আরিফুল ইসলাম সুমন, স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের শূন্যরেখায় চার দিন যাবত খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে ৩১ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু। এদেরমধ্যে রয়েছে ১৭ শিশু। ছয়জন নারী ও আটজন পুরুষ।তীব্র শীতে খোলা আকাশের নিচে থাকায় সেই ১৭ শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ছে। কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এসএম মান্নান জাহাঙ্গীর সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।জানা গেছে, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ভারতীয় বিএসএফ কাঁটাতারের বেড়ার গেট খুলে সেই ৩১ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানোর চেষ্টা করে। তবে ওইদিন তাদের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। বিষয়টি টের পেয়ে সীমান্তে টহল জোরদার করেন বিজিবি সদস্যরা। পরে বিষয়টি নিয়ে গত রবিবার বিজিবি ও বিএসএফ’র মধ্যে একাধিকবার পতাকা বৈঠক হয়। তবে এর কোনো সমাধান হয়নি।
কসবা উপজেলার কাজিয়াতলী এলাকায় দুই দেশের শূন্যরেখা সীমান্তের ২০২৯ নম্বর পিলারের কাছে বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করছে সেই ৩১ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু। বাংলাদেশ অংশের স্থানীয় বাসিন্দারা এবং মাঝেমধ্যে বিএসএফ’রা রোহিঙ্গা দলের সদস্যদের মানবিক কারণে খাবার দিয়ে যাচ্ছেন।এদিকে কসবার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম মান্নান সাংবাদিকদের জানান, শূন্যরেখায় আশ্রয় নেয়া এসব লোকদের কাছে ইউ এন এইচ সি আর কর্তৃক প্রদত্ত রিফিউজি কার্ড, রিফিউজি সার্টিফিকেট, জম্মু কাশ্মীর ইন্টিগ্রেডেট চাইল্ডডেভেলপমেন্ট ন্যাশনাল হেলথ মিশন জম্মু কাশ্মীরের হেলথ কার্ড সংগ্রহ করা হয়েছে। যেসব কার্ডের মেয়াদ আরো পাঁচ ছয় মাস পর্যন্ত রয়েছে। এসব কার্ডে লেখা রয়েছে জোরপূর্বক তাদের দেশ থেকে বের করা যাবে
না। ইউপি চেয়ারম্যান জানান, এসব কার্ড থেকে প্রতিয়মান হচ্ছে তারা ভারতে আশ্রয় নেয়া অন্য কোনো দেশের নাগরিক।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এ নিয়ে রোববার ভারত-বাংলাদেশের ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক পর্যায়ে দুই দফা পতাকা বৈঠক হয়েছে। ২০২৯ পিলারের কাছে অনুষ্ঠিত বৈঠক দুটিতে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ২৫ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক (সিও) গোলাম কবির এবং ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছেন ভারতের বিএসএফের ১২০ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক (সিও) রমেশ কুমার। তবে এ বিষয়টি নিয়ে কোনো কথা বলছেন না বিজিবি’র কর্মকর্তারা। রবিবারের পতাকা বৈঠকের পর বিজিবির অধিনায়ক গোলাম কবির আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি বলে জানিয়েছিলেন।