
আরিফুল ইসলাম সুমন, সরাইল।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইল উপজেলার হামিদা অবশেষে ১১ তম স্বামী কে ডিভোর্স দিয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে যা বললেন হামিদা বেগম গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে যে নিউজ গুলো আসছে দুঃখজনক হলেও সত্যি যে আমি ১১ বার বিয়ে করেছিলাম এবং সর্বশেষ ১১ তম স্বামী কে ডিভোর্স দিয়ে আমি আমার নিজের জীবনকে সুন্দর ভাবে সাজাতে চাই আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়ায় আলোচিত সমালোচিত ১১ বিয়ে করা হামিদা অবশেষে তার সর্বশেষ স্বামী আব্দুল্লাহ ডলিকে ডিভোর্স
(তালাক) দিয়ে তার পরিবারের লোকদের কাছে আশ্রয় নিয়েছেন। হামিদা এখন আলোর পথে ফিরতে চান। তিনি দীর্ঘ দিন একটি প্রতারক চক্রের জালে বন্দী ছিলেন। বিভিন্ন মিডিয়া তাকে নিয়ে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রতারক চক্রের মুখোশ উন্মোচন হওয়ার ভয়ে তারা হামিদার ওপর থেকে তাদের অবৈধ নিয়ন্ত্রণ সরিয়ে নেন। তিনি এখন অনেকটা মুক্ত ও স্বাধীন।গত শনিবার (২৭ জুলাই) বিকেলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে হামিদা বেগম এসব কথা জানান। এসময় তার পরিবারের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। তাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশের
কারণে সামাজিকভাবে সাময়িক সমালোচনার সন্মূখীন হলেও বাস্তবে তার জীবনে বড় ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটেছে জানিয়ে হামিদা স্থানীয় সংশ্লিষ্ট সংবাদকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তার আগামি সুন্দর ও সমৃদ্ধ পথচলায় সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। পাশাপাশি তার বিগত অনিচ্ছাকৃত সবধরণের ভুল-ত্রুুটির কারণে হামিদা সকলের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।লিখিত বক্তব্য পেশ সহ হামিদা সাংবাদিকদের কাছে বলেন, আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। কাগুজে-কলমে আমার ১১ বিয়ে দেখানো হলেও আমি তাদের সকলের সঙ্গে সংসার করিনি।
অনেক বিয়ের ব্যাপারে আমার জানা নেই। আমাকে ব্যবহার করে এবং অনেক সময়ে আমার স্বাক্ষর জাল করে ওই প্রতারক চক্র একের পর এক বিয়ের নাটক সাজিয়ে লাখ লাখ টাকা কামিয়েছে। তখন আমি ছিলাম নানা কারণে তাদের কাছে জিম্মি ও অসহায়। আমার ও আমার পরিবারের ভবিষৎ নিরাপত্তার কথা ভেবে আমি তাদের নাম পরিচয় প্রকাশ করলাম না।হামিদা বলেন, আমি দরিদ্র পরিবারের সন্তান। আমরা চার বোন, ভাই নেই। আমার বয়স যখন একবছর তখন আমার মা মারা যান। বাবা ভালু মিয়া পরে আবার বিয়ে করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের সূর্যকান্দি গ্রামে নানার বাড়িতে আমরা চার বোন লালিত-পালিত হয়। মামারা অর্থ ব্যয় করে আমাদেরকে বিয়ে দেন। পারিবারিকভাবে খালাত ভাই প্রবাসী আলমগীর মিয়ার সঙ্গে আমার প্রথমে বিয়ে হয়। টানা ১০ বছরের সংসার জীবনে রোপা ও সাদিয়া নামে দুই কন্যা সন্তান হয় আমার। আমি স্বামী আলমগীর দ্বারা কখনোই কষ্ট পাইনি। তবে স্বামীর স্বজনদের নির্বিচারের অত্যাচারে দুই কন্যা সন্তান সহ আমাকে আলমগীরের সংসার ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়।
পরে বাপ্পী মিয়া নামে এক যুবক বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমার সঙ্গে প্রতারণা করে সে আমার জীবনটাকে তছনছ করে দেয়। শুরু হয় আমার জীবনে অশুভ কালবৈশাখী ঝড়।হামিদা বলেন, একসময় পরিবেশ পরিস্থিতিতে আমাকে কিছু কাজে বিপথগামী হতে হয়েছে। এতোকিছু জেনেও আমার জীবনটাকে নতুনভাবে সাজাতে জহিরুল ইসলাম আমাকে বিয়ে করেন। কিন্তু প্রতারক চক্রটি আমার পিছু ছাড়েনি। তারা জহিরুলকে মাদকে আসক্ত করে আমার সংসারে অশান্তি সৃষ্টি করে। নানাভাবে তারা আমাকে ও জহিরুলকে ব্ল্যাকমেইল করে পুনরায়
জিম্মি করে ফেলে। আবার শুরু হয় বিয়ে পড়ানোর নাটক। তিনি আরো বলেন আমি ইচ্ছে করে বিয়ে করিনি আমি সাধারণ গরিব ঘরের মেয়ে বলে আমাকে তারা ব্যবহার করেছে এদিকেসর্বশেষ আব্দুল্লাহ ডলি আমাকে বেকায়দায় ফেলে গত ২৩ জুন জোরপূর্বক বিয়ে করেন। তাকে শেল্টার দেন শহরের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী সুমন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল আমাকে ব্যবহার করে এবার তারা মাদক পাচারের ব্যবসা আরো চাঙ্গা করার। তাদের সঙ্গে যুক্ত আছেন আনোয়ার নামে একজন সিএনজি অটোরিকশা চালক। এই অবস্থায় মিডিয়ার
সহযোগিতায় আমি মুক্ত হয়ে গত ১৫ জুলাই আবদুল্লাহ ডলিকে ডিভোর্স দিয়েছি। এতে আবদুল্লাহ ক্ষুব্ধ হয়ে শহরের আমার ভাড়া বাসার সকল মালামাল জোরপূর্বক আটকে রেখেছেন। এখন আমি এককাপড়ে দুই সন্তান নিয়ে স্বজনদের কাছে মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমি মালামাল ফেরত চাই এবং নতুনভাবে সুন্দর জীবন গড়তে চাই।হামিদা বেগম আরও বলেন এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীদের কথা না শোনার কারণে আমার এই অবস্থা এখন আমি পুরোপুরি বেকায়দায় পড়ে গেছি তাই প্রশাসনের সাহায্য কামনা করছি এবং যারা আমার মালামাল আটকে রেখেছে আমি সব মালামাল ফেরত চাই আমি নতুন করে জীবন শুরু করে সুন্দর ভাবে বাঁচতে চাই