
শাফাত রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।
“আনন্দের, শান্তির, উৎসবের একটা ঝড়ের প্রত্যাশায় মানহারা মানুষের কন্ঠস্বর তুমি, ওই দাবি সবার, প্রিয় আপা, বুলেটের ক্রুর কামড়ে তুমি বেঁচে থাকো তোমার জীবন, মৃত্যু থেকেও অন্য কোন গভীর বিষয়ে প্রতিদিন বাংলাদেশ, কি দারুণ দ্রোহী!” – উক্ত শিরোনামে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল কবি জসিম উদ্দীন হল ছাত্রলীগের আয়োজনে ‘শিক্ষার্থী সংলাপ ও নির্বাচনী কর্মীসভা’।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস এবং সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন। সভায় সভাপতিত্ব করেন কবি জসিম উদ্দীন হল ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ আরিফ হোসাইন। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাবেক দুই নেতা মাজহারুল ইসলাম শামীম এবং জয়নাল আবেদীন।
সর্বপ্রথমে উপস্থিত সবার সম্মিলিত জাতীয় সংগীত গাওয়ার মাধ্যমে এবং ১৯৫২ এর ভাষা শহীদ ও ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এ সভা। পরে অবিলম্বে সাধারণ শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যে প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরু হয়। এ পর্বে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের সমস্যা এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে তাতের মতামত জানায়।
প্রশ্নোত্তর পর্বে শান্ত নামের বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের উন্নয়ন কর্মকান্ড সম্পর্কে মাসিক পত্রিকা বা ম্যাগাজিন প্রকাশের দাবি জানান। নাঈম মোল্লা নামে পালি ও বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগের ১ম বর্ষের এক বিশেষ সুবিধাসম্পন্ন শিক্ষার্থীর প্রশ্নের উত্তরে সাদ্দাম হোসাইন বলেন, দেশরত্ন শেখ হাসিনা সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী এবং আদিবাসীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখবেন। সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে সাদ্দাম হোসাইন হলেরর ক্যান্টিন সমূহে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তুকি বাড়ানোর এবং আগামী পাঁচ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে সম্পূর্ণ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করার আশ্বাস দেন। এরপর তিনি ২০ তলা ভবনের জয় বাংলা হল তৈরী এবং শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল, মুহসীন হল, সূর্যসেন হল, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল ও বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা হলে বর্ধিত ভবন নির্মাণের গৃহীত পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন তিনি।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে শিক্ষার্থীদের দাবিদাওয়া সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর টেবিলে উপস্থাপন করা হবে। প্রশ্নোত্তরের এক পর্যায়ে তিনি ছাত্রলীগ কর্মীদের আহ্বান করেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যাচাই না করে যা তা শেয়ার না দেয়ার জন্য। এক পর্যায়ে নির্বাচনের পর ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকার ছাড়া কোনো গাড়ি প্রবেশে সীমাবদ্ধতা সৃষ্টি নিয়ে কথা বলেন এবং রাত দশটার পর ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক-কর্মচারী ছাড়া বহিরাগতদের অবস্থান নিষিদ্ধকরণ নিয়ে প্রক্টরের সাথে কথা বলার আশ্বাস দেন। সভার শেষ পর্যায়ে তিনি বলেন, ছাত্রলীগকে ছাত্রবান্ধব সংগঠন হিসেবে উপস্থাপন করার দায়িত্ব শুধু নেতাদের নয়, মুজিব আদর্শকে বুকে ধারণ করা প্রতিটি কর্মীর দায়িত্ব এটি।
সমাপনী বক্তব্যে কবি জসিম উদ্দীন হল ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ আরিফ হোসাইন বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের উপর নির্ভর করছে বাংলাদেশ কি সবার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ হবে নাকি আফগানিস্তান-পাকিস্তানের মতো রাষ্ট্রে পরিণত হবে। আর আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারকে বিজয়ী করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার দায়িত্ব প্রতিটি মুজিব সৈনিকের।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ২০ নভেম্বর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে একই রকম সভার আয়োজনের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি জানতে এবং নির্বাচন সম্পর্কে মত বিনিময়ের জন্য সভা আয়োজনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে। নির্বাচনী ইশতেহার সম্পর্কে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামত এবং হলে থাকতে তাদের সমস্যা সম্পর্কে জানতে এ পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়।