নিউজ ডেস্কঃ
পবিত্র আশুরা আজ। কারবালার শোকাবহ ও হৃদয়বিদারক ঘটনার এই দিনটি ধর্মীয়ভাবে বিশ্বের মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের কাছে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। মুসলিম বিশ্বে ত্যাগ ও শোকের প্রতীক হিসেবে এ দিনটি বিশেষ পবিত্র দিবস হিসাবে পরিচিত।হিজরি ৬১ সনের ১০ মহররম এই দিনে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসেইন (রা.) ও তাঁর পরিবার এবং অনুসারীরা সত্য ও ন্যায়ের ধর্ম ইসলামকে প্রচার করতে পবিত্র মক্কা নগরী থেকে ইরাকের উদ্দেশ্যে 72 জন সাহাবা নিয়ে এসেছিলেন ইমাম হোসাইন মুসলমানদের পক্ষ থেকে দাওয়াত নিয়ে আসা ইমাম হোসেনকে পড়তে হয়েছে এই
বিপদে ইমাম হোসাইন এর কাফেলা। ইরাকে প্রবেশ করার আগে জানতে পেরে জান ইয়াজিদের বাহিনী ইমাম হোসাইন এর পরিবারের উপর হামলা করার ষড়যন্ত্র জানতে পেরে জান। পরে ইয়াজিদি বাহিনী ইমাম হোসাইন এর কাছে চিটি পাটিয়ে বলেছিলেন ইরাকের ক্ষমতা আমাদের কাছে থাকবে। মূলত ইয়াজিদি বাহিনীতে চেয়েছিল অসৎ কাজের জন্য ইমাম হোসেনকে রাজি করাতে।ইমাম হোসাইন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নাতি বলে কথা কোন অসৎ কাজের জন্য ইয়াজিদি। বাহিনীকে সমর্থন না করে সত্য এবং নেয়ায়ের।পক্ষে যুদ্ধ করতে গিয়ে ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে শহীদ হন। এজন্যই যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে সারা দুনিয়ার মুসলমানরা এ দিনটি পালন করে।বাংলাদেশেও আজ মঙ্গলবার যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা
ও নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে পবিত্র আশুরা পালিত হবে। এদিকে পবিত্র আশুরা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। আজ সরকারি ছুটি হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে।কারবালার ঘটনা স্মরণ করে বিশ্বের মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটি পালন করে থাকে। শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম ইসলামের মহান আদর্শকে সমুন্নত রাখতে তাদের এই আত্মত্যাগ মানবতার ইতিহাসে সমুজ্জ্বল রয়েছে। কারবালার শোকাবহ এই ঘটনা অর্থাৎ পবিত্র আশুরার শাশ্বত বাণী সকলকে অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে এবং সত্য ও সুন্দরের পথে চলতে প্রেরণা
যোগায়। আশুরা উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ দেশব্যাপী বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আজ হোসনি দালানসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তাজিয়া মিছিল বের হবে।দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক আজ বিশেষ প্রবন্ধ, নিবন্ধ প্রকাশ করবে। বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন বেসরকারি রেডিও এবং স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেলও এই দিনের তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে।এদিকে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া পবিত্র আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া শোক মিছিলে নিছিদ্র নিরাপত্তা
ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন। রাজধানীর বড় কাটারা ইমামবাড়া, খোজা শিয়া ইসনুসারী ইমামবাড়া এবং বিবিকা রওজায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।প্রতিটি ইমামবাড়া সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে প্রত্যেক দর্শনার্থীর দেহ তল্লাশি করে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করানো হবে বলেও ডিএমপি কমিশনার উল্লেখ করেন।এছাড়াও এবছর তাজিয়া মিছিলে ঢোল বাজিয়ে ছুরি, তলোয়ার ও লাঠিখেলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ডিএমপি কমিশনার ইতোমধ্যেই জানিয়েছেন, নিরাপত্তার স্বার্থে এসব নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাজিয় মিছিলে ১২ ফুটের বেশি বড় নিশান,
ব্যাগ, পোঁটলা, টিফিন ক্যারিয়ার বহন এবং আগুনের ব্যবহার করা যাবে না। মাঝপথে কেউ মিছিলে অংশ নিতেও পারবেন না বলে তিনি উল্লেখ করেন। ডিএমপি কমিশনার আরো বলেন নিরাপত্তার স্বার্থে মাঝপথ থেকে কোন ব্যক্তি কে মিছিলে অংশ নিতে দেখলে তাকে ভালো করে তল্লাশি করা হবে।