মাহমুদুল হাসান:টাঙ্গাইল প্রতিনিধি;
১৯৫৪ সাল থেকে শামসুর রহমান খাঁনের মাধ্যমে এ পরিবারটি আওয়ামী রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। শামসুর রহমান খাঁন ১৯৬৫-১৯৬৬ সালে টাঙ্গাইল মহকুমা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ও স্বাধীনতার পর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন। যার ফলশ্রুতিতে ১৯৭৩, ১৯৭৯ ও ১৯৮৬ সালে তিনবার সংসদ সদস্যও নির্বাচিত হন তিনি।
২০১১ সালের ২রা জানুয়ারি শামসুর রহমান খাঁন শাহজাহানের মৃত্যুর পর খাঁন পরিবারের জনপ্রিয়তা ধরে রাখেন তার ভাতিজা আমানুর রহমান খাঁন রানা, শহিদুর রহমান খাঁন মুক্তি, সানিয়াত খাঁন বাপ্পা ও জাহিদুর রহমান খাঁন কাকন।
প্রমাণ মেলে ২০১২ সালের ১৮ই নভেম্বর টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের উপ-নির্বাচনে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েও দ্বিগুণেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আমানুর রহমান খাঁন রানা। ২০১৩ সালের ১৮ই জানুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ খুন হওয়ার পর এ পরিবারে ঝড় নেমে আসে।অনাকাঙ্ক্ষিত এ হত্যাকাণ্ডের মামলায় বর্তমানে এমপি আমানুর রহমান খাঁন রানা কারাগারে।
আরো তিন ভাই শহিদুর রহমান খাঁন মুক্তি, সানিয়াত খাঁন বাপ্পা এবং জাহিদুর রহমান খাঁন কাকন আত্মগোপনে রয়েছেন। এ ঘটনার পর থেকেই কোনঠাসা হয়ে পড়ে পরিবারটি। দল থেকে বহিষ্কার করা হয় খাঁন পরিবারের সবাইকেই। সর্বশেষ ২০১৫ সালের ১৮ই অক্টোবর জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে এমপি রানার বাবা আতাউর রহমানকে সদস্য রেখে কোনো রকম অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা হয় এ পরিবারের।
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বাবা আতাউর রহমান খানের কাঁধে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনে রানার পরিবর্তে দলীয় টিকিট তুলে দেয়া হয়েছে তাকে। আতাউর রহমানকে পেয়েই পুরো উপজেলার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এখন উজ্জীবিত। দীর্ঘদিন গ্রুপিং থাকলেও বর্তমানে একাট্টা উপজেলা আওয়ামী লীগ। রাত-দিন নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভোট প্রার্থনা করে চলেছেন তিনি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা এ নির্বাচন হচ্ছে খাঁন পরিবারের রাজনীতিতে টিকে থাকার অস্তিত্বের নির্বাচন। এ নির্বাচনে পিঁছলে গেলে খাঁন পরিবার রাজনীতি থেকে অনেকটা ছিঁটকে পড়বে। কারণ প্রতিদ্বন্দ্বী একটি রাজনৈতিক পক্ষ এখনো মাঠে রয়েছে। এবারের নির্বাচনের ফলাফল নিজেদের ঘরে তুলতে পারলে খাঁন পরিবার নিজেদের জনপ্রিয়তার জানান দিতে পারবে। এ ছাড়াও তাদের হারানো ঐতিহ্য পুনরায় ফিরিয়ে আনতে পারবে। আর এ লক্ষ্য ও চিন্তা ভাবনাকে সামনে রেখে আতাউর রহমান খাঁন নিয়মিত উঠান বৈঠক, পথসভা, জনসভা থেকে শুরু করে নিয়মিত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভোট প্রার্থনা করছেন। যাকেই কাছে পাচ্ছেন বুকে তুলে নিচ্ছেন।
বৃদ্ধ বয়সে এসে রাত-দিন পরিশ্রমকে ভোটাররা ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছেন। ভোটারদের মনে জায়গা করে নিতেও সক্ষম হয়েছেন তিনি।
আতাউর রহমান খান বলেন, আমি দলমত নির্বিশেষে প্রতিটি ভোটারের দ্বারে দ্বারে ভোট প্রার্থনা করছি। আমাকে কাছে পেয়ে ভোটাররা অনেক খুশি। তাদের মাঝে যে সারা পেয়েছি আগামী ৩০শে ডিসেম্বর ভোটাররা এর প্রতিফলন ঘটাবে। আশা করি বিপুল ভোটে নৌকা বিজয়ী হবে। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে।