ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা সেনা কর্মকর্তার বাড়িতে ডাকাতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছে মহাকালী সোনাগাজী মডেল থানায়।
ফেনীর সোনাগাজীতে এক সেনা কর্মকর্তার বাড়িতে ডাকাতি মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল বারেক ওরফে আরু মিয়াকে (৪৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
বুধবার উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
আবদুল বারেক ওরফে আরু মিয়া উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। পুলিশের দাবি, আরু মিয়া আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তিনি ওই এলাকার মধ্যম আহম্মদপুর গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এসআই মো. কবির হোসেন বলেন, বুধবার বিকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে আমিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তার বিরুদ্ধে সোনাগাজী মডেল থানায় ডাকাতি মামলাসহ অস্ত্র, মাদক, চাঁদাবাজি ও অপহরণের অভিযোগে অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে। তবে আরও একটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে তার।
সিলেটে কর্মরত সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট মোঃ ইকবাল হোসেন বলেন, ২০১৮ সালের ১১ জুলাই দিবাগত গভীর রাতে তার বাড়ির কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙে ১৫-২০ জনের মুখোশধারী সশস্ত্র ডাকাতদল ঘরে ঢুকে পরিবারের সবাইকে বেঁধে মারধর করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে।
ওই সময় সশস্ত্র ডাকাতদল ৮ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ ৮০ হাজার টাকা ও তিনটি মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান মালামাল লুটে নেয়। ২০১৮ সালের ১৩ জুলাই ওই সেনা কর্মকর্তার ভাই মো. শাহপরান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জন সশস্ত্র ডাকাত দলের বিরুদ্ধে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
এই ঘটনায় সর্বশেষ আরু মিয়াসহ মোট ১৪ জন আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তন্মধ্যে ৩ জন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। একজন ডাকাতের দেয়া তথ্যমতে এর আগে পুলিশ একটি শাটার গান, তিন রাউন্ড কার্তুজ, ১২ হাজার টাকা, একটি স্বর্ণের চেইন ও তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে।
আদালতে ১৬৪ ধারা মোতাবেক একজন ডাকাতের দেয়া স্বীকারোক্তিতে উঠে আসে আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল বারেক আরু মিয়ার নাম। মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআইকে) হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে পিবিআইয়ের এসআই মো. কবির হোসেন মামলাটি তদন্ত করছেন।
সেনাকর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন সোনাগাজী উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের চরকৃষ্ণজয় গ্রামের আকরাম আলী ভূঞা বাড়ির আবুল কাসেমের ছেলে। তার আরও তিন ভাই সৌদি আরবে থাকেন।
আমিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক জহিরুল আলম জহির বলেন, আবদুল বারেক আরু মিয়া তার ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। মামলাটি যেহেতু তদন্তাধীন রয়েছে, সেহেতু এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাচ্ছি না।