
লেখক,
আরিফুল ইসলাম সুমন ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
মানুষ বড়-ই অদ্ভুত জীব ! প্রতিটি মুহূর্তে মানুষ তার রঙ বদলায়। সময়ে সময়ে সাপের মতো খোলস পাল্টায়।
সকল প্রশংসা মহান রাব্বুল আলামীনের জন্য, যিনি মানুষকে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে তৈরি করলেন। সৃষ্টি করলেন এই নিখিলবিশ্ব। বিছিয়ে দিলেন ‘মায়ার চাদর’। সৃষ্টিকূলের মধ্যে মানুষ হলো সবচেয়ে আকর্ষণীয় এবং সুন্দরতম প্রাণী। সেজন্যই মানুষ হলো ‘মায়ার প্রতিমা’। মহান সৃষ্টিকর্তা মানুষের ভেতর দিলেন বিবেকবোধ। আর সঙ্গে দিলেন ‘আল কুরআন’। যিনি মানুষকে এত সুন্দর করে, আশ্চর্য রকমভাবে সৃষ্টি করেছেন, জানি না, তিনি কতইনা সুন্দর।
মানুষ হলো অন্যরকম এক রহস্যের আঁধার। মানুষের জীবন আশ্চর্যে ভরপুর। কখনও হাসি-গান-আনন্দ ছড়ায়, কখনও দুঃখের সাগরে হাবুডুবু খায়।
এই জীবনে কত মানুষ আমরা দেখি। কত মানুষের সাথে আমাদের পরিচয় ঘটল, ঘটছে, আরো ঘটবে। কত মানুষের সাথে ঘনিষ্ঠতা হলো। আবার শেষমেষ একটা তিক্ত পরিসমাপ্তিও ঘটে। ছোট্ট এই জীবনে কত মানুষ আমাদের কাছ থেকে হারিয়ে গেল। সে যে গেল আর ফিরে এলো না। হারিয়ে গেল সারাজীবনের তরে।
প্রত্যেক মানুষই আলাদা প্রকৃতির। আলাদা চেহারার, আলাদা আচরণের, আলাদা বৈশিষ্ট্যের, আলাদা স্বভাবের। একজনের চেহারার সাথে আরেকজনের মিল নেই। একজনের স্বভাবের সাথে অন্যজনের মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। তবে সামান্য মিল থাকলেও থাকতে পারে পুরোপুরি মিল কিছুতেই পাওয়া যায় না। মানুষের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, সে নিজে যা নয় তা হতে চায়। অপরকে অনুসরণ করে চলে।
মানুষ বড় প্রতিশোধপরায়ণ। মানুষ প্রতিশোধ নিতে ভালোবাসে। অপরের ক্ষতি করে মানুষ আত্মপ্রসাদ লাভ করে। অপরের বাকস্বাধীনতাকে হরণ করে মানুষ তৃপ্তির হাসি হাসে। মানুষ এ কথা একবারও ভাবে না যে, মানুষ মাত্রই ভুল হতে পারে। সে নিজেও তো ভুলের ঊর্ধ্বে নয়, তবুও সে অপরেরর ভুলকে কিছুতেই ক্ষমার চোখে দেখে না। সে নিজে খারাপ হয়েও অপরেরর নিকট থেকে ভালো কিছুর আশা করে। এটা মানুষের চিরন্তণ এক স্বভাব। কোনো জুয়াড়ি চায় না যে তার ছোট ভাইটি কিংবা তার ছেলেটি জুয়াড়ি হোক। কোনো গাঁজাখোর চায় না তার ভাইটি কিংবা ছেলেটি জুয়াড়ি হোক। কারণ সে জানে, মদ্যপান, জুয়াখেলা কিংবা গাঁজা সেবন স্বাস্থ্য এবং কর্ম উদ্যমের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
মানুষের ভাবনাগুলো বড়ই অদ্ভুত প্রকৃতির। সুখের মুহূর্তগুলোর কথা স্বরণ করে সেভাবে, আহ! যদি সবকিছু পাল্টে দেয়া যেত। যদি অতীতের সোনালি দিনগুলো আবার ফিরে পাওয়া যেত। কিন্তু মানুষ এ কথা জানে না যে, আসলে মানুষ কিছুই পাল্টাতে পারে না, পাল্টাতে পারবে না। না অতীত না ভবিষ্যৎ। এসব ভাবা আর কল্পনার ফানুস ওড়ানো একই কথা। তবুও মানুষ ভাবে আর আফসোস করে সময় কাটায়। এটাই মানুষের ভাগ্য এরই নাম নিয়তি যা মানুষ কিছুতেই ওলট-পালট করতে পারবে না; শুধু চেয়ে চেয়ে দেখবে আর বলবে, এটা ওভাবে না হয়ে এভাবে হলে ভালো হতো।