
নিউজ ডেস্কঃ
সিলেট বিভাগের চারটি জেলায় পুলিশ সদস্যসহ গত ২৪ ঘন্টায় আরো ৩৩ জন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছে, সিলেট বিভাগে নতুন করে আরও ৩৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ১৮ জনই সিলেট জেলার। এছাড়া সুনামগঞ্জ জেলার ৬ জন, হবিগঞ্জের ৩ জন ও মৌলভীবাজার জেলায় ৬ জন নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছে ৪ জন পুলিশ সদস্য ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর ব্যক্তিগত সহকারীও আছেন এর তালিকায়।
গতকাল শনিবার (২৩) রাতে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে স্থাপিত পিসিআর ল্যাবে ১৮০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৮ জনের পজিটিভ রিপোর্ট আসে। আর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ল্যাবে ৯১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে সুনামগঞ্জ জেলার পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৬ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।জানা যায়,গতকাল শনিবার শাবিপ্রবির পিসিআর ল্যাবে ১০২ জনের নমুনা জমা হয়। এর মধ্যে ৯১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
এই ৯১ জনের মধ্যে ৬ জনের করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। বাকি ১১ জনের নমুনা নষ্ট হয়ে যায়। সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে ১৮ জনের করোনাভাইরাস রিপোর্ট করোনা পজিটিভ আসার কথা নিশ্চিত করেছেন ওসমানী হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায়।তিনি বলেন, নতুন আক্রান্তদের সকলেই সিলেট জেলার বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। এর মধ্যে গোলাপগঞ্জ উপজেলায় ১ জন পুলিশ সদস্যসহ নতুন করে আরও ৫ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে।
এদিকে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ১ পুলিশ সদস্য করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় তার সংস্পর্শে আসা আরও ৩ জন পুলিশ সদস্যকে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মিজানুর রহমান।গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মনিস্বর চৌধুরী জানান, করোনা আক্রান্ত এই ৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করে কয়েকদিন আগে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়েছিল। শনিবার রাতে তাদের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। ইতোমধ্যে আক্রান্তদের বাড়ি লকডাউনের মধ্যে রয়েছে এবং পুলিশ সদস্যের বাসার সবার নমুনা সংগ্রহ করা হবে।এছাড়া বিশ্বনাথ থানা পুলিশের এসআই ইমরুল কবিরসহ ২ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
আনছারুল হক নামে ৩০ বছর বয়সী অপরজন হচ্ছেন মৎস্যজীবী। তিনি উপজেলার লামাকাজি ইউনিয়নের মির্জারগাঁওয়ের বাসিন্দা। এনিয়ে বিশ্বনাথ থানার নয় জন এসআই, ১ জন টিএসআই, চারজন এএসআই, এবং ১৩ জন কনস্টেবলসহ মোট ২৭ জন পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচও) ডা. আব্দুর রহমান মুসাসহ এ পর্যন্ত বিশ্বনাথের মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৩ জন।
এছাড়াও সদর উপজেলার ৬ জন, জকিগঞ্জের তিনজন, জৈন্তাপুরের একজন ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় একজন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। একইদিন ঢাকায় করা পরীক্ষায় সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জে ৩ জন ও মৌলভীবাজার জেলার আরও ৫ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়।স্বাস্থ্য বিভাগ সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সিলেট বিভাগে এ পর্যন্ত মোট করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৩৫ জন। এর মধ্যে সিলেট জেলায় ২৯২ জন, সুনামগঞ্জে ৯৫ জন, হবিগঞ্জে ১৬২ জন ও মৌলভীবাজারে ৯৪৫জন। এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১২ জন আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ১৫৯ জন। আর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১৭৭ জন।