জসীম উদ্দীন,বেনাপোল প্রতিনিধি:
শীতের শুরুতেই দেশি-বিদেশি পাখি যশোরের কদমবিল এলাকায় আসতে শুরু করেছে। মৌসুমি বায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথেই পৌষের হাড় কাঁপানো শীতে বিভিন্ন প্রজাতির দেশি-বিদেশি পরজয়া অতিথি পাখির আগমনে মুখরিত ও অভয়াশ্রমে পরিনত হয়েছে যশোরের শার্শার কদম বিল। ১শ ৫০ গজ দূরেই ওপারে ভারতের কাটাতারের বেড়া, পাশেই সবুজ বেষ্টনীতে ঘেরা যশোরের শার্শা উপজেলার লক্ষনপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রাম। এই গ্রামের পাশেই প্রায় ৭০ বিঘা জমির জলাশয় নিয়ে কদম বিল। কদমবিলে হরেক রকম পাখির অভ্যারন্য গড়ে উঠেছে। নিরিবিল মনোরম পরিবেশে গড়ে ওঠা অভয়াশ্রমে পাখির কলতানে মুখরিত গোটা এলাকা। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন শতশত পাখি প্রেমি ও নারী শিশুসহ সাধারন দর্শনার্থীরা ভিড় করছে কদম বিলে।
উপভোগ করছেন প্রাকৃতিক দৃশ্য। নিরাপদ ও এলাকাবাসির কড়া নজরদারী থাকায় সবুজ বেষ্টনী ঘেরা জলাশয়ে পাখির অভয়ারন্য গড়ে উঠেছে বলে জানান স্থানীয়রা। দর্শনার্থী আব্দুল জববার ও আলী হোসেন বলেন, সরাইল, পানকৌড়ি, ডংকুর, বেগ ও কাসতেচুড়াসহ অসংখ্য পাখি চরছে জলাশয়ে। উড়ছে তারা আকাশ নীড়ে। পাখির কিচির মিচিরে মুগ্ধ হচ্ছে মানুষ। দেশি ও বিদেশি জাতের-বিভিন্ন স্থান থেকে ঝাকে ঝাকে আসছে অতিথি পাখি। দেখছে সবাই প্রাণভরে, মন জুড়াচ্ছে ঘুরে ফিরে। গ্রাম ও শহর থেকে আসছে মানুষ অতিথি পাখির অভয়াশ্রমে। প্রকৃতির দৃশ্য ও পাখির আওয়াজ দেখছে তারা প্রাণ খুলে। শিশু যেমন মাতৃক্রোড়ে সুন্দর তেমনি, পাখি সুন্দর নির্জন জলাশয়ে । এ অভয়াশ্রমে এসে পুলকিত তারা। দুর্গাপুর গ্রামের মনির হোসেন ও মোহম্মাদ আলী
বলেন, নাজুক যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে দর্শনার্থীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বেশ। উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা যদি অভয়শ্রমের পাখির খোঁজ-খবর নিত তাহলে আরো বেশি পাখি এখানে আসতো। তারা উপজেলা প্রাণীসম্পদ ও বন বিভাগের সহযোগিতা কামনা করেন ।লক্ষনপুর ই্উনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ারা বেগম জানান, পাখির এ অভয়াশ্রম রক্ষায় গ্রামবাসি কাজ করছেন দীর্ঘদিন ধরে। কদমবিল পরিদর্শন করেছেন তিনি। যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ থাকায় বিষয়টি সুরাহের জন্য উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।শার্শা উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা জয়দেব কুমার সিংহ বলেন, সন্ধায় আসে হাজার হাজার পাখি। সকালে খাদ্যের সন্ধানে ফিরে যায় তারা। তবে উপজেলায় অনেকস্থানে পাখি শিখারীরা ফাঁদ ও
ইয়ারগান দিয়ে পাখি শিকার করছেন। এসব পাখি শিকারীদের আমরা কঠোর নজরদারিতে রাখেছি।পরিবেশে যেন বিরুপ প্রভাব না পড়ে তার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কদমবিলসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পখি সংরক্ষণে কাজ করে যাচ্ছেন উপজেলা প্রাণীসম্পদ বিভাগ। তিনি এসময় আরও বলেন শীতকালীন” পাখি আমাদের জাতীয় সম্পদ হিসেবে গণ্য হয় তাই যারা পাখি শিকার করে, তাদেরকে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে পাখি প্রেমীদের জন্য এই জায়গাটা উন্মুক্ত রয়েছে যে, কেউ এসে পাখি দর্শন করতে পারবেন।
