নতুন বছরে নতুন মন্ত্রীদের জন্য প্রস্তুত- নতুন ৫০ গাড়ী বরাদ্দ দিয়া হবে এমপিদের শপথ গ্রহণ শেষ। প্রস্তুতি চলছে এখন মন্ত্রিসভা গঠনের। টানা তৃতীয় মেয়াদে নতুন মন্ত্রিসভায় কারা থাকছেন, সে তালিকা আওয়ামী লীগ
সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ল্যাপটপে। তবে দলের নেতারা এখন শুধু একটি ফোনের অপেক্ষায়। আছেন
সব নেতারা জানান, সব এমপি এখন ঢাকায়। শুভেচ্ছা বিনিময়ের নামে দলীয় প্রধানের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা
করছেন অনেকেই। এজন্য গণভবনে দৌড়ঝাঁপ বাড়িয়েছেন কেউ কেউ। চায় মন্ত্রী হতে।
প্রতিটি জেলায় ও আসনের নেতা-কর্মী, ও সমর্থকরা চান তাদের এমপিকে ‘মন্ত্রী’ হিসেবে দেখতে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকেও চলছে বেশ প্রচারণা।
দলীয় কার্যালয় বা চা আড্ডায় যে কোন জায়গায় একটাই আলোচনা-এবার মন্ত্রী হচ্ছেন কে বা কারা?
অন্য দিকে মন্ত্রীদের বঙ্গভবনে শপথের জন্য নিয়ে আসতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৫০টি নতুন গাড়ি।
মন্ত্রিসভার শপথ পড়ান রাষ্ট্রপতি, শপথ হয় বঙ্গভবনে। আর
তাদের নিয়ে আসে পরিবহন পুল থেকে যাওয়া গাড়ি। এই গাড়ির মধ্যে যেগুলো পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রীদের জন্য থাকবে, সেগুলোতে পতাকার স্ট্যান্ডও যুক্ত করেছে
গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে জয়ের মধ্য দিয়ে সংসদে
সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা শেখ হাসিনাকে বৃহস্পতিবারই
সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। আর মন্ত্রিসভায় কারা আসছেন, তা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা।
সরকারি পরিবহন অধিদপ্তরের যুগ্ম সচিব শাহজাহান আলী জানান ‘এবার কতজন মন্ত্রিসভায় যুক্ত হচ্ছেন, সেটা আমরা এখনো জানি না। তবে বিগত মন্ত্রিসভার হিসাব অনুযায়ী
আমরা ৫০টি গাড়ি প্রস্তুত রেখেছি। যদি হিসেব এর চেয়ে বাড়ে, সেই প্রস্তুতিও আমাদের রয়েছে।’
পরিবহন পরিদর্শনে গতকাল সকালে সরকারি পরিবহন অধিদপ্তরে যান জনপ্রশাসন সচিব ফয়েজ আহমেদ। সকাল ১০.৩০ মিনিটে তিনি সেখানে গিয়ে সরাসরি সবকিছু পরিদর্শন করে আসেন।
ঐ সময় তিনি গাড়ির সুষ্ঠু সুন্দর ব্যবহার ও গাড়ি চালকদের আচরণবিধি নিয়ে অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নির্দেশনাও দেন। এই বিষয়ে তিনি গাড়ি চালকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিতে হবে বলেন সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরের সবাইকে।
তিনি পরিদর্শনকালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন), উপসচিব (যানবাহন অধিদপ্তর শাখা) ও সরকারি পরিবহন অধিদপ্তরের কমিশনার, পরিচালক, উপ পরিচালক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
সূত্রমতে, এবার বিজয়ী আওয়ামী লীগের কাছে দেশবাসীর আশা প্রত্যাশা অনেক অনেক বেশি। সে আশা পূরণে দেশের মানুষকে নতুন চমক দিতে চান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই জন্য সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি মন্ত্রিসভা উপহার দিতে চান তিনি।
সংসদীয় রীতি অনুযায়ী সংসদ নেতা ঠিক করবেন কে হবেন মন্ত্রী। আর প্রতি মন্ত্রী
সে জন্য তিনি তালিকা প্রস্তুত করেছেন। এ প্রসঙ্গে কাল সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে দলের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন,
নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে আওয়ামী লীগের পথচলা।
তবে বড় জয়ের সঙ্গে বড় চমকও থাকতে পারে। বিশাল বিজয়ের সঙ্গে বিশাল প্রত্যাশা। জনগণেরও এখানে একটা প্রত্যাশা রয়েছে। সেই প্রত্যাশার প্রতিধ্বনি তো করতে পারেন একজনই (প্রধান মন্তী শেখ হাসিনা)।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের চমকের ঘোষণার পর নবনির্বাচিত এমপিদের প্রত্যাশাটা বেড়ে গেছে। তারা মন্ত্রী হিসেবে নাম লেখাতে চান। এ জন্য দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছেন নানানভাবে।
এদিকে দলের বড় বড় নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন কয়েকগুণ। এমপিরা তাদের নাম ‘মন্ত্রী তালিকায় আছে কি না নানানভাবে খোঁজ নিচ্ছেন। কেউ কেউ গণমাধ্যমে কর্মরত সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকদের শরণাপন্ন হচ্ছেন।
জানা গেছে, ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচনে জিতে প্রথম বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর ৬ জানুয়ারিতে দ্বিতীয় দফায় এবং ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর ১২ জানুয়ারি ৩ দফা সরকার গঠন করেন তিনি। ১০ম জাতীয়
সংসদকালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ৪৮ সদস্যের মন্ত্রিসভা গঠন হয়েছিল।
পরে কয়েক বার রদবদল করে শেষ পর্যন্ত মন্ত্রিসভায় সদস্য সংখ্যা দাঁড়ায় ৫৩ জনে। এবার নতুন মন্ত্রিসভায় পুরনোদের অনেকেই বাদ পড়ছেন। এদের বেশির ভাগ
পরিচিত মুখ। বয়স, শারীরিক অসুস্থতা, দুর্নীতির অভিযোগ এবং অদক্ষতার কারণে তাদের বাদ দেওয়া হচ্ছে।
এ তালিকায় প্রভাবশালী একাধিক মন্ত্রী রয়েছেন। তারুণ্যনির্ভর মন্ত্রিসভা গঠন প্রক্রিয়ায়
পুরনোদেরঅনেকেইবাদ পড়বেন। নতুনদের স্থান দিতে নতুন মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়তে পারেন জেলা কোটায় স্থান পাওয়া কয়েকজন।