
মুহাম্মদ ইমদাদ সাকিব। অজানা বাংলাদেশ
“স্ট্যান লি” এটি শুধুমাত্র একটি নাম নয় বরং এই নামের সাথে জুড়ে আছে অসংখ্য সুপার হিরোদের বেড়ে উঠার গল্প, কমিকস ও হলিউড মুভির স্রষ্টাদের রাজত্বের গল্প, তারুণ্যের মুখে হাসি ফুটানোর গল্প ও এই গোটা বিশ্বের মানুষ হতে বুকভরা ভালবাসা অর্জনের গল্প।
হা! “স্ট্যান লি” কে পৃথিবী কমিকসের স্রষ্টা হিসেবেই চিনে, তিনি এক সময়ে কমিকস লিখতেন এবং তা কেবল মাত্র ছাপাখানায় সীমাবদ্ধ ছিল কিন্তু এরপর তিনি আস্তে আস্তে তাঁর কমিকসে প্রাণ দান করতে শুরু করেন এবং তার হাত ধরেই আসতে শুরু করল “ক্যাপ্টেন আমেরিকা, ব্ল্যাক প্যান্থার, থর, ফ্যান্টাস্টিক ফোর, অ্যাভেঞ্জারস, আয়রন ম্যান, দ্য ইনক্রেডিবল হাল্ক, এক্স ম্যান, ডেয়ারডেভিল ও স্পাইডার ম্যান” এর মত বিশ্ববিখ্যাত সব চলচিত্র।
তাঁর এই অর্জন কেবল মাত্র একদিনের নয় বরং এর জন্য হতে হয়েছে হাজারো পরিক্ষার সম্মুখীন এবং দিতে হয়েছে অসংখ্য ত্যাগ ও ভালবাসা।
“স্ট্যান লি” এর পুরো নাম স্ট্যানলি মার্টিন লাইবার এবং পরবর্তীতে তিনি “লি” হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।
বিবিসি অনলাইন সংবাদের মাধ্যমে জানা যায়, রোমানিয়া থেকে আমেরিকায় আসা এক দরিদ্র ইহুদি পরিবারে ১৯২২সালে লি জন্ম লাভ করেন।
স্ট্যান লি এর ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল টাইমলি পাবলিকেশনের মাধ্যমে এবং মাত্র ১৮ বছর বয়সে তিনি “সম্পাদকের” পদ লাভ করেন।
তিনি ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করেছেন হরর, মার্ভেলে ক্রাইম এবং ওয়েস্টার্ন কমিক স্টোরি নিয়ে।
স্ট্যান লি তার স্ত্রী জোয়ান কে খুব ভালবাসতেন এবং তার এই সফলতার পেছনে তার স্ত্রী এর ভূমিকা অতুলনীয়। লি এর বয়স যখন ৪০ ঠিক তখনি তিনি কমিকস জগৎ হতে দূরে সরে যেতে চেয়েছিলেন কিন্তু তার স্ত্রী এর সহযোগিতা ও উৎসাহ তাকে দূরে সরতে দেয়নি।
লি এবং শিল্পী জ্যাক কারবি মিলে ১৯৬১ সালে ফ্যান্টাসটিক ফোর তৈরি করেন, এইভাবে বিভিন্ন কমিকস শিল্পীদের নিয়ে কাজ করেছেন লি। তাদের মধ্যে রয়েছেন “জন রোমিটা, স্টিভ ডিটকো” প্রমুখ।
তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ আলাদা ও অসাধারণ একজন মানুষ। তিনি তার পাঠক ও দর্শকদের গুরুত্ব সহকারে দেখতেন ও তাদের সময় দেওয়ার চেষ্টা করতেন। তার প্রতিটি কাজের মধ্যে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন সমাজের করুণ পরিস্থিতি, মানুষের মাঝে বৈষম্য ও তার বিরুদ্ধে লড়াই, প্রিয় মাতৃ ভূমির প্রতি ভালবাসা ইত্যাদি
হুম! অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে, সেই মার্কিন কমিকস খ্যাত “স্ট্যান লি” কে হারিয়ে আজ পৃথিবী অসহায়। তিনি গত সোমবার না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। মৃত্যুকালীন তাঁর বয়স ছিল ৯৫।
হয়ত এই চলে যাওয়ার পেছেনে মূল কারণ ছিল তার প্রিয় মানুষ টিকে হারানো।
এই যে, গত গ্রীষ্মে তার স্ত্রী তাকে ছেড়ে ওপারে চলে যান এবং এর পর থেকেই তিনি বিষণ বেঙে পড়েন। তাছাড়া কয়েক বছর ধরেই চোখে না দেখা, নিউমোনিয়া সহ আরো নানা রোগে ভুগছিলেন বলে জানা যায়।
“স্ট্যান লি” এর মৃত্যুতে শোক ও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বিশ্বের মান্যগণ্য ব্যক্তিবর্গ সহ বিশ্বের মিডিয়া অঙ্গনের তারকা ও অসংখ্যা ভক্ত গণ।