
মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর বৃহস্পতিবারও গুলি চালিয়েছে সরকারি নিরাপত্তা বাহিনী। এতে অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন। স্থানীয় গণমাধ্যম ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।এক আন্দোলনকারী জানিয়েছেন, মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলীয় শহর মায়েইংয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ছয় বিক্ষোভকারী মারা গেছেন। তাদের মৃত্যুর বিষয়টি স্থানীয় এক স্বাস্থ্যকর্মী নিশ্চিত করেছেন।৩১ বছর বয়সী ওই প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করছিলাম।
আমার বিশ্বাস হচ্ছে না তারা (নিরাপত্তা বাহিনী) এটা করতে পারল।এদিন আরেক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন দেশটির বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনের উত্তর দাগোন জেলায়। ফেসবুকে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, রাস্তায় এক লোক উপুড় হয়ে পড়ে রয়েছেন এবং তার মাথার ক্ষত থেকে রক্ত বের হচ্ছে।পরামর্শক সংস্থা অ্যাসিসটেন্স ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারসের তথ্যমতে, মিয়ানমারে বৃহস্পতিবারের আগপর্যন্ত জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে ৬০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, গ্রেফতার হয়েছেন দুই হাজারের বেশি।
এদিকে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল মিয়ানমারে গত কয়েকদিনের গণবিক্ষোভের বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও বিশ্লেষণ করে বলেছে, সামরিক বাহিনী যেভাবে বিক্ষোভ ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তাতে মনে হচ্ছে তারা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ‘হত্যার নেশায়’ মেতেছে।গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী।এর পরপরই সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে নেমে আসে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
তারা শুরু থেকেই শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করে আসছে।কিন্তু গত কয়েকদিনে বিক্ষোভ দমনে কঠোর অবস্থান নিতে দেখা গেছে জান্তা সরকারকে। নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের ওপর জলকামান, রাবার বুলেটের পাশাপাশি তাজা গুলি ছুড়ছে।বৃহস্পতিবার অ্যামনেস্টির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫৫টি ভিডিও ক্লিপ যাচাই করে দেখা গেছে, গত কয়েকদিনে যতজন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন, সেসব ঘটনা ছিল সামরিক বাহিনীর পরিকল্পিত এবং পূর্বনির্ধারিত হত্যাকাণ্ড।