নিউজ ডেস্ক:
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আন্তর্জাতিক ইনকামিং ভয়েস কল থেকে আয় দ্রুতহারেই কমে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে এই খাতে কলরেটের হার ৬৫-৭১ শতাংশ কমিয়ে মিনিটে ০.০০৬ ডলার করার চিন্তা করছে টেলিকম নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি।একটি সূত্র জানা যায়, আন্তর্জাতিক কলের উল্লেখযোগ্য অংশটি ইন্টারনেটভিত্তিক হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার, মেসেঞ্জার, ইমো, স্কাইপ ও উইচ্যাটের মাধ্যমে হয়ে আসছে। এতে ইন্টারনেটের ডেটা খরচের বাইরে কোন অর্থ লাগে না বললেই চলে।বিভিন্ন অ্যাপস দিয়ে দেশের বাইরে থেকে বা দেশের ভিতর থেকে কথা বার্তার আদান-প্রদান হয়ে আচ্ছে সেজন্য প্রবাসীদের সুবিধার্থে কলরেট কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিটিআরসি টেলিকম নিয়ন্ত্রণ সংস্থা।
এসব অ্যাপলিকেশন ব্যবহারে প্রবাসীদের উৎসাহিত করতে প্রচার চালাচ্ছে মোবাইল ফোন অপারেটররাও। যে কারণে প্রবাসীদের স্বজনরা এগুলো ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে উঠছেন।বিটিআরসির চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেন, আইজিডব্লিউ অপারেটরদের ফোরামের (আইওএফ) একটি প্রস্তাবের পর সম্প্রতি এক বৈঠকে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন।বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক ভয়েস কল কমিয়ে দেয়ার জন্য ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে (আইজিডব্লিউ) অপারেটররা দায়ী বলে মনে করা হচ্ছে।ইন্টারন্যাশনাল লং ডিসট্যান্স টেলিকমিউনিকেশনন্স সার্ভিসেস (এলডিটিএস) পলিসি- ২০০৭ এর আলোকে সব মোবাইল অপারেটরকে আন্তর্জাতিক কল আদান-প্রদান অবশ্যই আইজিডব্লিউ অপারেটরের মাধ্যমে
করতে হবে।বর্তমানে দিনে বৈধ ভয়েস কল কমে দুই কোটি মিনিটে পরিণত হয়েছে। গত কয়েক বছর আগেও এই সংখ্যাটি ছিল ১০ কোটির মতো। বছর পাচেক আগেও সরকারি আয়ের অন্যতম উৎস ছিল আন্তর্জাতিক কল টার্মিনেশন। কিন্তু সম্প্রতি সেটা উল্লেখযোগ্যহারে কমে গেছে।এটির জন্য কিছু বিটিআরসির কর্মকর্তাকে দায়ী করছেন তিনি।বিটিআরসির কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্যানুসারে, ২০১৪-১৫ রাজস্ব বছরেও এরকম কল থেকে দুই হাজার ৭৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা আয় করেছিল সরকার। সেটা কমে এক হাজার ৩৮৭ কোটি ৩৭ লাখ, ৯৬৭ কোটি ৬৩ লাখ ও ৯০০ কোটি ৩৫ লাখ টাকা হয়ে যায়। সর্বশেষ সেটা মাত্র কয়েক শ কোটি টাকায় রূপ নিয়েছে।সূত্র জানায়, সরকার কিংবা নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনের বাইরে ইনকামিং কলের হার বাড়াতে
একটি চক্র গঠন করেছে আইজিডব্লিউ। এতে বাংলাদেশে কল করাটা খরুচে হয়ে পড়েছে।আইওএফের প্রধান পরিচালনা কর্মকর্তা মুশফিক মঞ্জুর বলেন, স্মার্টফোন ও মোবাইলে ব্রডব্যান্ডের আওতা বাড়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিনামূল্যের অ্যাপলিকেশন ব্যবহারে কলের সংখ্যা বাংলাদেশ বাড়বে।এতে আন্তর্জাতিক ইনকামিং কল থেকে আয় কমে যাবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। অন্যান্য পরিণত বাজারেও এটা দেখা গেছে।টাকা দিয়ে কল করার পরিষেবা পুরোপুরি নিঃশেষ করে দিতে পারবে না ইন্টারনেটভিত্তিক ওটিটি (ওভার-দ্য-টপ) কল। তবে বড় একটা অংশ কমে যাবে।
মুশফিক মঞ্জুর বলেন, দাম যতদিন প্রতিযোগিতাপূর্ণ থাকবে, ততদিন ভালো মানের জন্য হলেও অর্থ দিয়ে কল করার পরিষেবা চালু থাকবে।বর্তমানে বাংলাদেশে ২৪টি আইজিডব্লিউ অপারেটর রয়েছে। অর্থ পরিশোধ না করায় ছয়টির অনুমোদন বাতিল করা হয়েছে।তিনি এ সময় আরো বলেন প্রবাসীদের পরিবারেরা” কম পয়সা খরচ করে যেন’ তারা কথা বলতে পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে বিটিআরসি’ এবং সরকারকে, না হলে খুব শীঘ্রই বন্ধ হয়ে যেতে পারে বিটিআরসির টেলিকম নিয়ন্ত্রণ সংস্থা প্রকল্পটি।