
আরিফুল ইসলাম সুমন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে।।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা সীমান্তের শূন্যরেখায় খোলা আকাশের নীচে ৩১ জন নারী, পুরুষ ও শিশু গত তিন দিন ধরে অবস্থান করছে। ধারণা করা হচ্ছে, তারা সবাই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিক, যারা পালিয়ে ভারতে চলে গিয়েছিল। ভারত থেকে মিয়ানমারে পাঠিয়ে দেওয়ার ভয়ে তারা এখন আশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশে ঢুকতে চাচ্ছে।
তবে দেশ রক্ষার স্বার্থে সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর সদস্যরা সহ স্থানীয় গ্রামবাসী অনুপ্রবেশ ঠেকাতে এবং তারা যেন বাংলাদেশের সীমানায় কোনো অবস্থাতেই প্রবেশ করতে না পারে, সেই ব্যাপারে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। অপরদিকে ভারতীয় বিএসএফ সদস্যরা তাদেরকে বাংলাদেশে পাঠাতে চেস্টা অব্যাহত রেখেছে।
এতোকিছুর পরও ” মানুষ মানুষের জন্য ” এই মানবিক আবেদনে সাড়া দিয়েছেন বাংলাদেশের অংশের সীমান্তে বসবাসরত মানুষেরা। দুই দেশের শূন্যরেখায় খোলা আকাশের নীচে অবস্থানরত ভিনদেশী ওই মানুষগুলোর জন্যে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা চালিয়ে যাচ্ছেন টানা দুই দিন ধরে স্থানীয়রা।বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে শনিবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে জানান, ‘এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে একটি পতাকা বৈঠক হলেও আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি। অবস্থানরতদের নিজেদের নাগরিক বলে স্বীকার করছেন না ভারতীয়রা। কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে, বাংলাদেশের নাগরিক হলে তাঁরা কেন শূন্যরেখায় অবস্থান নিয়ে কষ্ট করবে। অবস্থানরতরা রোহিঙ্গা নাগরিক বলে ধারণা করা হলেও নিশ্চিত না হয়ে কিছু বলা
যাবে না। তারা যেন কোনোভাবেই বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সে বিষয়ে বিজিবির সতর্ক দৃষ্টি রয়েছে। ’এদিকে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, সীমান্তের শূন্যরেখায় অবস্থানরত ওই লোকজনের সঙ্গে কিছু ব্যাগও রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বাংলাদেশে আসার অপেক্ষায় রয়েছে তারা। বাংলাদেশের স্থানীয় বাসিন্দারা মানবিক কারণে তাদের কাছে খাবার পাঠিয়েছেন।গতকাল রবিবার বিকেল নাগাদ এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তারা শূন্যরেখাতেই অবস্থান করছিল। এমনটিই নিশ্চিত করেছে সেখানকার স্থানীয়রা।স্থানীয় গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম মান্নান জাহাঙ্গীর সাংবাদিকদের জানান, শুক্রবার সকাল থেকে ৩১ জন নারী, পুরুষ ও শিশু কাঁটাতার পেরিয়ে শূন্যরেখায় অবস্থান নেয়। তবে তারা বাংলাদেশে ঢুকতে পারেনি। তারা যেন কোনোভাবেই বাংলাদেশে
প্রবেশ করতে না পারে সে কারণে সীমান্ত এলাকায় বিজিবি বেশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। মানবিক কারণে তাদের কাছে খাবার পাঠানো হয়েছে। বিভিন্ন কারণেই ধারণা করা হচ্ছে, তারা রোহিঙ্গা নাগরিক।