
মোঃ জসীম উদ্দিন, বেনাপোল।
এবারের ঈদের লম্বা ছুটিতে যাচ্ছেন সবাই বেনাপোল চেকপোস্ট এ ভারত যাওয়ার জন্য ভিড় জমিয়েছে ঈদের লম্বা ছুটিতে বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে ভারত ভ্রমন পিপাসুদের পারাপার বেড়েছে কয়েকগুন। ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার পাশাপাশি অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে যাচ্ছেন দেশের বাইরে।স্বজনদের সাথে দেখা সাক্ষাত, চিকিৎসা, ব্যবসা, কেনাকাটা ও বেড়ানোর উদ্দেশে ভারতগামী পাসপোর্টযাত্রী যাতায়াত অন্য সময়ের চেয়ে কয়েকগুন বেড়েছে বলে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। ভিসা সহজলভ্যতা ও খরচ কম পড়ায়
বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারতগামী পাসপোর্টযাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত শুক্রবার সকাল থেকে বেনাপোল চেকপোস্টে ভারতগামী পাসপোর্টযাত্রীদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে প্রবেশের আগে পুলিশের সহযোগিতায় লাইনে দাঁড়িয়ে সারিবদ্ধভাবে ভ্রমণকরে কাটছেন। এরপর কাস্টমসের স্ক্যানিং কাজ শেষ করে পাসপোর্টযাত্রীরা লাইনে দাঁড়িয়ে সুশৃঙ্খলভাবে তাদের পাসপোর্টের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করছেন। সার্বিক নিরাপত্তা ও কোন রকম বিশৃঙ্খলা যাতে না হয় তার জন্য লাইনের মাঝে মাঝে পুলিশ নজরদারিতে রয়েছে। এদিকে গতি সোমবার সকালে
চেকপোস্টে গিয়ে দেখা যায়, বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্টের আন্তর্জার্তিক টার্মিনালের সামনে ছিল যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়।যাত্রীদের পাসপোর্টের আনুষ্ঠানিকতা সারতে পুলিশ, আনসার ও বন্দরের নিরাপত্তা কর্মীদের রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে। বেনাপোল চেকপোস্টে দ্রুততম সময়ের মধ্যে পাসপোর্টের কাজ সম্পন্ন করে ভারতীয় চেকপোস্টে প্রবেশের সাথে সাথে দীর্ঘ লাইনে ঘন্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। ওপারের ইমিগ্রেশনের কাজ ধীর গতির কারনে যাত্রীদের এ দীর্ঘলাইন এমন অভিযোগ করেন যাত্রীরা। ভারতীয় ইমিগ্রেশন থেকে ভারতীয় কাস্টমস, মেইন গেট,
নোম্যান্সল্যান্ডে কয়েকটি গোলাকার লাইন পেরিয়ে আশেপাশের মাঠ ছাপিয়ে গেছে লাইন। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, মা ও শিশুদের কস্টের সীমা নেই। অনেক রোগীদের রাস্তার উপরেই বসে থাকতে দেখা গেছে। প্রচ- রোদে ও খোলা আকাশের নিচে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে দুর্ভোগে পড়েন কয়েক হাজার নারী শিশু ও পুরুষ।বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক চেকপোষ্ট বেনাপোল। বেনাপোল থেকে কলিকাতার দুরত্ব মাত্র ৮৪ কিলোমিটার। অল্প সময়ে কম খরচে বেনাপোল পেট্রাপোল চেকপোস্ট দিয়ে যাওয়া যায় কলিকাতা হয়ে ভারতের
বিভিন্ন প্রদেশে। এ কারণে মানুষ এ পথে বেশি যাতায়াত করে থাকে। গত ১৮ মে থেকে ২৪ মে পর্যন্ত যে যাত্রী আসা-যাওয়া করেছিলেন তার তুলনায় পরের সপ্তাহ অর্থাৎ ২৫ মে থেকে ৩রা জুন পর্যন্ত যাত্রীর আগমন ও বহির্গমন বেড়েছে। ১৮ মে তারিখ থেকে ২৪মে তারিখ পর্যন্ত ভারত থেকে আগমন ছিল ১৭ হাজার ৬২০ জন এবং বাংলাদেশ থেকে ভারতগামী ছিলেন ২১ হাজার ৭৫৫ জন। এরপরে ২৫ তারিখ থেকে ৩রা জুন পর্যন্ত ভারত থেকে আগমন ছিল ২৫ হাজার ৭৯২ জন এবং বহির্গমন ছিল ৩২ হাজারের উপরে।সোমবার সকালে বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন দিয়ে
ভারতগামী পাসপোর্ট যাত্রী ঢাকার মালিবাগের নিজাম উদ্দিন শেখ বলেন, এবার ঈদের লম্বা ছুটিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে ভারত যাচ্ছি ঈদ করতে। তিনি বলেন, দেশে তো সবসময় ঈদ করা হয়। মেয়ে নাতি জামাইকে নিয়ে এবার দেশের বাইরে ঈদ করাসহ দর্শনীয় জায়গা ভ্রমণ করার জন্য ভারত যাচ্ছি।ঢাকা থেকে আসা খালেদা পারভীন ও তার স্বামী আব্দুল জলিল বলেন, ঈদের আনন্দটা একটু অন্য রকম। এবার ঈদে একটু আগে থেকে ছুটি পাওয়ায় ভারতে যাচ্ছি ঈদ করতে। সেখানে আত্মীয়-স্বজনদের সাথে ঈদ করব। এছাড়া একাধিক যাত্রী তাদের মতামত ব্যক্ত করে বলেন,
আমরা এ বছর ঈদের লম্বা ছুটি পাওয়ায় ভারতের বিভিন্ন দর্শনার্থী স্থানও দেখব আবার ঈদের আনন্দও উপভোগ করব। এবারের ঈদে লম্বা ছুটি দেওয়ায় দেশের বাইরে গিয়ে অনেক আনন্দ করতে পারব ফরিদপুরের ইউসুফ আলম তার বন্ধুদের সঙ্গে ভারতে যাওয়ার সময় ইমিগ্রেশন ভবনে বলেন, বেসরকারি প্রতিষ্টানে চাকরি করি, তাই ঘুরে বেড়ানোর সময় পাইনা। এবার ঈদের লম্বা ছুটি পাওয়ায় বন্ধুদের সঙ্গে ভারতে বেড়াতে যাচ্ছি। ভারতে কয়েকজন আত্মীয় রয়েছে এ সুযোগে তাদের সঙ্গে দেখা করাও হবে বেড়ানোও হবে। ঈদ এবার ভারতে করবো।বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন ওসি আবুল বাশার বলেন, ঈদের ছুটিতে যাত্রী সংখ্যা বৃহস্পতিবার (৩০ মে) বিকেল থেকে বেশি লক্ষ্য করা গেছে। শুক্রবার শনিবার ও রোববার যাত্রীর চাপ অন্যান্য দিনের তুলনায়
কয়েকগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। যাত্রীদের সেবায় ইমিগ্রেশনে আমাদের লোকজন একটানা কাজ করে যাচ্ছে। কোনও ত্রুটি বিচ্যুতি হবে না আশা রাখি। পাসপোর্টযাত্রীদের যাতে কোন অসুবিধা না হয় তার জন্য ইমিগ্রেশনে নজরদারি করা হচ্ছে। সেই সাথে যাত্রী সেবা বাড়াতে ইমগ্রেশন চত্বরে পুলিশের জনবল বৃদ্ধি করা হয়েছে।এছাড়াও যাত্রীদের যাতে কোন অসুবিধা না হয় ইমিগ্রেশনে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি আবুল বাশার বলেন