গাজায় ফিলিস্তিনিদের গণহত্যা প্রতিটি মুসলিম রাষ্ট্রের জন্যই একটি স্পষ্ট উদ্বেগের কারণ। তবুও দুর্ভাগ্যবশত বিশ্বের মুসলিম রাষ্ট্রগুলো এ ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া জানানো থেকে বিরত থাকছে।
বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোর প্রতিবাদের ভাষা শুধুমাত্র নিন্দা জানানো আর সমালোচনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। গাজার বিষয়ে কোনো গুরত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে মূলত এই মুসলিম দেশগুলোকে এক প্রকার অক্ষমই বলা চলে। গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের নৃশংসতার বিরুদ্ধে বিশ্বের মুসলিম রাষ্ট্রগুলো যেসব কারণে উল্লেখযোগ্য কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারছে না তার কিছু কারণ তুলে ধরেছে তুরস্কের গণমাধ্যম ডেইলি সাবাহ।
আরব বিশ্বের প্রেক্ষাপটে কিছু কিছু রাষ্ট্রের মুসলিম শাসকরা ফিলিস্তিনকে বোঝা হিসেবে দেখে থাকেন। ফিলিস্তিনে তাদের কোনো পদক্ষেপ বিশ্বের শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে দেশের সম্পর্কের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করে থাকেন তারা।
তবে ইসরাইল পুরো ফিলিস্তিন দখল করে নিলেও মুসলিম শাসকদের উদ্বেগের পরিমাণ কম হতো বলে ধারণা করা হয় কারণ গাজায় এমন নৃশংসতা আর গণহত্যা চলতে থাকায় নিজ দেশের জনগণের কাছ থেকেও চাপের মুখোমুখি হচ্ছেন শাসকরা। আর এ কারণেই কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নিতে পারলেও ইসরাইলের বিরুদ্ধে অন্তত প্রতিবাদ বা নিন্দা জানাচ্ছে দেশগুলো।
ইসরাইলের বিরুদ্ধে মুসলিম দেশগুলোর প্রতিবাদ না জানানোর একটি উল্লেখযোগ্য সামরিক দিকও রয়েছে।
পাকিস্তান পারমাণবিক ক্ষমতা সম্পন্ন একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। কিন্তু এই দেশের ভৌগোলিক অবস্থান ফিলিস্তিন থেকে অনেক দূরে। তাই চাইলেও ইসরাইলের বিরুদ্ধে পাকিস্তান কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারবে না। অন্যদিকে প্রতিবেশী দেশ এবং আরব ও অনারব উভয় মুসলিম দেশগুলোই পরমাণবিক অস্ত্রের দিক থেকে পিছিয়ে রয়েছে।
ইসরাইল গাজায় পারমাণবিক বোমা ব্যবহার করবে না। কারণ এতে ইসরাইলের নিজ ভূখন্ডের ক্ষতি হতে পারে। এছাড়া পারমাণবিক বোমা ব্যবহারের পর বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাবে গাজা অঞ্চল।
তবে এটি বিনা দ্বিধায় অন্যান্য দেশের উপর পারমাণবিক বোমা ফেলতে পারে। আর মুসলিম দেশগুলো এই বিষয়ে নিশ্চিত বলেই তারা ইসরাইলের সঙ্গে কোনো ঝামেলায় জড়াতে চায় না।
মুসলিম দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো থেকে বড় সহায়তা পেয়ে থাকে। ইসরাইল যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বস্ত মিত্র। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রকে অসন্তুষ্ট করে ফিলিস্তিনের পক্ষে জোরালো সমর্থন দিতে চায় না মুসলিম দেশগুলো।