নিউজ ডেস্কঃ
বিশ্বব্যাপী মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে, সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। সিলেটের পুরাতন হাসপাতালের একটি। সদর হাসপাতাল নামে পরিচিত এটি। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল স্থাপনের আগে এই হাসপাতালই ছিলো সিলেটের মানুষের চিকিৎসকার একমাত্র আশ্রয়স্থল। জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এরশাদের শাসনামলে ওসমানী হাসপাতাল প্রতিষ্টা হওয়ার পর এটির গুরুত্ব ও কদর দুটোই কমেছে। তবে- চালু ছিলো চিকিৎসা ব্যবস্থা। রোগির সংখ্যা থাকতো খুব কম। অনেকেই ভুলতে বসেছিলেন এই হাসপাতালের নামটি। কিন্তু এবার বিশ্বব্যাপী মহামারী করোনা ভাইরাস এই হাসপাতালকে ফের পরিচিত করে তোলেছে সিলেটের মানুষের কাছে।
এখন সিলেটের মানুষের সবার চোখ এই হাসপাতালের দিকে। কারণ- সিলেটের করোনা ভাইরাস আক্রান্ত মানুষের একমাত্র ভরসাস্থল এ হাসপাতাল। প্রতিদিনের খবরের কেন্দ্রবিন্দু এ হাসপাতালের। সিলেট স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা অনেক যাচাই-বাছাইয়ের পর এই হাসপাতালকেই করোনা ভাইরাসের রোগীদের আইসোলেশনের জন্য প্রস্তুত করেন। ফলে এখন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত ও সন্দেহে থাকা রোগিরাই এ হাসপাতালের বাসিন্দা। প্রতিদিনই করোনা ভাইরাস রোগি বাড়ছে এ হাসপাতালে। এখন বাড়তে বাড়তে ১৩ জনে এসে পৌছেছেন। করোনা ভাইরাস সন্দেহে ভর্তি রয়েছেন আরো ১২ জন। রোগি, বাড়ছে ব্যস্ততাও। সিলেটের করোনা ভাইরাসের জন্য নির্ধারিত এ হাসপাতাল বলতে গেলে ‘মান্দাতার আমলের’।
উন্নত প্রযুক্তির কোনো ছোঁয়া নেই এ হাসপাতালে। কেবিন, ওয়ার্ড সবই রয়েছে। পুরাতন হওয়ার কারণে রোগিরা তেমন স্বাচ্ছন্দবোধ করেন না বলে রোগীর স্বজনদের অভিযোগ। এরপরও ওই হাসপাতালেই নতুন করে প্রযুক্তি ছোয়া লাগানো হচ্ছে। পররাস্ট্রমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় হাসপাতালে প্রস্তুত করা হযচ্ছে ১১টি আইসিইউ বেড। ইতিমধ্যে একটি ওয়ার্ডকেই আইসিইউ ওয়ার্ড করা হয়েছে। রয়েছে সিলিন্ডার দিয়ে অক্সিজেনের ব্যবস্থা। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন- সিলেটে সরকারী ভাবে করোনা চিকিৎসকার জন্য শামসুদ্দিন হাসপাতাল ছাড়া বিকল্প কিছু ছিলো না। এ কারনে তারা এই হাসপাতালকে আইসোলেশনের জন্য প্রস্তুত করা হয়।
ওসমানীতে করা হলে সাধারন চিকিৎসা ব্যবসস্থায় ব্যাঘাত ঘটতো বলে জানান তারা। শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক সুশান্ত কুমার মহাপাত্র জানিয়েছেন- তার হাসপাতালে ১০০টি বেড ছিলো। এখন হয়তো ১০-১২টির মতো বেড কমতে পারে। এর কারন- আইসিইউ সাপোর্টের জন্য একটি ওয়ার্ড পুরোটাই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান- তার হাসপাতালে রোগি বাড়ছে। এখন প্রায় ১৩ জনের মতো করোনা আক্রান্ত রোগি রয়েছেন। করোনা সন্দেহে রয়েছেন আরো ১২ জন। তবে- ভর্তি থাকা কোনো করোনা রোগির জন্য এখনো আইসিইউ সাপোর্ট প্রয়োজন পড়েনি। প্রতিদিন অক্সিজেন লাগছে। ২-৩ জন রোগি অক্সিজেনের সাপোর্ট নিচ্ছেন।
করোনা রোগিদের চিকিৎসা দিলেও এখনো নিজেরা বাসায় থেকেই হাসপাতালে এসে দায়িত্ব পালন করছেন চিকিৎসক, নার্স এবং সংশ্লিষ্টরা। এখনো স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে এ ব্যাপারে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এ কারণে সিলেটে কোভিড-১৯ করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ২টি হোটেলের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন বস্ত্র ও পাট সচিব লোকমান হোসেন মিয়া। আজ মঙ্গলবার দুপুরে সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসা ও সার্বিক প্রস্তুতি দেখতে এসে তিনি এ নির্দেশ দেন। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ ও ত্রাণ কার্যের সমন্বয়ে সিলেট জেলার দায়িত্বে রয়েছেন পাট সচিব লোকমান হোসেন মিয়া।