
ছাতক প্রতিনিধি:
বিশ্বব্যাপী প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসে আতঙ্কে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এবং সুনামগঞ্জজুড়ে দুইদিনের টানা অতিবৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি আর প্রবল বজ্রপাতে দিশেহারা মানুষ। বিশেষত কৃষক। গেল বছর অকাল বন্যায় হাওরডুবির পর এবারও যদি সোনার ফসল ঘরে না ওঠে তবে যে কৃষক কূলকে অকূলে ভাসতে হবে।বিশেষত, করোনা ভাইরাসে শ্রমিক সঙ্কট’
বজ্রপাত আতঙ্কে শ্রমিকরা বোরো পাকা ধান নিয়ে বিপাকে কৃষক এই সময়ে পাকা ধান কাটায় কৃষক স্বাভাবিক ভাবেই মাঠে ব্যস্ত থাকে।
কিন্তু মহামারি করোনা ভাইরাস ও বজ্রপাতের ভয়ে এখন কৃষকও কাস্তে হাতে মাঠে যেতে চাচ্ছেন না। জেনেশুনে কে নিতে চায় জীবনের ঝুঁকি। এমন পরিস্থিতিতে সোনার ধান নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে কৃষক। হাওরে এরই মধ্যে জলাবদ্ধতায় তলিয়ে যাচ্ছে কৃষকদের পাকা ধান। সেই ধান কাটতেও পারছেন না কৃষকরা। এর মধ্যে শুরু হয়েছে বজ্রপাতের আতঙ্ক। করোনা ভাইরাসের কারণে শ্রমিক সংকট তো রয়েছেই। অতিবৃষ্টি বর্ষনের কারণে জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে পাকা ধান কেটে ঘরে তুলতে গিয়ে নতুন করে দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন কৃষকরা। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে জলাবদ্ধতা আরো বাড়বে। তখন জমির ধান জমিতেই নষ্ট হয়ে যাবে বলে জানান কৃষকরা।
সরেজমিন দক্ষিণ খুরমা ইউনিয়নের জল্লার হাওরের কৃষকরা বলছেন, এখন হাওরে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। জল্লারহাওরের কৃষক রিপন আহমদ জানান, দুই’তিন দিনের অতিবৃষ্টিতে হাওরের অন্তত ১০টি গ্রামের কৃষকের পাকা ধানের জমিতে হাটু পানি রয়েছে। আরো বৃষ্টি হলে সর্বনাশ হয়ে যাবে! কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, হাওরবাসীর কাছে এখন আতঙ্কের আরেক নাম করোনাভাইরাস ও বজ্রপাত আজ সুনামগঞ্জের বিভিন্ন জায়গায় বজ্রপাতে ৪জনের প্রাণহানী হয়েছে।
আর বৃষ্টির কারণে হাওরের কিছু কিছু জায়গায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় স্থবির হয়ে পড়েছে ধান কাটা। শ্রমিক সংকটতো রয়েছেই। গতকাল শুক্রবার শনিবারে উপজেলার বিভিন্ন হাওরে গিয়ে দেখা যায় ধান কাটার শ্রমিক নেই বললেই চলে।হাওরজুড়ে হা-হুতাশ আর কৃষকের মুখে শঙ্কার আর্তি। গত বছরের মতো এবারও ফসলহানি হলে কোথায় যাবে তারা, কি খেয়ে বাঁচবে পরিবার এমন ভাবনায় হাজার হাজার কৃষকের এখন কপালে ভাঁজ। সোনার ধান কেটে ঘরে তুলতে দুর্ভোগে পড়েছেন তারা।
তার প্রধান কারণ, করোনা ভাইরাসে শ্রমিক সঙ্কট উপর্যুপরি বজ্রপাত। শ্রমিকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ধান কাটতে যেতে চাচ্ছেন না। ফলে ভূমির মালিকরাও অসহায়। চোখের সামনে স্বপ্নের সোনার ধান নষ্ট হচ্ছে। কিন্তু কারও যেন কিছুই করার নেই। কিন্তু যে যাই বলুক, যেভাবেই যত পরামর্শ দেয়া হোক- এবার বাঁচার তাগিদে অন্ধকারে দাঁড়িয়েও আলোর পথ খুঁজছে কৃষক। অন্তত বউ বাচ্ছা পরিবারের সবাই কে নিয়ে দু-বেলা দু-মুঠো ভাতের নিশ্চয়তায় হাওরের পানে নিশ্চল, নিশ্চুপ তাকিয়ে আছে হাজারো চক্ষুজোড়া ঘরে সোনার ফসল তোলার অন্তিম আশায়।