চলমান করোনা পরিস্থিতি দিনের পর দিন আরো অবনতি হচ্ছে। বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। এ নিয়ে আক্রান্তের দিক দিয়ে আমরা আবার চীনকেও ছাড়িয়ে গিয়েছি। আগে টেলিভিশনে খেলাধুলার স্কোর দেখতাম, কে কতো রান করেছে, কে কতো উইকেট পাইছে এবং কে কতো গোল করেছে, কিন্তু প্রায় ৩ মাস ধরে শুধু মৃত্যুর স্কোর দেখছি টেলিভিশনে। কখনো ভাবিনি এমন হতাশাজনক এবং কষ্টদায়ক স্কোর দেখতে হবে আমাদের।
অনেকের প্রিয়জন হারিয়ে যাচ্ছে এই মৃত্যু মিছিলে যোগ হচ্ছে তাদের রেকর্ড এই কষ্টদায়ক স্কোরবোর্ডে। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে টিভির স্ক্রিনে দেখি সেই স্কোরবোর্ড কোন দেশে কতজন মারা গেছে। আর বেলা আড়াইটা হলে নিজের দেশের আক্রান্তের আর মৃতের স্কোরবোর্ডে আরো নতুন নতুন রেকর্ড যোগ হয়। জানিনা আরো কতো সপ্তাহ, কতো মাস আমাদের এমন কষ্টকর স্কোরবোর্ডটি দেখে যেতে হবে টেলিভিশনের পর্দায়।
আগে টেলিভিশনে ব্রেকিং নিউজ দেখতাম মাঝেমধ্যে অথবা দেশে কোনো বড় ঘটনা ঘটলে কিন্তু এখন প্রতিদিন ব্রেকিং নিউজ। প্রতিদিন আক্রান্তের স্কোরের নিউজ মৃতের স্কোরের নিউজ। কি এক কঠিন সময় পার করছি আমরা, যেনো কেউ আপন নয় এই পৃথিবীতে।কেউ ছোঁয়ে দেখছে না, কেউ পাশে আসছে না, জীবিত থাকা অবস্থায় যেমন অবহেলা মৃত্যুর পরেও ঠিক সমান অবহেলা। শেষ বিদায়ের সময় আপন কেউ পাশে থাকে না, থাকে শুধু প্রশাসনের লোকজন। জানিনা এই কঠিন সময় থেকে কখন মুক্তি পাবো!
রাতের পর যেমন দিন আসে ঠিক তেমনি দুঃখের পর আসে সুখ। ঠিক তেমনি এই কঠিন সময়ের একদিন অবসান ঘটবে আবারো স্বাভাবিক হবে পৃথিবী। আবারো ক্যাম্পাসে ভীড় করবে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা, আবারো তারা নতুন নতুন স্বপ্নে সাজাবে তাদের জীবন। আবারো আড্ডা দিবে ক্যাফেতে বা কফি হাউজে। সেদিন থাকবে না সীমিত আকারে কোনো শব্দ সবকিছু হবে আগের মতো। ঠিক সেদিন থাকবে না টেলিভিশনে এই কষ্টদায়ক স্কোরবোর্ডটিও। সেই অপেক্ষায় আছি আমি এবং পৃথিবীর সকল মানুষ।
আল ওমায়ের সাকিব|লেখক,অনলাইন এক্টিভিস্ট।