মাহমুদুল হাসান:টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
আদিবাসী গারো সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ওয়ানগালা।টাঙ্গাইলের মধুপুরেও এ উৎসব পালন করে আসছেন গারো সম্প্রদায়কথায় আছে, আদিকালে ফসল দেবতাদ্বয় ফল উৎপাদনশীল গারো রমনীকে ফসলের বীজ দিয়ে সহজ জীবনযাপনের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।তারি ধারা বাহিগতায় নতুন ফসল ঘরে তোলার সময় ধর্মীয় উৎসব পালনের মধ্য দিয়ে সৃষ্টিকর্তাকে খুশি করার জন্য এ উৎসব পলন করে আসতেছ।
ঐতিহ্যবাহি নৃত্য,ধর্মীয় আচার-আচরণ,গান আর আলোচনা সভাসহ নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে গারো সম্প্রদায়ের লোকেরা পালন করে ওয়ানগালা (নবান্ন উৎসব)। এই ওয়ান গালা উৎসব ১৯৯২সাল থেকে মধুপুরের নৃ গোষ্ঠিরা পালন করে থাকে এবং এই অনুষ্ঠান প্রতি বছরই পালন করা হয়।অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে মধুপুরে গারো অধ্যসিত এলাকায় উৎসব মুখোর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। ওয়ানগালা অনুষ্ঠানে গারোরা তাদের কৃষ্টি-কালচার নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরে।
টাঙ্গাইলের মধুপুরের গড়াঞ্চলে খুদ্র নৃ গোষ্ঠি (আদিবাসি) অধ্যুষিত পীরগাছা গ্রামে সারাদিন ব্যাপি এই উৎসবকে ঘিরে বাঙ্গালী আর আদিবাসীদের মিলন মেলায় পরিনত হয় স্থানীয় পীরগাছা সেন্টপোল হাই স্কুল প্রাঙ্গণ। গারো আদিবাসি ও অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহনকারী পিজন নংমিন, দিনা চাম্বুগং, শ্রেয়া মৃ, সিলমী মৃ, চিংমি সিমসাং ও অনিমা দালবত বলেন, ওয়ানগালা আমাদের গারো আধিবাসীদের ধর্মীয় প্রধান উৎসব। এ উৎসবে অংশগ্রহণ করতে পেরে আমাদের অনেক ভালো লাগে।
আদিকাল থেকে আমাদের এ উৎসব পালন করা হয়। আমরা এখানে আসি দেশ দশের মঙ্গল কমনা করার জন্য। আমাদের উৎপাদিত যেসকল ফসল আছে সেগুলো নিয়ে আমরা প্রভুর কাছে প্রার্থনা করতে আসি। আমাদের জন্য দোয়া প্রার্থনা করি। এটা আসলে আমাদের একটি মিলন মেলা।
বিকশন নকরেক ওয়ানগালা আয়োজক কমিটির সদস্য বলেন, ওয়ানগালা হলো আমাদের ভ’মি থেকে যে ফসল গুলো উৎপন্ন হয় তা সৃষ্টিকর্তার চরনে উৎসর্গের পূর্ব। আমরা মূলত ১৯৯২ সাল থেকে এখানে শুরু করেছি। সামনেও এ ধর্মীয় উৎসব অব্যাহত থাকবে। আর আমাদের আদিবাসীদের সাং সারেক ছিলো। সেই সাং সারেক এর একটি অংশ হলো ওয়ানগালা। তখন তারা সৃষ্টিকর্তাকে বিশ্বাস করতো। আর সেই বিশ্বাসের কারনেই প্রথম যে ফসল উৎপাদিত হতো তা সৃষ্টিকর্তার নামে উৎসর্গ করা হতো। পরবর্তীতে আমরা খ্রিষ্টান ধর্ম গ্রহণ করি এবং ধর্মের সকল কিছু মেনেই আমরা এ অনুষ্ঠানটির আয়োজন করি ও তা পালন করে আসছি।
পীরগাছা সাধু পলের ধর্মপল্লীর পাল পুরোহিত ফাদার লরেন্স রিবেরু সিডিসি বলেন, খ্রিষ্টান ধর্মীয় বিশ্বাস এই ওয়ানগালা। তারা বিশ্বাস করে সারা বছর ইশ্বরের কাছ থেকে যে অনুগ্রহ, আর্শিবাদ প্রায় তার জন্য বছরের প্রথম যে শস্য উৎপাদিত হয় তা খ্রিষ্ট রাজার কাছে উৎসর্গ করে। এ জন্য আমরা সবাই এইদিনে একত্রিত হই। আমাদের ও দেশের মঙ্গলকামনা করি। আমরা প্রার্থনা করি আগামী দিনগুলো যেন সুন্দর হয়।সকলেই যেন মিলে মিসে থাকতে পারি।