
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
সৌদি আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আজ রবিবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে। এবারের ঈদ উদযাপনে পড়েছে করোনার ছায়া। এ ভাইরাস থেকে নিরাপদ থাকতে সুরক্ষা ও সামাজিক দূরত্বের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে অন্য রকমভাবে উদ্যাপন করা হয়েছে এবারের ঈদ।অনেক দেশে করোনা ভাইরাস ঠেকাতে চলমান লকডাউনের মধ্যেই ঈদ উদ্যাপন করা হয়েছে। আবার করোনা ভাইরাস সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও কোনো কোনো দেশে বিধি–নিষেধ শিথিল করে দিয়েছে।
ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা এক মাসের সিয়াম সাধনার পর ঈদুল ফিতর উদযাপন করে। ঈদের দিন সকালে তাঁরা খুতবায় অংশ নেন, জামায়াতে নামাজ আদায় করেন, নামাজ শেষে হাসিমুখে পরস্পর কোলাকুলি করেন। ঈদ উপলক্ষে ছোট–বড় সবাই নতুন পোশাক পরে। বাড়ি বাড়ি রান্না হয় মজাদার সব খাবার। ধনী–গরিব নির্বিশেষে সবাই এই উৎসবে শামিল হয়।কিন্তু এবারের পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন। বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়েই চলছে। করোনা ভাইরাস ঠেকাতে অনেক দেশেই লকডাউন চলছে। পবিত্র রমজান মাসজুড়ে করোনার বিধিনিষেধের মধ্যেই মুসলমানেরা সিয়াম সাধনা করেছেন। বিভিন্ন দেশে ঈদুল ফিতরের উৎসবেও কম–বেশি বিধিনিষেধ থাকছে।
সৌদি আরব, মিসর, তুরস্ক, সিরিয়া করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ঈদে গা ঘেঁষে জামাতে নামাজ আদায়সহ গণজমায়েতের মতো ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা নিষিদ্ধ করেছে সরকার।সৌদি আরবে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধির পরিপ্রক্ষিতে গতকাল শনিবার থেকে ৫ দিনের কারফিউ শুরু হয়েছে। দিন–রাতজুড়ে এই কারফিউ চলবে। গতকাল জারি করা সৌদির রাজকীয় ডিক্রিতে বলা হয়েছে, মক্কা ও মদিনার দুটি পবিত্র মসজিদে মুসল্লি ছাড়াই ঈদের নামাজ হবে। জেরুজালেমের পবিত্র আল আকসা মসজিদ ঈদের পর মুসল্লিদের জন্য খুলে দেওয়া হবে। লেবাননের সুন্নি ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, শুক্রবারের জুমার নামাজের জন্য কেবল মসজিদ খোলা হবে।
মসজিদে প্রবেশের আগে মুসল্লিদের শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ করা হবে। স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে।ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া ও আফগানিস্তান ঈদের কেনাকাটা উপলক্ষে ভিড় লক্ষ করা যায়। এ সময় করোনা ভাইরাসের স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হয়।যদিও ইউরোপ–আমেরিকার চেয়ে এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ–প্রাণহানি কম। তবে এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বাড়ছে। ইরান তাদের নাগরিকদের ঈদের সময় ভ্রমণ এড়িয়ে চলার আহ্বান জানিয়েছেন।
করোনা ভাইরাস ব্যাপক সংক্রমণের মুখে গত মার্চে ইরানে নানা ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ জারি করে। তবে সম্প্রতি এই বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে। ইরানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে নতুন করে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ঢেউ আসুক, তা তাঁরা চান না। তাই এ ব্যাপারে জনগণকে সতর্ক করেছেন তিনি। করোনা ভাইরাস–সংক্রমিত মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশেও ঈদ উদযাপনে সতর্কতা অনুসরণ করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে এবারের ঈদ উৎসবজুড়ে থাকছে করোনা ভাইরাসের কালো ছায়া।