
আরিফুল ইসলাম সুমন, নিজস্ব প্রতিবেদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় মাদক নির্মূলে এবং সরকারি জায়গা অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারী দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ এস এম মোসা।
মাদকমুক্ত সরাইল উপজেলা গড়তে হার্ডলাইনে অবস্থান নিয়েছে প্রশাসন। উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে মাদকব্যবসায়ী ও সেবনকারীর তালিকা তৈরী করার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশ দিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।সোমবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সরাইল উপজেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে এ নির্দেশ দেন। এসময় ইউএনও বলেন, মাদকের
থাবায় সমাজ আজ ধ্বংসের পথে। বিপথগামী হয়ে পড়ছে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। মাদকের কারণে বৈদেশিকমুদ্রার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সমাজে মাদকসেবীদের কারণে অনেক পরিবার দিশেহারা। সরকার মাদক নির্মূলে জিরোটলারেন্স ঘোষণা দিয়েছেন। ইউএনও বলেন, সরাইল উপজেলাকে মাদকমুক্ত করতে চাই। আগামি একমাসের মধ্যে এ উপজেলার অন্তত একটি ইউনিয়নকে মাদকমুক্ত ঘোষণা করবো। মাদকের সাথে জড়িতদের তালিকা তৈরীর মাধ্যমে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। মাদকের ব্যাপারে প্রশাসনের কোনো আপোষ নেই।
সোমবার উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা সভায় মাদক নির্মূলে অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন, সরাইল সরকারি কলেজ এর অধ্যক্ষ মৃধা আহমেদুল কামাল, সরাইল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ নুরুল হক, সদর ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার, নোয়াগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ কাজল চৌধুরী, সরাইল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব খান বাবুল।অপরদিকে একই সভায় সরাইল উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরকারি জায়গা দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইউএনও এ এস এম মোসা।
সোমবার সরাইল উপজেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় ইউএনও দখলদারদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সরকারের এক ইঞ্চি পরিমাণ জায়গা বেদখল হতে দেয়া হবে না। যেকোনো মূল্যে সেইসব জায়গাদখলমুক্ত করা হবে। প্রয়োজনে দখলদারদের আইনের আওতায় আনা হবে।উল্লেখ্য, উপজেলার কালীকচ্ছ সূত্রধরপাড়া এলাকায় একটি জনগুরুত্বপূর্ণ খাল দখলের পর সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণ করছে দখলদাররা। স্থানীয় প্রশাসন থেকে ওই খাল দখলে বাধা দিলেও দখলদাররা সেই সরকারি খালে পাকা ভবনের কাজ অব্যাহত রেখেছে। বিষয়টি নিয়ে আইনশৃঙ্খলা সভায় ব্যাপক আলোচনা হয়।
সভার সদস্য ও উপজেলা রিপোটার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ তাসলিম উদ্দিন জানান, সরাইল সরকারি কলেজ রোডের পাশে সূত্রধরপাড়া এলাকায় সরকারি খাল দখল করে সেখানে হরিদাস সূত্রধর নামে এক ব্যক্তি বহুতল ভবন নির্মাণ করছে। সেই দখলদার হরিদাস সূত্রধর একজন সরকারি চাকুরীজীবি হয়েও তিনি সরকারের খাল দখল করেছেন। প্রশাসন থেকে বাধা প্রদান করা হলেও তিনি প্রভাব খাটিয়ে সেই খালে পাকা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে আলোচনা-সমালোচনা অব্যাহত আছে। এছাড়া সেই খাল দখল নিয়ে সোমবার বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরাইলে বিশেষ করে নদী ও খাল সহ পানি নিস্কাশনের মূল্যবান জায়গা একের পর এক দখল হয়ে সেখানে নানা অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠছে। এতে এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টির পাশাপাশি পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। পাশাপাশি বাড়ছে সামাজিক অস্থিরতা।এদিকে এসব দখল নিয়ে সোমবার (১১ ফেব্রুয়ারি) উপজেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় ব্যাপক আলোচনা হয়। সভায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানরা এইসব অবৈধ দখল নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ এস এম মোসার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা সভায় সরাইল থানার পরিদর্শক (তদন্ত), উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যান, উপজেলা নয়টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাংবাদিক ক্লাবের প্রতিনিধি সহ অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।