
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য প্রফেসর ড. প্রকৌশলী মো: রফিকুল আলম বলেছেন, পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়া সমাজকে আলোকিত করতে জীবনকে উৎসর্গিত করেছিলেন। তাঁর কাছে ভিত্ত-বৈভব নয়, বিজ্ঞানকে মানবতার সেবায় সম্পৃক্ত করাই ছিল তার ব্রত। আমরা যারা বিজ্ঞান মনষ্ক ও বিজ্ঞানের ছাত্র তাদের জন্য ড. ওয়াজেদ মিয়া অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী প্রয়াত পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল সকালে জেলা শিশু একাডেমী মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট চট্টগ্রাম
জেলা আয়োজিত স্মরণসভা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি একথা বলেন। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জামাতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী হওয়া সত্ত্বেও তার মধ্যে বিশেষ কোন অহমিকাবোধ ছিল না। নিজের পেশাগত দায়িত্বকে সবসময় বড় করে দেখতেন। তার কাজের পরিধি ছিল পরমাণু বিজ্ঞান চর্চা। তবে তিনি মানুষের জন্য ভাবতেন এবং মঙ্গল চিন্তা করতেন। এই গুণটি পেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে। তিনি আরো বলেন ড. ওয়াজেদ মিয়া ও আর্ন্তাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ভৌত বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. জামাল নজরুল ইসলাম এবং বিশ্বখ্যাত
বিজ্ঞানী আইনস্টানের সতীর্থ প্রফেসর ড. সত্যেন ভূষ, জগদীশ চন্দ্র বসু ও মেঘনাথ সাহার মত মনিষী এদেশে জন্মগ্রহণ করলেও তাদের কৃর্তিকে ধারণ করতে পারে নি। বিজ্ঞান চর্চা ক্ষেত্রে তাদের কর্ম ও সাধনা ও ধ্যান জ্ঞানকে নিয়ে কাজ করার মত অনেক বড় ক্ষেত্র রয়েছে। অথচ আমরা তা করতে প্রভৃত নই। এটা আমাদের ব্যর্থতা। মুখ্য আলোচকের ভাষণে আইইবি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সম্মানী সম্পাদক ও চসিক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক বলেছেন পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়া ছিলেন আত্মভোলা প্রকৃতির মানুষ। খুব কাছ থেকেই তিনি বঙ্গবন্ধুকে
দেখেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর জীবন দর্শন তাকে প্রভাবিত করেছিল বলেই তিনিও মানবদরদী হয়ে উঠেছিলেন। তিনি আরো বলেন, একজন প্রধানমন্ত্রীর স্বামী হওয়া সত্ত্বেও তিনি সরকারি কোন প্রটোকোল নিতেন না। বরং বিব্রতবোধ করতেন। সহজ সারল্যভরা এই মানসিকতা শুধুমাত্র পতিজনের মধ্যেই থাকে। কারণ তারা সাধারণ তবে চিন্তা ও মননে অসাধারণ। সভাপতির ভাষণে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি অনুপ বিশ্বাস বলেন, ড. এম.এ. ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান, মনস্কতা ও দার্শনিকতা এবং মানবিকতায় ঋদ্ধ ও প্রাজ্ঞ ব্যক্তিত্ব ছিলেন। রাজনীতির সাথে
তাঁর সরাসরি সম্পৃক্ততা ছিল না, কিন্ত আমৃত্যু বঙ্গবন্ধুর জীবন দর্শনকে অন্ত ধারণ করেছেন এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে নিয়েই গবেষণা ধর্মী গ্রন্থও রচনা করেছেন। স্বাগত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম বলেন, ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া তাঁর কর্মের জন্য শুধু আমাদের কাছে নন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে বেঁচে থাকবেন। বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট চট্টগ্রাম জেলার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ব্যাংক কর্মচারী ফেডারেশনের সহ সম্পাদক মাসুদ উদ্দিন হামেদ নওয়াজ’র স ালনায় অনুষ্ঠিত পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার স্মরণ সভায়
আরো বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহ সভাপতি সুমন দেবনাথ, নগর যুবলীগের সদস্য তানভীরুল ইসলাম রিংকু, কালারপোল ওমরা মিয়ার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রহিম চৌধুরী, শিক্ষাবিদ রিংকু ভট্টাচার্য্য, সাংস্কৃতিক সংগঠক নজরুল ইসলাম মোস্তাফিজ, দিলীপ সেন গুপ্ত, সুরিৎ চৌধুরী সাজু, সংস্কৃতিকর্মী মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ, কিশোর হাবিবুর রহমান, মো: এনাম উদ্দিন প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শুরুতেই পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার স্মরণে ও তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং ড. ওয়াজেদ মিয়াকে নিবেদিত করে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী বিজয়ীদের হাতে ক্রেষ্ট ও সনদপত্র তুলে দেন প্রধান অতিথিও আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।