্সিজেন দেয় পাখিরাও আমাদের পরিবেশকে রক্ষা করে তাই আসুন আমরা পরিবেশকে রক্ষা করার জন্য গাছ লাগাবো এবং পাখিদের কেও বাঁচাবো